সোহেলের অভিনব স্পিডবোর্ড
- লিডারশিপ ডেস্ক
সড়কপথের অন্যতম বাহন মোটরসাইকেল যদি নদীপথে ঠিক একইভাবে চলাচল করে তাহলে বিষয়টি কেমন হবে? জি, ঠিকই ধরেছেন। এমনটি হলে সত্যিই অভিনব ব্যাপার হবে। আর এই অভিনব ব্যাপারটিই করে দেখিয়েছেন মো. সোহেল রানা । মোটর সাইকেলের পুরোনো বডি ব্যবহার করে দ্রুতগতিসম্পন্ন স্পিডবোট তৈরি করেছেন বরগুনা সদর উপজেলার ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের পূর্ব বুড়িরচর গ্রামের ফরিদ হাওলাদারের ছেলে সোহেল রানা। পেশায় মটর মেকানিক সোহেল রানার তৈরিকৃত স্পিডবোট ৫/৭ জন যাত্রী নিয়ে ১ লিটার জ্বালানি ব্যবহার করে নদী পথের প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব। সোহেল রানা এর আগেও বেশ কয়েকবার এরকম স্পিডবোট তৈরি করে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালিয়েছেন। নানাবিধ কারণে বিগত দিনে তার তৈরি করা স্পিডবোট আশানুরূপ সাফল্যের মুখ দেখতে না পারলেও অবশেষে সফল হলেন সোহেল রানা।
অভিনব স্পিডবোটের আবিষ্কারক মোটর মেকানিক সোহেল রানা জানান, ‘আমি খুব ছোটবেলা থেকেই ব্যতিক্রম কিছু করার জন্য চিন্তা-ভাবনা করতাম। কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে খুব একটা কুলিয়ে উঠতে পারতাম না।’ সোহেল রানা আরও বলেন, ‘এই স্পিডবোট তৈরি করতে গিয়ে বিভিন্ন মানুষের অনেক বাজে কথা শুনতে হয়েছে। ‘কাম-কাজ না কইরা নাকি অযথাই সময় নষ্ট করতাছে’ এরকম অভিযোগ শুনতে হয়েছে এই দু’দিন আগেও।’ সফলভাবে স্পিডবোটটি নদীতে চলার পর থেকে অবশ্য ‘বাজে কথা’ বলা লোকগুলো এখন সোহেল রানাকে ব্যাপক উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন! স্পিডবোট তৈরি করতে গিয়ে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন পড়ত। দিনের আলোয় এসব কাজ করতে গেলে লোকজনের মন্দ কথা শুনতে হবে বলে রাতের অন্ধকারেও কাজ করতে হয়েছে সোহেল রানাকে।
অভিনব স্পিডবোটটি তৈরিতে সোহেল রানার খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। একজন মোটর মেকানিকের পক্ষে ৬০ হাজার বিরাট অঙ্কের অর্থ। দীর্ঘ পরিশ্রমের ফসল হিসেবে জমানো টাকাগুলো দিয়ে এরকম স্পিডবোট তৈরি করা রীতিমতো দুঃসাহসিক কাজ সোহেল রানাদের মতো নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে। সোহেল রানার সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, তিনি এরকম অভিনব কাজ আরও করে দেখাতে চান। এমনকি এর থেকেও বেশি কিছু। সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহযোগিতা পেলে সোহেল রানা ‘উড়ন্ত কিছুও’ তৈরি করে দেখাতে পারবেন বলে বেশ ‘আত্মবিশ্বাসের’ সঙ্গেই জানিয়েছেন। তার ‘ভাবনাগুলো’ গ্রহণযোগ্য মনে হলেও অন্তত কেউ এগিয়ে এসে তাকে সহযোগিতা করবেন, এমনটাই প্রত্যাশা আত্মবিশ্বাসী মোটর মেকানিক সোহেল রানার।