সফল না, সার্থক হওয়াতে বিশ্বাসী : ফাতিহা তাসনীম
- লিডারশিপ ডেস্ক
ফাতিহা তাসনীম তিশা ড্রিম ডিভাইজারের কো-ফাউন্ডার। বর্তমানে এর সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া আলোহা মেথডের বাংলাদেশ চ্যাপ্টার আলোহা বাংলাদেশের প্রধান কার্যালয়ে যুক্ত আছেন পুল-টিচার হিসেবে। পাশাপাশি স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেইনার এবং মেন্টর হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়মিত অংশ নেন জাতীয়-আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রশিক্ষণ পর্বে।
তিশা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছেন। এছাড়া গানের দীক্ষা নিয়েছেন দেশসেরা ধ্রুপদী প্রতিষ্ঠান ছায়ানট থেকে। শিক্ষাজীবনে কলেজকে রিপ্রেজেন্ট করতে বহু জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অ্যাথলেট হিসেবে অংশ নেন ধানমন্ডি মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে। নিয়েছেন বুটিক-কুটির এবং হস্তশিল্প সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ। আর এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তা তৈরির প্রশিক্ষণ তাঁকে নিয়ে গেছে ভিন্ন মাত্রায়। সবার প্রিয়মুখ হিসেবে অনেকের কাছেই তিনি ‘মাদার তিশা’ নামে পরিচিত।
: ড্রিম ডিভাইজার প্লাটফর্মটি নিয়ে যদি একটু বলতেন-
ফাতিহা তাসনীম তিশা : ড্রিম ডিভাইজার মূলত সুশিক্ষার মাধ্যমে স্বপ্ন পূরণে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করে। বর্তমানে ক্যারিয়ার এবং স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের স্লোগান হচ্ছে- ডেভেলপিং কোয়ালিটি উইথ মোর্যালিটি।
: ড্রিম ডিভাইজার এখন কী কী কাজ করছে?
ফাতিহা তাসনীম তিশা : শুরু থেকেই ড্রিম ডিভাইজার তিনটি আয়োজন অব্যাহত রেখেছে। প্রথমত প্লেয়িং বা খেলাধুলার মাধ্যমে ড্রিম ডিভাইজারে যুক্ত হওয়া সবার মন-শরীর রিফ্রেশ রাখা। দ্বিতীয়ত নোয়িং বা জানাশোনা বাড়াতে প্রতিমাসে একটি ভালো বই পড়ার চেষ্টা করা। তৃতীয়ত ট্রেনিং বা প্রশিক্ষণটিই আমাদের ‘আড্ডা উইথ আইকন’।
: আড্ডা উইথ আইকনে কী করা হয়?
ফাতিহা তাসনীম তিশা : প্রতি মাসে একটা বিষয়ের অভিজ্ঞ হিসেবে একজন আইকনিক পারসন আসেন। তিনি আড্ডাচ্ছলে তার জ্ঞান-অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। আমরা মূলত তরুণ সৃষ্টিশীল এবং ভিন্নধর্মী কাজে যুক্তদের আইকন হিসেবে আমন্ত্রণ করি। এখানে অংশগ্রহণকারী সবাইকে পরিশ্রমী এবং উন্নত মন-মানসিকতা, কর্মঠ এবং বিশেষ করে সফল মানুষদের সাথে মিশে নিজেকে উৎসাহিত করার জন্যই এমন আড্ডার ব্যবস্থা।
: আপনাদের ‘ট্রিপল-ই’ কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু বলুন-
ফাতিহা তাসনীম তিশা : আমরা স্কুল শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূরণে উদ্বুদ্ধ করতে তাদের সঙ্গে আড্ডা সম্পন্ন করেছি। যেখানে আমাদের স্কুল টিমের সবাই বেশ ভালো করেছে।
: ড্রিম ডিভাইজার নিয়ে আপনাদের ভাবনা কী?
ফাতিহা তাসনীম তিশা : আমরা সবাই বড় বড় স্বপ্ন নিয়ে এগোচ্ছি। নিজেদের প্রোডাক্টিভিটি প্লানিং নিয়ে সবাই তৈরি হচ্ছি। আমাদের কথা হচ্ছে- ‘স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন দেখাই; পূরণ করি, পূরণ করাই’। আমরা কথার চেয়ে কাজকে এবং পড়াশোনার পাশাপাশি জানাশোনাটা বাড়ানোর দিকে বেশি গুরুত্ব দেবো।
: আপনারা কি তারুণদের নিয়েই বেশি কথা বলছেন?
ফাতিহা তাসনীম তিশা : বিষয়টি এমন মনে হলেও তেমনটা মোটেও নয়। আমরা শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক সবার জন্যই আনন্দের মাধ্যমে শিক্ষাকে এনে দিতে কাজ করে যাচ্ছি। আর তারুণ্যকে আমরা বয়সের ফ্রেমে বাঁধছি না। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, মনের দিক থেকে যে তরুণ, সে-ই স্বপ্ন দেখে এবং সে-ই স্বপ্নবাজ। তবে হ্যাঁ, মনের দিক থেকে আমরা যেন তরুণ হতে পারি সেজন্য কাজ করছি।
: আপনাদের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও স্বপ্ন কী?
ফাতিহা তাসনীম তিশা : সুশিক্ষা এবং স্বপ্নপূরণ বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড তৈরি করা।
: নিজেদের কতটুকু সফল দাবি করেন?
ফাতিহা তাসনীম তিশা : প্রত্যেকটি আয়োজন ডিজাইন করা থেকে শুরু করে শেষপর্যন্ত সবসময় নজর দেই; সামান্যতম হলেও সমাজে পজিটিভ কোনো প্রভাব পড়ছে কিনা। এটা হতে পারে আয়োজক হিসেবে, আবার হতে পারে যাদের জন্য বা যাদের নিয়ে আয়োজন, তাদের থেকেও। কেবল ভবিষ্যৎ নয়, বর্তমানেও আমরা যে কাজটিই করি, সর্বদা কতটুকু সফল হলাম, এটা চিন্তা না করে আয়োজনটি কতটুকু সার্থক হলো সেটি হিসেবে নেয়ার চেষ্টা করি।
: কেবলই অর্জন নাকি সত্যিকার সফলতাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন?
ফাতিহা তাসনীম তিশা : এক্ষেত্রেও আমরা একটু ভিন্ন প্রকৃতিতে বিশ্বাসী। আমাদের কাছে সফলতা বলে কিছু নেই; দক্ষতা অর্জনই বড় কথা। যদি আপনি কোনো কাজে দক্ষ হন, তবে আপনার সফলতা এক সময় আসতে বাধ্য। আর একটি কথা- আমরা সফল না, সার্থক হওয়াতে বিশ্বাসী।
: ড্রিম ডিভাইজার ইথিক্যাল এবং ইতিবাচকতা অর্জনে কতটুকু এগিয়েছে?
ফাতিহা তাসনীম তিশা : সবসময় আমরা ইথিক্যাল এবং ইতিবাচক। আমরা বিশ্বাস করি সফলতার জন্য ইতিবাচক মাইন্ডেড হওয়াটা খুব জরুরি। আর সফলতা অর্জনের পথে তা ধরে রাখা, সাসটেইনেবল করা এবং সর্বোপরি মেন্টাল পিস প্রাপ্তির জন্য নৈতিক থাকাটা আরও বেশি দরকার।