ইরানে অনন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
দারুণ এক আনন্দঘন মুহূর্ত ছিল বাংলাদেশের জন্য। ফোন করা মাত্রই ইব্রাহিম খলিল কেঁদে ফেললেন। এক মাসব্যাপী বুনিয়াদি সাদি (Saadi Foundation) ও আল্লামা তাবাতাবায়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের উচ্চতর প্রশিক্ষণ কোর্সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম খলিল ছেলেদের ক্যাটাগরিতে ও মেহজাবিন ইসলাম মেয়েদের ক্যাটাগরিতে ৪১টি দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। উল্লেখ্য ৫টি মহাদেশের ৪১টি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শর বেশি এমএ, এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের নিয়ে উচ্চতর কোর্সটি অনুষ্ঠিত হয়েছে ৮৩তম রিফ্রেশার্স কোর্স। ফারসি ভাষা ও সাহিত্য একাডেমির প্রধান ও সাদি ফাউন্ডেশনের পরিচালক হাদ্দাদ আদেল তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
২ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে এই কোর্সটির আয়োজন করা হয়। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ছাড়াও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, জার্মান, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, আর্মেনিয়া, ইউক্রেন, জর্জিয়া, তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক, ভারত, পাকিস্তান, আলজেরিয়া ও আজারবাইজানসহ মোট ৪১টি দেশের শিক্ষার্থী। অপর বাংলাদেশি ছাত্রী নাজমুন নাহার প্রথম পাঁচজনের মধ্যে ছিলেন।
এবারই প্রথম ফারসি ভাষায় কৌতুক, গান, কবিতা, কাব্যিক ছন্দের খেলা, টেলিভিশন লাইভ শো, যুব দিবস বিতর্ক, খেলা, নারী দিবসের গল্প বলা ইভেন্ট যোগ করা হয়।
গর্বের বিষয় হচ্ছে ইরানের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় আল্লামা তাবাতাবায়ি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাস প্রাঙ্গণে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে বাংলাদেশের ইব্রাহিম জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। মেহজাবিন ইসলাম মানেই হচ্ছে যে কোনো বিভাগে অংশগ্রহণ ও পুরস্কারপ্রাপ্তি। নাজমুন নাহারও পিছিয়ে ছিলেন না।
এই শিক্ষা কার্যক্রমের মূল অংশের অন্যান্য বিষয়াবলি হচ্ছে ফারসি পদ্য ও গদ্যের বিভিন্ন সময়কাল ও বৈশিষ্ট্য, ইরান স্টাডিজ, ফারসি ভাষার ইতিহাস, ফারসি লেখন পদ্ধতি, ক্যালিগ্রাফি প্রশিক্ষণ, পারস্য স্টাইলের হস্তশিল্প বুনন পদ্ধতি রপ্তকরণ, ফারসি কথোপকথন, ফারসি ব্যাকরণ পদ্ধতি ইত্যাদি। শুক্রবার বাদে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় এই ক্লাস কার্যক্রম।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ইরানে অনুষ্ঠিত এখনো পর্যন্ত প্রায় সবকটি আন্তর্জাতিক উচ্চতর রিফ্রেশার্স কোর্সে বাংলাদেশি বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ছেলেমেয়েদের একচেটিয়া প্রাধান্য। কিন্তু বিমান ভাড়া ব্যয়বহুল হওয়ায় ও নিজেদের বহন করার শর্ত থাকায় প্রতিবছর মেধাবী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ হয়ে ওঠে না। এ বছর ঢাকার ইরানি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলরের বিশেষ ভূমিকার কারণে বনিয়াদে সাদি কর্তৃপক্ষ অর্ধেক বিমান ভাড়া বহন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ফলে তিন বছর পর বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করলেন।