দাঁতে কালচে দাগ? আছে সহজ সমাধান
- আল মোমিন
দাঁতের চিকিৎসায় অবহেলা নয়। যাদের দাঁতে রয়েছে কালচে দাগ তারা হাসতে গেলে দশ বার ভাবে। জোর করে হাসি চেপে রাখে। হলদে বা কালচে দাগে ভরা দাঁত বের করে হাসলে নিজেরই খারাপ লাগে। অনেকের সমস্যা আবার অন্যরকম, তারা কারও সামনে গিয়ে কথা বলতে গিয়ে পিছিয়ে আসেন। অন্যরা নাকে রুমাল দেন তাদের শ্বাসের দুর্গন্ধের জন্যে।
দাঁত ভাল রাখার একটি উপায় হল দিনে দু’বার সঠিক পদ্ধতিতে ব্রাশ করার পাশাপাশি প্রতি বার খাবার খাওয়ার পরে ভাল করে কুলকুচি করে মুখ পরিষ্কার রাখা, দাঁতের ফাঁকে যেন খাবারের টুকরো আটকে না থাকে সে দিকে নজর রাখা।
সিগারেট, বিড়ি, গুল, খৈনি-সহ যে কোনও বদ অভ্যাস দাঁত-সহ মুখের ভিতরের ও মাড়ির সমস্যা ডেকে আনে। মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার পাশাপাশি দাঁতে কালচে ও হলদেটে দাগ পড়ে। এর হাত থেকে রেহাই পেতে একদিকে খারাপ অভ্যাস ছেড়ে দিতে হবে, অন্যদিকে বছরে একবার স্কেলিং করিয়ে নিলে দাঁতের দাগ দূর হওয়ার পাশাপাশি মুখের দুর্গন্ধও দূর হয়।
খৈনি, পানপরাগ বা সিগারেটের নেশা নেই অনেকের। তবুও দাঁতে দাগ পড়ে যায়। বেশ কিছু কারণ লুকিয়ে আছে এর পিছনে। বয়স বাড়লে প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে যেমন ত্বকে বলিরেখা পড়ে, চুলে পাক ধরে তেমনই দাঁতেও ছাপ পড়ে। একজন অল্প বয়সী ছেলে মেয়ের দাঁত যতটা উজ্জ্বল, ৬০ পেরিয়ে গেলে দাঁত ততটাই দাগ ছোপে ভরা। তবে সঠিক পদ্ধতিতে দিনে দু’বার নিয়ম মেনে ব্রাশ করলে এবং নিয়ম করে সঠিক ভাবে স্কেলিং করালে দাগ ছোপের সমস্যা থাকবে না। হাসি চাপার কোনও দরকারই হবে না।
তামাক-সহ যে কোনও নেশাই দাঁতে দাগ পড়ার একটা বড় কারণ। যারা বেশি কফি, চা বা রেড ওয়াইন পান করেন তাঁদের দাঁতের রঙ বদলে যায়। ডার্ক চকোলেট, বিট, গাজর বেশি খেলে দাঁতে দাগ পড়তে পারে। প্রতিদিনের ডায়েটে ভিনিগার সহ প্রচুর সাইট্রাস অর্থাৎ টকজাতীয় খাবার থাকলে দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে দাঁতে দাগ পরা শুরু হয়। অনেক সময় বেশি ওষুধ খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দাঁতে কালো দাগ পড়তে পারে। চোট লেগে দাঁতের রঙ বদলে কালচে বা নীলচে হয়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসা করানো দরকার। ব্যথা থাকে না বলে কেউই প্রথমে খেয়াল করেন না। কিন্তু পরবর্তী কালে দাঁতের রঙ পাল্টে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোগান্তিও কম হয় না।
রেগে গেলে দাঁতে দাঁত ঘষা অনেকের বদ অভ্যাস। এর থেকেও এনামেল ক্ষয় হয়ে দাঁতের রঙ বদলে যায়। অনেকেই টুথ পিক বা ফ্লস ব্যবহার করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে একবার অন্তত ডেন্টাল সার্জেনের পরামর্শ নেওয়া উচিত। লক্ষ্য করে দেখবেন অল্প বয়সীরা কিন্তু এগুলি ব্যবহার করে না। যখনই টুথপিক ব্যবহারের প্রয়োজন হবে বুঝবেন দুটি দাঁতের মধ্যবর্তী ফাঁক বেড়ে গিয়েছে। তাই কোনও সমস্যা থাকুক বা না থাকুক বছরে অন্তত একবার ডেন্টাল সার্জেনের কাছে যেতে হবে।
একটা ব্যাপারে অনেকের খুব অনীহা আছে, তা হল স্কেলিং। অনেকেই ভাবেন, স্কেলিং করলে হয়ত দাঁত পাতলা হয়ে যায়। কিন্তু ঝকঝকে ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দাঁত পেতে গেলে বছরে একবার স্কেলিং করা আবশ্যক। দাঁতে পোকা অর্থাৎ ক্যাভিটি থাকলেও দাঁত কালো হয়ে যেতে পারে। আগে তার চিকিৎসা করাতে হবে। এবড়োখেবড়ো বা ভাঙা দাঁতও নিমেষে সমান করে দেওয়া যায়। এ ছাড়া বিশেষ পদ্ধতিতে ‘টুথ-হোয়াইটেনিং’ করা হয়।
অনেকে নিজে থেকে হোয়াইটেনিং এজেন্টের সাহায্যে দাঁত সাদা করেন। এগুলি মূলত ব্লিচিং এজেন্ট। নিয়মিত ব্যবহারে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।