ইবিতে সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা
- ইবি প্রতিনিধি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অনির্দিষ্টিকালের জন্য সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং বহিরাগতদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। আজ (৯ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীকে ঘিরে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে উপাচার্যের নির্দেশে আজ সকাল ৮টায় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে ক্যাম্পাসে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে ও সাম্প্রতিক উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে রেজিষ্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ জানিয়েছেন।
এদিকে মারধর ও কর্মকর্তাদের উপর হামলার ঘটনায় সাময়িক বহিস্কৃত দুই কর্মকর্তার বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে রেজিষ্ট্রারকে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। উপ-উপাচার্যপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তারা রেজিষ্ট্রারের অফিসে গিয়ে তাকে দুই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, আজ উপাচার্যপন্থী ও উপ-উপাচার্যপন্থী আওয়ামী শিক্ষক-কর্মকর্তারা মানববন্ধন ও মৌন মিছিলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীর ডাক দেয়। এতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মুখোমুখি অবস্থানে ক্যাম্পাসে চাপা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে উদ্ভুত যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলা ও নিয়ন্ত্রণ করার স্বার্থে সভা, সমাবেশ, মিছিল, মানববন্ধন, শোডাউন সহ সব ধরণের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকারের বিশেষ ক্ষমতাবলে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় বলে রেজিষ্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। এব্যাপারে প্রক্টর ড. মাহবুবর রহমান বলেন-‘ক্যাম্পাসের শিক্ষার সাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করার স্বার্থে ও সব ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে সভা-সমাবেশ সহ রাজনৈতিক কর্মকান্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।”
গত বুধবার বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপাচার্যপন্থী কর্মকর্তাদের উপর হামলা ও মারধের ঘটনায় উপ-উপাচার্যপন্থী আব্দুল হান্নান ও আলমগীর হোসেন খাঁন নামের দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই দুই কর্মকর্তার বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফকে অবরুদ্ধ করে উপ-উপাচার্যপন্থীরা। এসময় তারা বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য রেজিষ্ট্রারকে আগামীকাল বেলা ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টার সময় বেঁধে দেয়।
এদিকে দুপুর দেড়টার দিকে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা রেজিস্ট্রারের সাথে দেখা করেন এবং বুধবার তাদের উপর হামলাকারী কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি পেশ করে।
এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ বলেন-‘উপাচার্য মহোদয় যে আদেশ করেন সে অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য। সুতরাং উর্ধ্বতন কর্তা ব্যক্তিদের মতামত বা নির্দেশনা ছাড়া আমি কোনো কাজ করতে পারি না। তা আমার এখতিয়ার বহির্ভুত।’