স্বর্ণজয়ী ৪ মেধাবী
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন। সমাবর্তনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অসামান্য ফলাফলের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন বিভাগের ৮০ শিক্ষার্থীকে ৯৪টি স্বর্ণপদক দেয়া হয়। স্বর্ণপদক পাওয়া চার মেধাবী শিক্ষার্থীর সাফল্যগাথা তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
নারী পিছিয়ে থাকবে না : আয়েশা সিদ্দিকা
ছোটবেলায় গোয়েন্দা কাহিনীর নায়ক হতে চেয়েছিলেন। এখন হতে চান একজন আদর্শবান শিক্ষক। পাশাপাশি গবেষণাকর্মের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রাখতে চান আয়েশা সিদ্দিকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে অনার্স (২০১৪) ও মাস্টার্সে (২০১৫) প্রথম স্থান লাভ করেন। ৫০তম সমাবর্তনে পেয়েছেন ‘খালেদা মনযুর-এ-খুদা স্বর্ণপদক’ ।
এর আগে বিভাগীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন ডিনস অ্যাওয়ার্ড। এখন ‘পরিবেশ ও ধর্ম’ বিষয়ে এমফিল করছেন। আয়েশা সিদ্দিকার জন্ম চাঁদপুরের মতলব থানার সিকিরচর গ্রামে। বাবার চাকরির সুবাদে ছেলেবেলা কাটে নারায়ণগঞ্জে। বাবা মো. আজহারুল ইসলাম সরকার একটি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত। মা তাসলিমা ইসলাম গৃহিণী। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি বড়।
আয়েশা নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ২০০৯-১০ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগে ভর্তি হন। তিনি রোকেয়া হল কুইজ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের প্রতিষ্ঠাকালীন সহ-সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ গ্রাজুয়েট’স অ্যাসোসিয়েশন এর সদস্য।
এই সফলতার কথা বলতে গিয়ে আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব এটা ছিল আমার স্বপ্ন। যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল এলো তখন মনে হল আরও একটু ভালো পড়াশোনা করলেও হতো। পছন্দের বিষয় না পাওয়ার কারণে মন খারাপ হয়। এখন মনে হয় আমার এই বিভাগে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্তই সঠিক ছিল। এছাড়া দেশ বিভাগ থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ সব ক্ষেত্রেই কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল ধর্মকে ব্যবহার করেছে। বর্তমান জঙ্গি তৎপরতা, ধর্মান্ধ মানসিকতার চরম বিপর্যয়, সবকিছুর মূলেই রয়েছে ধর্মের অপব্যাখ্যা। আমরা যদি ধর্মের সঠিক বাণী অনুধাবন করতে পারি, অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে পারি তাহলে বিশ্বে সত্যিকার অর্থেই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এ নিয়েই আমি গবেষণা করতে চাই। যাতে সমাজ পরিবর্তন করা সম্ভব। নারীদের কিছুক্ষেত্রে মত প্রকাশের অধিকার ও শিক্ষা লাভের সুযোগ থাকলেও প্রকৃত স্বাধীনতার অভাব রয়েছে। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় মেয়েদের দ্রুত বিয়ে সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে পরিবার ও সমাজের সঙ্গে লড়তে হয়। আমার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ছিল না। পরিবার থেকে একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে, মেয়েদের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিলে নারী পিছিয়ে থাকবে না।
জীবনের স্পন্দন উদ্ভিদের মধ্যে লুকায়িত : মাহিন মোহিদ
সাফল্যের স্বীকৃতি সত্যিই গর্বের, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। বিএস (সম্মান) ও এমএসে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হওয়ায় দুটি স্বর্ণপদক পেয়েছি। আমাদের রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছ থেকে স্বর্ণপদক দুটি গ্রহণ করেছি। সে এক অন্যরকম অনুভূতি বললেন মাহিন মোহিদ বৈচী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের বিএস (সম্মান) ফাইনালে সর্বোচ্চ সিজিপিএ (৩.৯৫) পাওয়ায় ‘কাজী আবদুল ফাত্তাহ-খুরশীদা বানু ফাত্তাহ স্বর্ণপদক’ পেয়েছেন মাহিন মোহিদ বৈচী। এছাড়া মাস্টার্সে সিজিপিএ ৪-এ ৪ পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছ থেকেও স্বর্ণপদক পেয়েছেন। পড়াশোনায় সেরাটা দেয়ায় এর আগে পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস অ্যাওয়ার্ড, বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের গবেষণা ফেলোশিপসহ তিনটি স্কলারশিপ। বর্তমানে তিনি বিভাগের ল্যাব পাবলিকেশনের জন্য গবেষণা করছেন। এ প্রসঙ্গে মাহিন মোহিদ বৈচী জানান, দেশের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নতি সাধনে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চান তিনি।
এজন্য পেশা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতাকেই বেছে নিতে চান। শিক্ষকতার পাশাপাশি বিদেশ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে। মা-বাবা ও বড় বোনকে নিয়েই তাদের পরিবার। বাবা গোলাম মহিউদ্দীন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। মা আকলিমাতুন নাহার গৃহিণী। বড় বোন মাকতুবা মোহিদ বুয়েট থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে ইংল্যান্ডে পিএইচডি করেছেন।
মাহিন মোহিদ বৈচী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। এমএস পড়ার সময়ে তার বিয়ে হয় ওয়াসিফ আসাদ নামে একজন প্রকৌশলীর সঙ্গে। উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তে আগ্রহী হলেন কেন জানতে চাইলে মাহিন মোহিদ বৈচী বলেন, জীবনের স্পন্দন উদ্ভিদের মধ্যে লুকায়িত। তাই উদ্ভিদ বিজ্ঞানের গুরুত্ব অনুধাবন করে কলেজে পড়ার সময়েই উদ্ভিদ বিজ্ঞানের প্রতি আমার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। আবিষ্কার ও গবেষণার ক্ষেত্রে উদ্ভিদ বিজ্ঞানের ভাণ্ডার অফুরন্ত- যা মানব কল্যাণে একান্ত প্রয়োজন।
এই অনুপ্রেরণায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ে সুযোগ পাওয়ার পরও আমি উদ্ভিদ বিজ্ঞানে পড়তে আগ্রহী হই। আর আমার এই সফলতার জন্য মা-বাবা, বোন, স্বামী ও শিক্ষকদের অবদান অনেক। তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়া এতটা পথ পাড়ি দেয়া সম্ভব হতো না। এই পথ পাড়ি দিতে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছেন কিনা এ সম্পর্কে তিনি বলেন, মেয়েদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে কাজ করতে হয়।
বিশেষ করে পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় বই কেনা, সংগ্রহ, নোট জোগাড়, ফটোকপি করা, গ্রুপ স্ট্যাডি ইত্যাদি ছেলেরা এককভাবে যতটা সহজভাবে করতে পারেন, মেয়েরা তত সহজে করতে পারেন না। অন্যের সাহায্যের প্রয়োজন হয়। তবে মা-বাবার সহযোগিতায় আমি এখনও তেমন কোনো প্রতিকূলতার সম্মুখীন হইনি।
মাহিন মোহিদ বৈচী পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি গানের জন্য নিজের বিভাগ থেকে অনার অব এক্সেলেন্সি পুরস্কার, সাংস্কৃতিক প্রোগামে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘বেস্ট অ্যাওয়ার্ড’ বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত টেনিস প্রতিযোগিতায় (অনূর্ধ্ব-১৩) জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরবও অর্জন করেন। এছাড়া ইয়ুথ ডেলিগেশনের সদস্য হিসেবে ভারত সফরও করেন তিনি।
মেয়ে মানুষ সাংবাদিকতায় পড়ে কী করবে : জেনিনা ইসলাম আবির
রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ কেবল বিশ্ববিদ্যালয় জীবনই নয় বরং সারা জীবনের একটি অর্জন হয়ে থাকবে। শিক্ষাজীবনের শেষ পর্যায়ে এসে এই স্বীকৃতিগুলো সবসময় অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগাবে। শুধু গর্বই নয়, বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নামাঙ্কিত এই পদকগুলোর সম্মান রক্ষার গুরুদায়িত্বও আমাকে পালন করতে হবে, এটাও সবসময় মনে রাখতে চাই। এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে অনার্সে সর্বোচ্চ সিজিপিএ পেয়ে ‘সাংবাদিক-সাহিত্যিক কাজী মুহম্মদ ইদরিস’ স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী জেনিনা ইসলাম আবির। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবেও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনস অ্যাওয়ার্ড এর জন্যও মনোনীত হন তিনি।
জেনিনা ইসলাম আবির নিজ বিভাগ থেকে পেয়েছেন অধ্যাপক সিতারা পারভীন পুরস্কার, নভেরা দীপিতা স্কলারশিপ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন বৃত্তি, তুন ড. মাহাথীর বিন মোহাম্মদ স্কলারশিপ। একাডেমিক এবং সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য রোকেয়া হল থেকে ‘রোকেয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন স্বর্ণপদক ২০১৫’ পেয়েছেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৩ সালে পাকিস্তান এবং ২০১৫ সালে ভারত সফর করেন। পেশাগত জীবনে তিনি ইনডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর একজন প্রভাষক। আবিরের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার দুলারচর গ্রামে। পরিবারের সঙ্গে ডেমরার কোনাপাড়া এলাকায় বসবাস করছেন। তার বাবা মো. জহিরুল ইসলাম পেশায় একজন ব্যবসায়ী।
মা মনজিলা ইসলাম গৃহিণী। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। জেনিনা ইসলাম আবির সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। জেনিনা ইসলাম আবির এর মতে, শুধু পাঠ্যবইকেন্দ্রিক পড়াশোনাই না, মাঠপর্যায়ে গবেষণা থেকে পেশাগত জীবনে যা প্রয়োজন তার সবই শিখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে। এই দীর্ঘপথে তার সঙ্গে ছিল আমার পরিবারের সদস্য মা-বাবা, ভাই-বোন আর বন্ধুরা। কোনো কারণে হতাশ হয়ে পড়লে তারাই উৎসাহ দিতেন। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ সত্যিকার অর্থে তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষার্থী হওয়ার প্রথমেই আগ্রহ ছিল তার। প্রতিবন্ধকতাও ছিল। সমাজের প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, আশপাশের অনেকেই বললেন, মেয়ে মানুষ সাংবাদিকতায় পড়ে কী করবে? এর চেয়ে অন্য বিষয়ে পড়। এ কথা শুনতেই শুনতেই জেদ চেপে যায়। শুধু মেয়ে হওয়ায় কেন এই বিষয়ে পড়তে পারবে না।
তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, বিভাগ পরিবর্তন করবেন না, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগেই পড়বেন। এমনভাবে পড়বেন যাতে এই মানুষগুলোই একদিন অন্য কথা বলেন। জেনিনা ইসলাম আবিরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও বাংলাদেশের যোগাযোগ কাঠামো ও গণমাধ্যম গবেষণায় বাংলাদেশকে বিশ্বে পরিচিত করে তোলা। তিনি স্বপ্ন দেখেন একদিন এ বিষয়ক উচ্চতর পড়াশোনার জন্য বাংলাদেশ সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকবে। একজন নারীর সফলতার জন্য পরিবারের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা তাদের পরিবারের সহযোগিতা পায় না। একটু সহযোগিতা পেলে মেয়েরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারে।
আমার কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল : বেনজীর ইমাম মজুমদার
বাণিজ্য অনুষদে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগে এমবিএ-তে সর্বোচ্চ সিজিপিএ পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তনে ‘দিলীপ দাস গুপ্ত ও প্রতিমা দাস গুপ্তা স্বর্ণপদক’ পেয়েছেন বেনজীর ইমাম মজুমদার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি একজন প্রভাষক। স্বর্ণপদক প্রাপ্তি সম্পর্কে বেনজীর ইমাম মজুমদার বলেন, এই সফলতার পেছনে আমার পরিবার, শিক্ষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা রয়েছে। বেনজীরের বাবা হাসান ইমাম মজুমদার একজন অধ্যক্ষ। মা কাজী সেলিনা আক্তার গৃহিণী। দুই বোনের মধ্যে বেনজীর ছোট। বড় বোন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। বেনজীরের শিক্ষা জীবন শুরু হয় কুমিল্লার নজরুল মেমোরিয়াল একাডেমিতে। এরপর ‘আওয়ার লেডি অব ফাতিমা গার্লস স্কুল’ ও ‘নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ‘ঘ’ ইউনিট মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স নিয়ে পড়ার আগ্রহ সম্পর্কে বেনজীর ইমাম আহমেদ বলেন, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশে বিকাশমান ক্ষেত্র। তাই বাণিজ্য অনুষদে আটটি বিভাগের মধ্যে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ বেছে নিয়েছিলাম। আমাকে শিক্ষকতা পেশায় আসার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন আমার বাবা, মা ও শিক্ষক। আমার মা আমাকে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। শৈশব থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে সাহস দিয়েছেন। আজকের পর্যায়ে পৌঁছতে সহায়তা করেছেন। তবে যে কোনো কাজেই কিছু কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকে। আমারও ছিল। ঢাকায় এসে নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেয়া আমার কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল। আমার পরিবার, শিক্ষক ও সহপাঠী সবার উৎসাহে সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এই পর্যায়ে পৌঁছতে পেরেছি। ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি চিত্রকর্মের প্রতি ঝোঁক ছিল বেনজীরের। সময় পেলে এখনও ছবি আঁকেন।