সুষম খাবার রুটিন

সুষম খাবার রুটিন

  • স্বাস্থ্য ডেস্ক

সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন নিয়ম মেনে খাবার গ্রহণ করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিদিন কখন কী খাবেন পরামর্শ দিলেন ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টারের প্রধান পুষ্টিবিদ সৈয়দা শারমিন আক্তার। লিখেছেন এ এস এম সাদ

সকালে

পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষের সকালবেলার খাওয়াদাওয়া ভারী হওয়া উপকারী। একজন পূর্ণবয়স্ক তরুণ-তরুণীকে সকাল থেকে নানা কাজের মধ্য দিয়ে দিন পার করতে হয়। তাই সকালের নাশতার মেন্যুতে পুষ্টির উপস্থিতি নিশ্চিত করা জরুরি। বেশির ভাগ মানুষ পরোটা, ডিম ও সবজি দিয়ে সকালের নাশতা করে থাকেন। এতে আমিষ ও কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্ক একজনের সকালে দুটি ডিম খাওয়া প্রয়োজন। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেলস। আবার প্রোটিনের সবচেয়ে ভালো উৎস ডিম। ডিমে ক্যালরিও থাকে বেশ কম। তবে ডিম ওমলেট না খাওয়াই ভালো। কারণ ওমলেটে তেলের কারণে শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বেড়ে যায়। সকালে নাশতায় ফল খাওয়া জরুরি। এতে ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়। আবার শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে ফল। বয়স্কদের সকালবেলায় তেলজাতীয় খাবার পরিহার করা উচিত। এটা তাদের শরীর আরো অসুস্থ করে তুলতে পারে। সকালবেলায় অনেকেই রুটির বদলে ভাত খান। অনেক বয়স্ক মানুষ সকালবেলায় খালি পেটে পান্তাভাত খেয়ে থাকেন। এটা পরিহার করা উত্তম। ভাত কিংবা রুটি সকালের নাশতায় যা-ই থাকুক না কেন, তাতে অবশ্যই পুষ্টির উপস্থিতি থাকা প্রয়োজন। সকালবেলায় শিশুরা ঠিকমতো নাশতা করতে চায় না। এ জন্য একই স্বাদের খাবার প্রতিদিন না দিয়ে একেক দিন একেক রকমের নাশতা দিন। কোনো দিন সুজি, আবার কোনো দিন ডিম। আবার ডিমের হালুয়াও তৈরি করে দিতে পারেন। এতে আমিষের ঘাটতি হবে না।

দুপুরে

দুপুরের খাবার সময়মতো খাওয়া উচিত। দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যেই দুপুরের লাঞ্চ সেরে ফেলুন। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার শক্তি জোগাতে সহায়তা করে। মেন্যুতে এই জাতীয় উপাদান রাখার চেষ্টা করুন। কারণ মস্তিষ্ককে কর্মচঞ্চল এবং শরীরে কর্মোদ্যম ধরে রাখতে দুপুরের খাবারে কার্বোহাইড্রেট খুব জরুরি। কার্বোহাইড্রেট বাদ দিলে মাথা ঝিমঝিম আর শরীরে ম্যাজম্যাজে ভাব আসতে পারে। দুপুরের খাবারের মেন্যুতে রাখুন আঁশজাতীয় শাক-সবজি। খাবারে কমপক্ষে ৮ গ্রাম আঁশ থাকা দরকার। এতে দৈনিক আঁশ গ্রহণের পরিমাণ ঠিক থাকে। মধ্যাহ্নভোজে আমিষ বাদ দেওয়া ঠিক নয়। দুপুরের আমিষ অবশিষ্ট দিনের পুষ্টির জোগান নিশ্চিত করে। প্রত্যেক বয়সের জন্য দুপুরের খাবারে অর্ধেক শাক-সবজি থাকা দরকার আর এক-চতুর্থাংশ শর্করা এবং এক-চতুর্থাংশ কার্বোহাইড্রেট।

সন্ধ্যায়

ভাজাপোড়াজাতীয় খাবার সন্ধ্যাবেলায় খাওয়া যেন অনেকের অভ্যাস। এটি পরিহার করা দরকার। তেলজাতীয় খাবার শরীরে অতিরিক্ত মেদ তৈরি করে। পুরি, শিঙাড়া, চানাচুর—এ রকম খাবারে পুষ্টির উপস্থিতি খুব বেশি নেই। সন্ধ্যাবেলায় পাউরুটি, জ্যাম, দুধ, নুডলস খাওয়া যেতে পারে। বিকেল থাকতেই কিংবা সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নাশতা সেরে ফেলা ভালো।

রাত

রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খেয়ে নেওয়া ভালো। রাতে যতটা সম্ভব একটু কম খাওয়া স্বাস্থ্যকর। এতে হজমপ্রক্রিয়া ভালোভাবে সম্পন্ন হয়। রাতেও দুপুরের মতো শাক-সবজি, মাছ-মাংস খেতে পারেন। তবে রাতের বেলায় বয়স্কদের ভাতের বদলে রুটি খাওয়া উত্তম। এতে ওজনজনিত সমস্যা হবে না। তবে দুপুরের থেকে রাতে তুলনামূলক কম খেতে হবে। রাতে মেপে খাওয়ার রুটিন বয়স্কদের জন্য বেশি প্রযোজ্য। বিশেষ করে যাঁদের বয়স ৪০ পার হয়েছে। তবে চল্লিশের নিচে যাঁরা সারা দিন অত্যন্ত পরিশ্রম করেন তাঁদের জন্য এটি প্রযোজ্য নয়। রাতে দুই টুকরো মাছ কিংবা মাংস, পরিমাণমতো ভাত কিংবা রুটি, ডাল ও শাক-সবজি খাওয়া বাঞ্ছনীয়।

সূত্র: কালের কণ্ঠ

Sharing is caring!

Leave a Comment