হারিয়ে যাওয়া কিশোরী এক বছর পর উদ্ধার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আচমকা একটি ফোন। আর তাতে প্রায় এক বছর আগে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া বোনের গলা। অবশেষে সেই ফোনের সূত্র ধরেই ভারতের বিহারে বিক্রি হয়ে যাওয়া ষোলো বছরের কিশোরীকে উদ্ধার করেছে দেশিটির বেলুড় থানার পুলিশ। গতকাল (২৮ ডিসেম্বর) মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাওড়ায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বিহারের বাসিন্দা এক যুবককে। আজ, অনিলকুমার নিরালা নামে ওই যুবককে হাওড়া আদালতে তোলা হবে বলে জানায় পুলিশ। সংবাদ : আনন্দবাজার।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (উত্তর) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, গত ৩ জানুয়ারি বেলুড়ের জয়বিবি রোডের বাসিন্দা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ওই কিশোরী আচমকা বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও তার হদিস না পেয়ে ৮ জানুয়ারি বেলুড় থানায় অপহরণের মামলা করে পরিবার। কিন্তু প্রায় এক বছরে পুলিশও ওই কিশোরীর সন্ধান পায়নি। দিন দশেক আগে মেয়েটি বিহারের সিওয়ানে রয়েছে জানতে পেরে বেলুড় থানা থেকে চার জনের একটি দল সেখানে হানা দেয়।
পুলিশ জানায়, বিহার পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে সিওয়ানের একটি বাড়ি থেকে ওই কিশোরী-সহ আরও ১৩ জন নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ, তাদের প্রত্যেককে দিয়েই মোটা টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচ করাতো অনিল। ভাস্করবাবু বলেন, ‘বেলুড়ের ওই কিশোরী এবং অনিলকে আমরা নিয়ে এসেছি। বাকি মেয়েদের বিহার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’
কী ভাবে খোঁজ মিলল ওই কিশোরীর? পুলিশ সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ওই কিশোরী তার বোনকে ফোন করে। জানায়, সে বিহারে অনিলের বাড়িতে রয়েছে। কোনও ভাবেই তাকে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় না। সব সময়ে দুই-তিন জন যুবক তার উপরে নজরদারি চালান। ওই দিন একটি অনুষ্ঠানে একা যাওয়ার সুযোগে ওই কিশোরী গাড়ির চালকের কাছে আর্তি জানিয়ে তাঁর মোবাইল থেকে বাড়িতে ফোন করে।
ওই কিশোরীর বোন বেলুড় থানার পুলিশকে ফোন নম্বরটি দিলে, তদন্তে বিহারের ঠিকানা মেলে। সেখানে গিয়ে প্রথমে ওই গাড়িচালককে আটক করে পুলিশ। তাঁর থেকে খোঁজ মেলে ওই দিন কার বাড়িতে অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে গিয়ে পুলিশ অনিলের ঠিকানা পায়। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অনিলের স্ত্রী পূজাও এই ঘটনায় জড়িত। ওই কিশোরীর পরিবারে অনটন থাকায় ভাল কাজ দেওয়ার নামে পূজাই তাকে বিহারে নিয়ে গিয়েছিল। এর পরেই মেয়েটির উপরে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে তাকে নাচতে বাধ্য করা হয়। ভাস্করবাবু বলেন, ‘অনিলের সঙ্গে আন্তঃরাজ্য নারী পাচার চক্রের যোগাযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
অন্য দিকে, গত ৩ ডিসেম্বর নিশ্চিন্দা থানার আনন্দনগরের বাসিন্দা বারো বছরের এক ছাত্রীকে তারই গৃহশিক্ষক মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে নিয়ে পালান বলে অভিযোগ ওঠে। তদন্তে নেমে বিজয়প্রকাশ সিংহ নামের ওই শিক্ষককে শ্রীরামপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা যায়, মেয়েটি ভাগলপুরে রয়েছে। তাকেও উদ্ধার করে ওড়ায় আনা হচ্ছে বলে জানান ভাস্করবাবু।