মার্কিন মুল্লুক ঘুরে এসে
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
বাংলাদেশ থেকে প্রায় আট হাজার মাইল দূরের এক জনপদ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র—ভিন্ন মানুষ, ভিন্ন সময়, ভিন্ন সকাল। সেখানে কি আর ‘বাংলাদেশের সময়’ চলে? ‘আর দুই মিনিট’ কিংবা ‘পাঁচ মিনিট পর আসছি’—এমন তত্ত্ব যে ওখানে চলে না, সেটা শুরুতেই টের পেয়েছিলাম। দেরি হলে আর রক্ষে নেই!
নিয়মের বেড়াজালে পড়ে যাই পাঁচ সপ্তাহের ‘প্রফেশনাল ফেলোশিপ’–এর প্রথম দিনেই। যুক্তরাষ্ট্রে সেই সাতসকালে শুরু হয় কাজের জন্য ছোটাছুটি। আটটা বেজে এক মিনিট মানে আটটা এক মিনিটই! হঠাৎ করে নিয়মের কড়াকড়িতে বেশ অস্বস্তিতে পড়লেও শেখার সুযোগ ছিল প্রতি পদে।
প্রতিবছর বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার থেকে তরুণ পেশাজীবী ও উদ্যোক্তারা ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেশনাল ফেলোশিপে প্রায় পাঁচ সপ্তাহ আমেরিকায় থাকার সুযোগ পান। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেলর্ড কলেজ ও সিসিইডব্লিউয়ের তত্ত্বাবধানে পেশাগত দক্ষতা বিকাশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক অবস্থানের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার এই সুযোগ পেয়েছিলাম আমরা। বাংলাদেশ থেকে এ বছরের ‘ফল সেশন’-এ ১৫ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ফেলোশিপে অংশ নিয়েছিলেন প্রকৌশলী নিলয় দাস ও নারী উদ্যোক্তা নওরীন আয়েশা। সামাজিক উদ্যোক্তা ও পেশাজীবী হিসেবে সঙ্গে ছিলেন জাহিদ হোসাইন খান।
ফেলোশিপের বিভিন্ন সেমিনার আর কর্মশালাগুলোয় নিজেকে বদলানোর দারুণ সুযোগ মিলেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আমরা ঘুরে দেখেছি, কথা হয়েছে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে। আমাদের কাজের অভিজ্ঞতাও তাঁদের জানিয়েছি।
বাংলাদেশের জনগণ, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি, নারী শিক্ষা নিয়ে দারুণ আগ্রহ দেখলাম অনেকেরই। ফেলোশিপের অংশ হিসেবে ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যোগাযোগ দক্ষতা, নেতৃত্ব বিকাশ, ব্যবসা পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সুযোগ মেলে আমাদের। শেষে ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রফেশনাল ফেলোস কংগ্রেসেও অংশ নিই। বিশ্বের ৪৭ দেশের ২৭৬ জন তরুণ পেশাজীবী এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। যখনই নিজের পরিচয় বলার সুবাদে নিজের দেশের কথা বলতে পেরেছি, খুব ভালো লেগেছে। যতবার বলেছি, ‘আই অ্যাম ফ্রম বাংলাদেশ’—ভীষণ একটা আবেগ কাজ করছিল।