বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষাবৃত্তি
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
প্রতিবছরই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করে থাকে ইন্দোনেশীয় সরকার। এসব শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ থাকে দেশটির বিশ্বমানের ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই সুবিধার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর পড়াশোনার মান যেমন যুগোপযোগী হয়, তেমনি পাওয়া যায় ইন্দোনেশীয় সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও ইন্দোনেশিয়া সরকার একাধিক বৃত্তির সুবিধা দিয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে একটি হলো ধর্মাসিসওয়া বৃত্তি। ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সরাসরি কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকা দেশগুলোকেই সাধারণত এই বৃত্তি সুবিধা দেওয়া হয়, যার আর্থিক মূল্য প্রতি মাসে ইন্দোনেশীয় ২০ লাখ রুপিয়া। বাংলাদেশি টাকায় এর মান দাঁড়ায় সাড়ে ১১ হাজার টাকা। এই বৃত্তির আওতায় পড়াশোনা করা যাবে ইন্দোনেশীয় ভাষা, দেশটির সংগীত, নৃত্য, কারুশিল্প, রন্ধনশিল্প ও ভ্রমণ বিষয়ে।
বৃত্তির আওতায় কোর্সসমূহ
ধর্মাসিসওয়া বৃত্তির আওতায় বিভিন্ন মেয়াদের কোর্স রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন এসব কোর্সে আপনি পড়তে পারবেন ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে। ইন্দোনেশিয়ার ৪৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব কোর্সগুলোতে পড়াশোনা করা যাবে।
এক বছর মেয়াদি : এক বছর মেয়াদি এই কোর্সে পড়াশোনা করতে পারবেন ইন্দোনেশীয় ভাষা, সংগীত, নৃত্য, কারুশিল্প, রন্ধনশিল্প ও ভ্রমণ বিষয়ে।
ছয় মাস মেয়াদি : ছয় মাস মেয়াদি কোর্সের আওতায় পড়াশোনা করা যাবে শুধু ইন্দোনেশীয় ভাষার ওপরে।
তিন মাস মেয়াদি : তিন মাস মেয়াদি এই কোর্সটি সাধারণত গ্রীষ্মকালীন কোর্স। পছন্দের যেকোনো একটি বিষয়ে পড়াশোনা করা যাবে এই কোর্সের আওতায়।
আর্থিক সুবিধাদি
এই বৃত্তির আওতায় পড়াশোনা ও বসবাস খরচ, দুই ধরনের আর্থিক সুবিধাই পেয়ে থাকেন একজন শিক্ষার্থী। পড়াশোনার সব খরচ সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিশোধ করে থাকে ইন্দোনেশিয়া সরকার। পাশাপাশি সেখানে বসবাসের খরচ বাবদ প্রতি মাসে সর্বমোট ২০ লাখ ইন্দোনেশীয় রুপিয়ার (সাড়ে ১১ হাজার টাকা) আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। তবে কোর্স চলাকালীন যাতায়াতের জন্য কোনো আন্তর্জাতিক বিমানের টিকেটের খরচ বৃত্তির আওতায় বহন করা হয় না। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবীমার খরচও সম্পূর্ণ নিজের বহন করতে হবে শিক্ষার্থীকে।
যাঁরা আবেদন করতে পারবেন
এই বৃত্তির আওতায় পড়াশোনা করতে আগ্রহী হলে আপনাকে কমপক্ষে উচ্চ মাধ্যমিক পাস হতে হবে। তবে বয়স ৩৫ বছরের বেশি হওয়া যাবে না। এ ছাড়া আপনি শারীরিকভাবে সুস্থ কি না, তা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন হবে শারীরিক সুস্থতার সনদ। আর পড়তে যাচ্ছেন সম্পূর্ণ এক ভিনদেশে, যেখানকার ভাষা সম্পূর্ণ অচেনা। তাই সেখানে গিয়ে যেন যোগাযোগটা ঠিকভাবে করতে পারেন, সে জন্য আপনাকে অবশ্যই ইংরেজিতে পারদর্শী হতে হবে। পাশাপাশি যে বিষয়ে পড়বেন, সে সম্পর্কে টুকটাক জেনে নিয়ে আগভাগেই প্রস্তুত রাখতে হবে নিজেকে।
আবেদনের জন্য আবশ্যকীয়
আবেদনে ইচ্ছুক হলে আপনাকে জমা দিতে হবে বেশ কিছু কাগজপত্র। প্রথমেই ইন্দোনেশীয় দূতাবাস থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করে পূরণ করতে হবে। আবেদন ফরমের সঙ্গে জমা দিতে হবে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, শারীরিক সুস্থতার সনদ, পাঁচ কপি পাসপোর্ট আকৃতির ছবি এবং পাসপোর্টের ফটোকপি। আবেদনের জন্য পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ১৮ মাস থাকতে হবে। তাই আবেদনের আগেই খেয়াল রাখতে হবে এ বিষয়ে।
যেভাবে আবেদন করবেন
ধর্মাসিসওয়া বৃত্তির জন্য বিভিন্ন কোর্সে আবেদনের জন্য আপনাকে প্রথমেই ইন্দোনেশীয় দূতাবাসে জানাতে হবে। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন করবে ইন্দোনেশিয়া সরকার। নির্বাচিত হলে আবেদন ফরমের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ‘হেড ব্যুরো অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল কো–অপারেশন সেক্রেটারিয়াল জেনারেল, ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাশনাল এডুকেশন, জালান, জান্দারাল সুদিরমান, সেনায়ান–জাকার্তা ঠিকানায় পাঠাতে হবে। অথবা আবেদনপত্র ইমেইল করা যাবে darmasiswa_pkln@diknas.go.id ঠিকানায়। এ ছাড়া আবেদনপত্র পাঠানো যাবে ‘ডাইরেক্টর অব পাবলিক ডিপ্লোমেসি, মিনিস্ট্রি অব ফরেন অ্যাফেয়ার, জালান তামান, পেজামবন নম্বর–৬, জাকার্তা ঠিকানায়। বৃত্তি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারবেন (৬২–২১) ৫৭২৪৭০৭, ৫৭৩৮১৮১ এবং ৩৮১৩৪৮০ নম্বরে।
বিস্তারিত জানতে দেখুন ইন্দোনেশীয় দূতাবাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি।