ফ্রিল্যান্সার থেকে মাসনুনের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান
- লিডারশিপ ডেস্ক
কোনো প্রতিষ্ঠানের না হয়ে মুক্ত বা স্বাধীনভাবে কাজ করাই হলো ফ্রিল্যান্সিং। তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের কারণে দেশের অনেকেই অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করেন এমন ব্যক্তিদের একটি বড় অংশই তরুণ।
অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং থেকে অনেকেই নিজেই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তেমনই একজন তরুণ উদ্যোক্তা আবু আশরাফ মাসনুন। এক সময় ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে শুরু করা এই তরুণ গড়ে তুলেছেন সফটওয়্যার ফার্ম ট্রানসেনডিও। এই প্রতিষ্ঠান অনলাইনে সফটওয়্যার বিক্রি থেকে শুরু করে দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের বিবিধ কাজ সম্পন্ন করে দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে থেকেই প্রফেশনাল সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং করতেন আবু আশরাফ মাসনুন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ব্যবসায় প্রশাসনে। ওই সময় থেকেই নিজের প্রতিষ্ঠানের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনি। চার-পাঁচ বছর ফ্রিল্যান্সিং করার পর নিজের প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর উদ্যোগ নেন তিনি। ধীরে ধীরে গড়ে তুলেন সফটওয়ার তৈরি ও উন্নয়নবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ট্রানসেনডিও।
সফটওয়্যার ফার্ম গড়ার উদ্যোগ নেওয়ার কারণ হিসেবে আবু আশরাফ মাসনুন বলেন, এই খাতে আগে থেকেই তাঁর অভিজ্ঞতা ছিল। তাই উদ্যোগের জন্য অন্য সফটওয়্যার তৈরি ও উন্নয়নকেই তিনি বেছে নেন।
ট্রানসেনডিও দাঁড় করানোর শুরুতে কয়েক বছর ফ্রিল্যান্সিং করার সুফল পান আবু আশরাফ মাসনুন। আগের অনেক গ্রাহকের সঙ্গে তাঁর পেশাগত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। নিজেই প্রতিষ্ঠানের কথা তাঁদের কাছে তুলে ধরেন মাসনুন। আউটসোর্সিং দিয়েই শুরু হয় ট্রানসেনডিওর কাজ। দেশের বাইরের ভোক্তা দিয়ে কাজ শুরু হলেও ধীরে ধীরে স্থানীয় বাজারের জন্যও সফটওয়্যার তৈরি শুরু করেন মাসনুন। প্রথম দিকে একা কাজ করলেও পরে সহকারী হিসেবে দুই একজন করে কর্মী নিয়োগ করা শুরু করেন তিনি। বর্তমানে কর্মী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচজনে।
দূরে থেকেও কাজ করার (রিমোটলি) সুবিধা থাকায় উদ্যোগের শুরুতে আবু আশরাফ মাসনুনের খুব বেশি পুঁজি প্রয়োজন হয়নি। একই সঙ্গে ধীরে প্রয়োজন হয়নি প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ কোনো কার্যালয়। তবে প্রতিষ্ঠানের শুরুতে ভালো ডেভেলপারের জন্য বেশ বেগ পেতে হয়েছে মাসনুনকে। তবে নিজেই ডেভেলপার হিসেবে কাজ করার কারণে কষ্ট হলেও এই সমস্যার সমাধান করতে পেরেছেন।
ট্রানসেনডিও প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আবু আশরাফ মাসনুন তরুণ উদ্যোক্তার স্বীকৃতি পেয়েছেন। চলতি বছর রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব গ্রুপের পক্ষ থেকে নবীন উদ্যোক্তা স্মারক ২০১৪ পেয়েছেন তিনি। তবে মাসনুন মনে করেন, ‘ক্লায়েন্টদের সন্তুষ্টিই ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া। এ ছাড়া একটি বইয়ে আমাদের কথা উঠে এসেছে। চাকরি চাই না চাকরি দেব গ্রুপ থেকে উদ্যোক্তা সম্মাননা পেয়েছি।’
আবু আশরাফ মাসনুনের পরবর্তী লক্ষ্য হলো দেশের বাজারে নিজের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানকে প্রতিষ্ঠিত করা। তিনি মনে করেন সফটওয়্যার তৈরি ও উন্নয়নকে শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ বাংলাদেশের আছে। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।