বারান্দায় বাগানবিলাস

বারান্দায় বাগানবিলাস

  • মো. মাসুদ রাব্বানী

ইট পাথরের এই শহরে সবুজের ঠিকানা খুঁজতে ছুটতে হয় পার্কগুলোতে। কিন্তু এর মাঝেও বৃক্ষ প্রেমিকরা সবুজের ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন নিজেদের মত করে, বাসার বারান্দায় তৈরী করে নিয়েছেন এক চিলতে সবুজ বনায়ন।

তেমনই একজন মানুষ বেগম জান্নাতুল ফেরদৌস। পেশায় তিনি একজন গৃহিণী হলেও নেশা তার বৃক্ষ রোপণ। ইট পাথরের মাঝে বেড়ে উঠলেও তিনি টান অনুভব করতেন সবুজের। তারপর ধীরে ধীরে গড়ে উঠে অন্তরঙ্গতা। তার বাসার বারান্দায় গিয়ে দেখা মিলে সারি সারি সাজানো ফুলের টব। কোথাও জয়তী, করবী কামিনী, সন্ধ্যামালতী কিংবা বেলি ফুলসহ হরেক রকম ফুলের পসরা। এসব দেখলে যে কারোরই প্রাণ জুরিয়ে যায়। একপাশে দেখা গেল টবের লতা ছড়িয়ে গিয়ে যেন সবুজ গালিচা হয়ে আছে। এছাড়াও নানারকম ক্যাকটাস উদ্ভিদেরও রয়েছে চমৎকার সংগ্রহ। বনসাইয়েরও কিছু প্রজাতির সংগ্রহ আছে তার এই ছোট আকারের  সংগ্রহশালায়।

কি ধরনের গাছ বারান্দায় রাখতে তিনি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন? জানতে চাইলে বলেন, এটা নির্ভর করে ঋতুর উপর। গ্রীষ্ম বর্ষা কিংবা শীতের মৌসুমে ভিন্ন রকম উদ্ভিদ তিনি রাখেন। যেমন গ্রীষ্মকালে গন্ধরাজ, রজনীগন্ধা, সূর্যমুখী, জিনিয়া, পিটুনিয়া, সিলোসিয়া ইত্যাদি গাছ থেকে ফুল পাওয়া যায়। তাই গ্রীষ্মকালে বাগানের জন্য এসব গাছই ভালো। এছাড়া বর্ষাকালে হাইড্রেঞ্জিয়া, বেলি, জুঁই, চাপা, পএলেখা, পোর্টল্যান্ডিয়া, দোপাটি, জিনিয়া, স্থলপদ্ম, মালতীলতা এসব গাছ ফুল দেয়। শীতকালে ফুল দেয় গাদাঁ, গোলাপ, ন্যাস্টারশিয়া, প্যানজি, পিটুনিয়া, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লীকা গাছ। বারান্দায় ফুল না থাকলে শূন্যতা অনুভূত হয়। তাই তিনি সব ঋতুর সাথে মিল রেখে বারান্দায় মৌমাছির পদচারণা নিশ্চিত করেন।

শুরু থেকেই আমাকে সবাই সাহায্য সহযোগীতা করেছে। নাহয় এভাবে এতদূর আসা হত না। আমার বাবা-মা সবসময় বিভিন্ন গাছ উপহার দিয়ে আমাকে উৎসাহ যোগিয়েছে। বিয়ের পর তিনিও (স্বামী) কোন বাধা হয়ে দাড়াননি। এখন তিনিও বেশ উপভোগ করেন বারান্দার এই ছোট্ট সবুজের টুকরোটাকে। এভাবেই ব্যাক্তিগত জীবনের কথাও জানান এক সন্তানের জননী বেগম জান্নাতুল ফেরদৌস।

বারান্দার সবুজে অবসরে সুখ খুঁজে পাওয়া এই বৃক্ষ প্রেমিক মানুষ টি নতুন বাগান করতে আগ্রহী দের কিছু পরামর্শ দেন। নতুন যারা বাগান করতে আগ্রহী তাদের বলবো সারাবছর ফোটে এমন কিছু গাছ যেমনঃ জবা, কামিনী, করবী, জয়তী, নয়নতারা, সন্ধ্যামালতী গাছ রাখতে। সহজে মরে না কিংবা তুলনামূলক কম যত্নেও বেচে থাকবে এমন গাছ বাছাই করতে হবে। দোলনচাপা, নাইটকুইন, হাসনাহেনা, পর্টুলেকা, ক্যাকটাস অথবা বনসাই দিয়ে শুরু করাটাই উওম বলে তিনি মনে করেন।

Sharing is caring!

Leave a Comment