শরৎ মানে…
- ফিচার ডেস্ক
‘‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি, ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি৷” এভাবেই বাঙালির সামনে শরতের সৌন্দর্য উপস্থাপন করেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ তাঁর মতোই শরতে মুগ্ধ বাংলার কবিকূল৷
তবে শুরুটা করেছেন কবিগুরুই৷ শরৎ নিয়ে তাঁর কবিতাই বলুন, কিংবা গান – তার যেন কমতি নেই৷ বিভিন্নভাবে শরৎ সম্পর্কে নিজের আবেগকে তুলে ধরেছেন রবীন্দ্রনাথ৷ কথাগুলো বলেছেন আরেক শরৎপ্রেমী মুস্তফা মনোয়ার৷ তিনি বলেন, ‘‘শরৎ যে এত সুন্দর আগে হয়ত বাঙালি জানতোও না৷ রবীন্দ্রনাথই তাঁর গান, কবিতার মাধ্যমে সবাইকে শরৎকাল উপভোগ করতে শিখিয়েছেন। তাঁর গানগুলো শুনলেই শরতের সমস্ত সৌন্দর্য ধরা পড়ে৷”
মুস্তফা মনোয়ার বলেন, শরৎ হচ্ছে চমৎকার মেঘের ঋতু, স্পষ্টতার ঋতু৷ কেননা শরতের আকাশ থাকে ঝকঝকে পরিষ্কার৷ নীল আকাশের মাঝে টুকরো টুকরো সাদা মেঘ যেন ভেসে বেড়ায়৷ তিনি বলেন, ‘‘গ্রামের বধূ যেমন মাটি লেপন করে নিজ গৃহকে নিপুণ করে তোলে, তেমনি শরৎকাল প্রকৃতিকে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়৷ বর্ষার পরে গাছগুলো সজীব হয়ে ওঠে৷ আকাশে হালকা মেঘগুলো উড়ে উড়ে যায়৷”
শরৎ মানেই নদীর তীরে কাশফুল৷ শরৎ মানেই গাছে গাছে হাসনুহানা আর বিলে শাপলার সমারোহ৷ শরৎ মানেই গাছে পাকা তাল৷ সেই তাল দিয়ে তৈরি পিঠা, পায়েস৷ আর ক্ষেতে ক্ষেতে আমন ধানের বেড়ে ওঠা চারা৷
কিন্তু সময়ের বিবর্তনে গ্রামে-গঞ্জে কাশফুলের আধিক্য কমে গেছে৷ তাই মনে দারুণ কষ্ট মুস্তফা মনোয়ারের৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা মানুষরা শুধু লোভীর মতো প্রকৃতির কাছ থেকে খাদ্য চাই৷ কিন্তু প্রকৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য কিছুই করিনা৷ যেমন আগে প্রায় প্রতিটি গ্রামে বটগাছ দেখা গেলেও এখন তেমনটা চোখে পড়ে না৷ মানুষ নিজের প্রয়োজনে সেগুলো কেটে ফেলেছে৷ অথচ আগে এই বটগাছকে কেন্দ্র করে কত উৎসব হয়েছে৷ বটগাছের ছায়ায় মানুষ বিশ্রাম নিয়েছে৷ আশ্রয় নিয়েছে কতরকম পাখি আর পোকামাকড়৷ কিন্তু এখন আর সেসব নেই৷”