বর্ণিল গামছায় বাহারী ফ্যাশন
আকলিমা আক্তার রিক্তা : গ্রামীণ ঐতিহ্যের একটি অংশ হল গামছা। শুধু গ্রাম নয় শহুরে জীবন যাপনেও গামছার প্রচলন রয়েছে। গামছার উজ্জ্বল রঙ নজর কাড়ে যেকোন বয়সের মানুষকে। তবে বর্তমান সময়ে শহরে গামছার ব্যবহার অনেকাংশে কমে গেছে তোয়ালে ব্যবহারের কারনে।
কালের পরিক্রমায় গামছা শুধুমাত্র গা মোছার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে না ,গামছা ফ্যাশনেও ব্যবহৃত হচ্ছে। গামছার ফ্যাশনকে দেশে ও দেশের বাইরে ভদ্র সমাজে সমাদৃত রূপ দিয়েছেন ডিজাইনার বিবি রাসেল। তার অবদানে হাতে বোনা গামছা ফ্যাশন জগতে স্থান করে নিয়েছে। বাংলাদেশের ফ্যাশন আইকন বিবি রাসেল হলিউড অভিনেতা অ্যান্টোনিও বান্ডেরাসকে তার জন্মদিনে গামছা উপহার দেন এবং গামছা ফ্যাশন সম্পর্কে অবহিত করেন।
লন্ডনের একটি ফ্যাশন শো তে বিবি রাসেল গামছার তৈরি নানা পোষাক নিয়ে হাজির হন। ফ্যাশনিস্টদের নজড় কাড়ার পাশাপাশি ফ্যাশন দুনিয়ায় প্রশংসনীয় হোন তিনি। প্যারিসেও সমাদৃত হয় গামছা ফ্যাশন। শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পালাজো, কুর্তা, শর্ট কুর্তি ,লং কুর্তি, টপ, জ্যাকেট, ধুতি প্যান্ট, ব্লাউজ, ওড়না ইত্যাদি তে ব্যাবহৃত হচ্ছে গামছা। বাংলাদেশের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসগুলোতে ফেব্রিক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে গামছা। এছাড়া কলকাতা, আসাম, বিহারেও মোটা কাপড়ের গামছার ব্যবহার চলছে। পাতলা গামছার তুলনায় মোটা বুনট এর গামছা পোষাকে ব্যবহৃত হয়। মুম্বাই ফ্যাশন জগতেও লাল, নীল, সাদা, হলুদ ও খয়েরী রঙ এর গামছার প্রচলন চলছে।
আমাদের দেশে গামছা শুধু পোষাক হিসেবেই নয় বরং বাংলার আবহমান ঐতিহ্য হিসেবে উঠে এসেছে। তরূন প্রজন্ম থেকে শুরু করে মধ্যবয়স্ক লোকেরা সানন্দে গ্রহণ করছে গামছার তৈরি বিভিন্ন পোষাক। ফ্যাশন হাউসগুলোতে শাড়ি, স্কার্ট, ফতুয়া, পালাজা, পাঞ্জাবী ইত্যাদি সবধরনের পোষাকে পিউর গামছা ব্যবহার করছে। সুতি কাপড় ছাড়া ও সুতি ও সিল্ক কাপড়ের মিশ্রণে তৈরী হচ্ছে গামছা ওড়না।
উজ্জ্বল রং :
ফ্যাশন ডিজাইনার এমদাদ হক বলেন “গামছার রংগুলো প্রকৃতিরই অংশ, সূর্যের মত লাল, আকাশের মত নীল, কচি ধানের মত সবুজ, প্রকৃতির এসব রঙের ব্যবহার আমরা করেছি পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রীতে। তবে রঙ এর ব্যবহারে আমরা আরো যত্নশীল হয়েছি যেন রঙটা পাকা হয়”। লাল, হলুদ, কমলা, নীল, খয়েরী এ ধরনের উজ্জ্বল রঙ ব্যবহার করা হয় বলেই সকলের নজড় কাড়ে গামছা।
প্রাপ্তিস্থান :
বিবি প্রোডাকশন, প্রবর্তনা যাত্রাসহ দেশের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে গামছায় তৈরী পোষাক।
দরদাম : পোষাক হিসাবে
- শাড়ি ৮০০-২০০০
- সালোয়ার কামিজ ৮০০-১৫০০
- টপস ৪৫০-৬৫০
- ফতুয়া ৪৫০-৭৫০
- পাঞ্জাবি ৬৫০-৯৮০
- স্কার্ট ৬০০-১১৫০
- ওড়না ৩০০-৬৫০
গ্রামীন ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি গামছা ফ্যাশনেও সমাদৃত হচ্ছে। দেশীয় ভাবমুর্তি রক্ষার পাশাপাশি বিশ্বের বুকেও মাথা উচু করে ফ্যাশন কে টিকিয়ে রাখছে এই গামছার ফ্যাশন। আর গামছা ফ্যাশনকে সমাদৃত করতে ডিজাইনারদের আপ্রাণ চেষ্টা প্রশংনিয়।