সাহসিকা মুক্তার মাই

সাহসিকা মুক্তার মাই

  • লিডারশিপ ডেস্ক

‘আমার একটি পদক্ষেপ যদি কোনো নারীর জন্য উপকারী হয়, তাহলে দারুণ আনন্দ বোধ করি’— কথাগুলো গণধর্ষণের শিকার পাকিস্তানি নারী মুক্তার মাইয়ের। সম্প্রতি করাচিতে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ফ্যাশন উইকে অন্যান্য মডেলে সঙ্গে র্যাম্পে পা রাখেন তিনিও। এখন তিনি নারী অধিকার আর স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করছেন।

১৪ বছর আগের ঘটনা, পাশের গ্রামের তিন ব্যক্তির হাতে লাঞ্ছিত হয় মুক্তারের ভাই আবদুল শাকুর। প্রভাবশালী ওই গোষ্ঠীর লোকেরা মুক্তারদের পরিবারকে এ বিষয়ে মুখ খুলতে নিষেধ করার পাশাপাশি বিভিন্নভাবে ভয় দেখাতে শুরু করে। এর পর দুই পরিবারের সমঝোতা হয়, সেখানে বলা হয় আবদুল শাকুর অপরাধীর পরিবারের পক্ষ থেকে সালমা নামে এক নারীকে বিয়ে করবে, তার বদলে মুক্তারকে বিয়ে দিতে হবে ওই পরিবারে। শেষমেশ শাকুরের সঙ্গে সালমার বিয়ে ভেস্তে গেলেও ওই পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয় মুক্তার যদি তাদের বাড়ি এসে ক্ষমা চায়, তাহলে তারা তাকে মাফ করে পরিবারে গ্রহণ করবে। তবে মুক্তার যখন সেখানে পৌঁছায়, তখন তাকে টেনেহিঁচড়ে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়, চারজন পুরুষ কর্তৃক ধর্ষিত হন তিনি। তবে এখানেই শেষ নয়, গ্রামের সব মানুষের সামনে উলঙ্গ করে হাঁটিয়ে নিয়ে আসা হয় মুক্তারকে।

এ ঘটনার পরে সাধারণত চুপ করে থাকেন অনেকে। বিশেষ করে পাকিস্তানের রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থায় নারীদের উত্সাহিত করা হয় না সত্যিকারের ঘটনা তুলে ধরতে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম মুক্তার। তার সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ তো করেছেনই, পাশাপাশি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন অপরাধীদের। ধর্ষকসহ ওই পরিবারের ১৪ জনকে আদালতে হাজির করেন মুক্তার। এর মধ্যে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় হলেও মুক্তারদের তুলনায় প্রভাবশালী পরিবার হওয়ায় সবাই জামিনে ছাড়া পায়।

তবে দমে যাননি মুক্তার। নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি তার গ্রাম মিরওয়ালাতে প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান। এখন মুক্তারের বয়স ৪৪ বছর। তাকে গণ্য করা হয় নারীদের সাহসের প্রতীক হিসেবে। favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment