পড়ি এন্ট্রাপ্রেনারশিপ, হই উদ্যোক্তা
- মো. সাইফুল ইসলাম খান
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো ডিপার্টমেন্ট অব এন্ট্রাপ্রেনারশিপ স্প্রিং সেমিস্টার -২০১৫ থেকে চালু হয়েছে। চার বছর মেয়াদী এ প্রোগ্রামটি ইউজিসি কর্তৃক অনুমোদন প্রাপ্ত। যারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় তাদের সাহায্য করার লক্ষ্য নিয়ে, বেকার না থেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্য এবং প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে একজন তরুণ তরুণী স্বীয়, মেধা- মনন ও শ্রম দিয়ে তার অস্তিত্বকে কেবল সুসংহত করবে না বরং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কল্যাণে দৃঢ়তার সাথে ও ন্যায় নিষ্ঠার সাথে উদ্যোক্তা হিসেবে যাতে গড়ে উঠতে পারেন সে জন্যেই এ প্রোগ্রামটি চালু করা হয়েছে ।
এদেশের যুব সমাজের রয়েছে অমিত শক্তি। বাংলাদেশ একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে, আর্থ- সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটছে। এ সিলেবাসে তত্ত্ব এবং বাস্তব সম্মত ব্যবসা-বাণিজ্যিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহ-সহ সকল ধরনের শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ও বাস্তবতার মিশেল দেয়া হয়েছে। বস্তুত উদ্দ্যোক্তা হওয়ার জন্যে যে সমস্ত বৈশিষ্ট্যের প্রয়োজন সেগুলোর স্বতঃস্ফূর্ত স্ফূরণ ঘটানো, উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ, দীর্ঘমেয়াদে পরিবর্তনশীলতার সাথে প্রতিযোগিতা করে স্বীয় অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি সম্প্রসারণ করা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতাকে পূরণ করার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য ও উৎপাদন ব্যবস্থায় আধুনিকতা আনায়ন করা, লাগসই প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা এবং প্রায়োগিক কলা-কৌশলের দিক নিদর্শন করে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করাই হচ্ছে এ প্রোগ্রামের মুখ্য ভূমিকা। প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থার কারণেই উদ্যোক্তা তৈরী হওয়া, দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি, কেবল নিজের কর্মসংস্থান নয় অন্যের কর্মের সুযোগ করে দেয়ার জন্যে এ প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রম হোলিস্টক এ্যাপ্রোচ হিসাবে প্রণয়ন করা হয়েছে।
সমগ্র বিশ্বে ব্যবসা- বাণিজ্য আগের চেয়ে ক্রমশ প্রতিযোগিতামূলক হয়ে পড়েছে। এ প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে প্রত্যেক মানুষের অন্তর্লীন সত্তায় যে উদ্ভাবনী শক্তি লুকায়িত রয়েছে তা নাড়া দেয়া প্রয়োজন। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৪৬ মিলিয়ন লোক শ্রম বাজারে কাজের জন্যে অনুপ্রবেশ করলেও এদের একাংশ কিন্তু কাজ পায় না। ২০১৩ সালে বিশ্বের বেকারত্বের হার হচ্ছে ১২.৬% যা ২০১৮ সালে ১২.৮% হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে। এদেশে প্রতিবছর শ্রম বাজারে ২.০ মিলিয়ন লোক র্কমসংস্থানের জন্যে প্রবেশ করলেও ০.৫ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থান হয়।
সবাই বিল গেটস নন। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্যে স্বল্পকালীন প্রশিক্ষণ তেমন কার্যকর নয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশ যেভাবে ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে সে ক্ষেত্রে শিক্ষিত বেকার যেন সমাজের বোঝা না হয় সে জন্যেই এ পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। কেননা শ্রম বাজারে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে না পারলে তা দেশের বিকাশমান অর্থনৈতিক গতি প্রবাহকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এ জন্যেই নতুন উদ্যোক্তা শ্রেণী তৈরী করতে হবে।
প্রায় তিনশ-চারশ বছর আগে যুক্তরাজ্যে উচ্চ শিক্ষা অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়ন করত Theology তে। অথচ আজ থিওলজী পড়ে এমন ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা খুবই নগণ্য। এদিকে দুশ বছর আগে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অধ্যয়নের কথা আনেকই ভাবতে পারত না। কিন্তু র্বতমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় Expert তৈরী হচ্ছে। এমনকি অর্থনীতি চর্চার ক্ষেত্রেও আলাদা আলাদা ফিল্ড রয়েছে যেমন সামষ্টিক অর্থনীতিবিদ, কৃষি অর্থনীতিবিদ, আর্থিক অর্থনীতিবিদ, নগর উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ, বাণিজ্য অর্থনীতিবিদ, শিল্প অর্থনীতিবিদ, গ্রামীণ অর্থনীতিবিদ প্রভৃতি। আবার দেড়শত বছর আগে প্রকৌশল পড়ার কথা বিবেচিত হতো উদ্ভাবনী শক্তি হিসেবে। ষাট বছর আগে খুব কম লোকই কম্পিউটার সায়েন্স পড়ার কথা ভাবত। আর এখন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ার পাশাপাশি হার্ডওয়্যার, নেটওয়্যার, সফটওয়্যার এমনকি মাল্টিমিডিয়ার উপর চার বছর মেয়াদী প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। আসলে Market Driven Force দ্বারা নিধারিত হয় শিক্ষার নতুন নতুন পাঠ্যক্রম এবং পুরানো পাঠ্যক্রমের পরিবর্তন, সংযোজন ও বিয়োজন।
এ পাঠ্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশি বিদেশী শিক্ষকদের একটি প্যানেল কাজ করেছে। পাশাপাশি দেশি-বিদেশী উদ্যোক্তরাও এ পাঠ্যক্রমের সাথে জড়িত রয়েছেন। দেশি উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছেন ড্যাফোডিল গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খানসহ অনেকেই। এ পাঠ্যক্রমটি পরিচালনার জন্য ক্যাম্পাসে ইনকিউবেটর স্থাপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটেল লিমিটেড, ড্যাফোডিল স্টার্ট আপ মার্কেট যেখানে উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ ঘটাবে সেটি স্থাপন করা হয়েছে হাতে-কলমে শিক্ষার জন্য। আবার আইএমএসএমই ফাউন্ডেশন ইন বাংলাদেশের সদস্য-সদস্যা যারা ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তাদের সাথে শিক্ষানবীশ উদ্যোক্তাদের সহচার্য পাবেন যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। বিদেশে শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা পাঠ্যক্রমের আওতায় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সামাজিক পুঁজি ও নেটওয়ার্কিং এর বিশেষ সুযোগ সঞ্চারিত হবে। দেশে লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে এ প্রোগ্রাম সহয়তা করবে।
ভর্তির যাবতীয় তথ্য পেতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ১০২, শুক্রাবাদ, মিরপুর রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৭ ঠিকানায় যোগাযোগ করতে হবে। প্রয়োজনীয় টেলিফোন নাম্বার সমূহ: ৯১৩৮২৩৪-৫, ৯১১৬৭৭৪, ৯১৩৬৬৯৪, মোবাইল: ০১৭১৩-৪৯৩১০৩, ০১৭১৩-৪৯৩০৫০-১, ফ্যাক্সঃ ৮৮-০২-৯১৩১৯৪৭। ই-মেইল: info@daffodilvarsity.edu.bd, ওয়েব সাইট: www.daffodilvarsity.edu.bd
বস্তুত: দেশের কল্যাণের কথা বিবেচনায় নিয়ে এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার জন্য উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি স্টেপিং স্টোন স্থাপনের মাধ্যমে মাইল ফলক সৃষ্টি করতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এ প্রয়াস।