প্রথম দিন সেবা নিয়েছেন ৫৯ হাজার করদাতা
- নিউজ ডেস্ক
ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল ও দেশব্যাপী জাতীয় আয়কর মেলা শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল এ মেলার উদ্বোধন করেন। ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকাসহ সব বিভাগীয় শহরে এ মেলা চলবে। অন্যসব জেলা শহরে চারদিন ও ২৯টি উপজেলায় দুদিন এ মেলা চলবে। এছাড়া ৫৭টি উপজেলায় আয়োজন করা হয়েছে একদিনের ভ্রাম্যমাণ আয়কর মেলার। মেলার প্রথম দিনেই সেবা নিয়েছেন ৫৯ হাজার ২৯২ জন করদাতা।
এনবিআর সূত্রমতে, প্রথম দিন ঢাকাসহ সারা দেশের ২১টি স্থানে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলেও সকাল থেকেই মেলার সব স্থানে করদাতাদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। এদিন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক করদাতা আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও শুল্কসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানার পাশাপাশি আয়কর রিটার্ন দাখিল ও সর্বশেষ বছরের আয়কর পরিশোধ করেছেন। নতুন করে ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকারী নম্বর (ই-টিআইএন) নিয়েছেন অনেকে। সব মিলিয়ে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা ছিল ৫৯ হাজার ২৯২ জন, যা গত বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি।
প্রথম দিন আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন ১৬ হাজার ৮৬ জন করদাতা। এক্ষেত্রে গত বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর নতুন ই-টিআইএন নিয়েছেন ৪ হাজার ৮৭৫ জন। ২১টি স্থান থেকে মোট কর আদায় হয়েছে ১৯১ কোটি ৪১ লাখ ৬৬ হাজার টাকার।
এর আগে গতকাল দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্মাণাধীন এনবিআর ভবনে আয়কর মেলা-২০১৬ উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহ্মাদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন আহমেদসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি ও মানুষকে কর প্রদানে উদ্বুদ্ধ করাই আয়কর মেলার মূল উদ্দেশ্য। সে উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে বর্তমানে করদাতার সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছর এরই মধ্যে সাড়ে তিন লাখ নতুন করদাতা যোগ হয়েছেন। এ অর্থবছরে করদাতার সংখ্যা ২৫ লাখে উন্নীত হবে। কর মেলার মাধ্যমে তরুণ ও দেশপ্রেমিক করদাতারা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
এমএ মান্নান বলেন, করভীতি দূর করে আয়করকে খুব সহজভাবে উপস্থাপন করার কারণে মেলার সুনাম দেশের সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে আয়কর প্রদান সহজতর ও অনলাইনভিত্তিক করার কারণে মানুষ কর প্রদানে আগ্রহী হচ্ছে।
আবদুল মাতলুব আহ্মাদ বলেন, ব্যবসায়ীরা সবসময়ই কর দিতে চান। তবে কর প্রদানে ভীতি কাজ করায় অনেকেই এ থেকে দূরে থেকেছেন। আয়কর প্রদান সহজ হওয়ায় দেশের উন্নয়নে সবাই এখন কর দিতে আগ্রহী হবেন।
সভাপতির বক্তব্যে মো. নজিবুর রহমান বলেন, রাজস্ব আদায়ের পরিবর্তে আহরণের নীতি গ্রহণ করেছে এনবিআর। আমরা গত চার মাসে সাড়ে তিন লাখ নতুন করদাতা যুক্ত করতে পেরেছি। চলতি বছরের বাকি আট মাসে আরো বেশি করদাতা শনাক্ত করা হবে। তরুণ করদাতাদের উত্সাহ প্রদানে নেয়া হয়েছে ব্যাপক উদ্যোগ। মেলার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবারের মেলা ও সেবার পরিধি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এবার প্রথমবারের মতো নিজস্ব ভবনে আয়কর মেলা করছে এনবিআর। মেলার পরিসর গত বছরের চেয়ে কয়েক গুণ বেড়েছে। ৭ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে। করদাতাদের মেলায় আসা-যাওয়ার জন্য উত্তরা, মিরপুর, অফিসার্স ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার চারটি স্থান থেকে শাটল বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।