এখনো ভর্তির টাকা জোগাড় হয়নি নজরুলের
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
বাবা ঝালমুড়ি বিক্রেতা। তাঁর সামান্য আয় দিয়েই চলে সাতজনের পরিবারের ভরণ-পোষণ। পাঁচ সন্তানের মধ্যে নজরুল ইসলাম ব্যতিক্রম। নিজের চেষ্টা ও অধ্যবসায়ে চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে আলিম পরীক্ষায় ভালো ফল করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়ও মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন। কিন্তু দারিদ্র্য তাঁর উচ্চশিক্ষার স্বপ্নযাত্রার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ভয়রা গ্রামে নজরুলদের বাড়ি। বাবা মো. জালাল মিয়া ও মা জিন্নতা আক্তারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। নজরুল বলেন, শিক্ষকেরা তাঁকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। ২০১৪ সালে নিয়ামতপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। একই প্রতিষ্ঠান থেকে এ বছরের আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ সেশনে ভর্তি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে (‘খ’ ইউনিট) ৩২০তম স্থান অর্জন করেছেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে পড়তে আগ্রহী নজরুল। সমাজের বোঝা না হয়ে চালিকাশক্তি হতে চান।
নজরুল বলেন, ‘টাকার অভাবে মাঝেমধ্যে মনে হতো ঢাকায় গিয়ে পোশাক কারখানায় চাকরি করি। কিন্তু বাবার ও শিক্ষকদের উৎসাহে কষ্ট করে পড়া চালিয়ে আসছি। কয়েক দিন পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার কথা। কিন্তু এখনো জোগাড় হয়নি ভর্তি ফিসহ আনুষঙ্গিক টাকা। এখন আমি কী করব, বুঝতে পারছি না।’
নজরুলের বাবা জালাল মিয়া বলেন, তাঁর ভিটাবাড়ি ছাড়া একচিলতেও জমি নেই। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রাস্তায় রাস্তায় ঝালমুড়ি বিক্রি করে একার রোজগারে পরিবারের ভরণ-পোষণ ছাড়াও তিন সন্তানের পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমার সন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে পড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’
নিয়ামতপুর মাদ্রাসার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মো. শরিফ হোসেন বলেন, নজরুল খুব মেধাবী ছেলে। তাঁর পড়ালেখার প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহ রয়েছে। তাঁর উচ্চশিক্ষার পথ সুগমে সমাজের বিত্তবান লোকদের এগিয়ে আসা উচিত।