ড্যাফোডিলে গ্লোবাল মানি উইক শুরু
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
গ্লোবাল মানি উইক ২০১৮ উদযাপনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন আজ সোমবার (১২ মার্চ) ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিৃটির ৭১ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বের ১৩৭ টি দিমের সাথে তাল মিলিয়ে ‘মানি ম্যাটার্স মেটার’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সপ্তাহব্যাপী এ উৎসব আয়োজন করেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও স্কিল ডেভলপমেন্ট ইনস্টিটিউট। উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বাংলাদেশ ব্যাংক এবং উৎসবের স্পন্সর প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেড।
সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের মধ্যে রয়েছে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ওয়ার্কশপ ও সেমিনার আয়োজন, টক শো, মাস্টার ক্লাস, মাইন্ড ম্যাপিং, শিল্পকারখানা পরিদর্শন, মানি মিউজিয়াম পরিদর্শন, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো এবং তাদের সাথে সেতুবন্ধ রচনা করা, বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা ও তরুণ উদ্যোক্তাদের পুরস্কৃত করা। অনুষ্ঠান আয়োজনে রয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল, ইএমকে সেন্টার, বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, নাগরিক টিভি, রেডিও ফূর্তি, বিল্ড বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, এসআইওয়াইবি বাংলাদেশ।
সাত দিনের গ্লোবাল মানি উইক উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা এস কে সুর। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, ইএমকে সেন্টারের প্রধান নির্বাহী এম কে আরেফ, ব্রিটিশ কাউন্সিলের পরীক্ষা বিভাগের পরিচালক সেবাস্তিন পিয়ার্স, নাগরিক টিভির প্রধান নির্বাহী ও দেশখ্যাত বিতার্কিক আবদুন নূর তুষার ও ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএসডিআই এর নির্বাহী পরিচালক কে এম হাসাসন রিপন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা এস কে সুর বলেন, গ্লোবাল মানি উইক উদযাপনের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের কিশোর তরুণদেরকে অল্প বয়স থেকেই আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও অর্থ সঞ্চয়ের ব্যাপারে সচেতন করে তোলা। এস কে সুর আরো বলেন, বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা দারিদ্র ও বৈষম দূর করার জন্য মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্কুল ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং বাংলাদেশে বিপ্লব সাধন করেছে। বর্তমানে স্কুল ব্যাংকিং একাউন্ট ১৪ লাখ ৫৪ হাজার। এটা বিস্ময়কর একটা ব্যাপার। বিশ্বের অন্যান্য দেশ আমাদের মোবাইল ব্যাংকিংকে অনুসরণ করছে।
গ্লোবাল মানি উইককে আন্দোলন উল্লেখ করে এস কে সুর আরো বলেন, সাইফাই নামের প্রতিষ্ঠান বিশ্বের ১৩৭টি দেশে গ্লোবাল মানি উইক উদযাপন করে। ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এই আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে অঅসার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. মো. সবুর খান তার বক্তব্যে বলেন, জ্ঞানই টাকা উপার্জনের উৎস। তাই অর্থ উপার্জনের জন্য জ্ঞানকে বিনিয়োগ করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে উবারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, উবারের নিজস্ব কোনো ট্যাক্সি নেই। অথচ উবারই এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবহন ব্যবসায়ী।
এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ড. মোঃ সবুর খান বলেন, পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে। এখন বিশ্বের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল কারেন্সি সিস্টেমে চলে গেছে। সুতরাং পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ক্যারিয়ার পরিকল্পনা করতে হবে। প্রতিদিনের জীবনযাপনে আমরা অনেক কিছুই শিখি। সেই শিক্ষাগুলোকে ক্যারিয়ার পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে বলে মন্তব্য করেন ড. মো. সবুর খান।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মোঃ আলী বলেন, তরুণ প্রজন্মের হাত ধরেই বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ এই পর্যায়ে এসেছে। আমাদের তরুণরা অসম্ভব সম্ভাবনাময়। তারা ব্যাংকিং সেক্টরকে বদলে দিচ্ছে। এসময় তিনি স্কুল ব্যাংকিংয়ের উদাহরণ দিয়ে বলেন, স্কুল ব্যাংকিংয়ে বাংলাদেশে যে সাফল্য দেখিয়েছে তা নজিরবিহীন। ব্যাংকগুলো যদি আরো পরিকল্পিত উপায়ে কাজ করে তবে সাফল্য আরো দ্রæত আসবে বলে অভিমত দেন সৈয়দ ওয়াসেক মোঃ আলী।
নাগরিক টিভির প্রধান নির্বাহী আব্দুন নূর তুষার বলেন, পৃথিবীর সম্পদ যেমন সোনা, রূপা, লোহা ইত্যাদি একসময় ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, কিন্তু মেধা কখনো ধ্বংস হয় না। তাই নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে বলেন আব্দুন নূর তুষার। তিনি বলেন, নিজেকে সম্পদ হিসেবে তৈরি করতে পারলে, অন্যের সম্পদের দিকে হাত বাড়াতে হয় না।
সমস্ত অর্থই জ্ঞান থেকে আসে উল্লেখ করে আব্দুন নূর তুষার বলেন, জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন উদ্ভাবন করতে পারলে টাকা এমনিতেই পকেটে চলে আসে। তাই শিক্ষার্থীদের উচিত জ্ঞানের শক্তিকে কাজে লাগানো। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ যদি তাদের মস্তিষ্ককে কাজে লাগায় তবে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ হবে সবচেয়ে উন্নত দেশ।