সিঙ্গাপুর যাবে বেরোবি শিক্ষার্থী দল
- সজীব হোসাইন, রংপুর
দেশের সাতটি বিভাগের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ ফেস্ট-২০১৬’ প্রতিযোগিতায় সারা দেশের ৪২টি দল নিয়ে সাতটি ক্যাটাগরিতে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আর এই সাত ক্যাটাগরির মধ্যে দুইটি ক্যাটাগরিতে দেশ সেরা আইডিয়া দিয়ে বিজয়ী হয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মার্জিনা মাসুদ দ্বীপা ও শারমিন জাহান এবং পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ আল-সাগর ও আল আমিন ইসলাম।
গত ১৩ ও ১৪ মে ক্যাম্পাসে দুই দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ ফেস্ট’ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। ফাইনাল রাউন্ডে সাতটি আঞ্চলিক রাউন্ডের মধ্যে রংপুর অঞ্চল থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি দল। আর এর মধ্যে দুইটি দল দেশ সেরা আইডিয়া দিয়ে সুযোগ করে নেন সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত স্পাইকস এশিয়াতে অংশগ্রহণের সুযোগ, যা এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ ক্রিয়েটিভ ফেস্টিভ্যাল হিসেবে পরিচিত। সেখানে তারা বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন।
‘নারী উদ্যোক্তা ক্যাটাগরি’-এ বিজয়ী দলের মার্জিনা মাসুদ দ্বীপা জানান, ফাইনাল রাউন্ডে আমাদের আইডিয়া ছিল ‘ক্যাম্পাস কিচেন’ নামে। যেটা নারী কর্তৃক পরিচালিত এমন একটি ব্যবসা যেখানে বাংলাদেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী বাঙ্গালী খাবার পরিবেশন করা হবে। যা নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং ঐতিহ্যবাহী বাঙ্গালী খাবার সংরক্ষণে অবদান রাখবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে দ্বীপা জানান, বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ঐতিহ্যবাহী বাঙ্গালী খাবারের পরিবেশনের ইচ্ছা রয়েছে। সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত স্পাইকস এশিয়াতে অংশগ্রহণের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রস্তুতি চলছে, আশাকরি সেখান থেকেও দেশের জন্য সুসংবাদ নিয়ে আসব।
অপরদিকে দেশ সেরা ‘বাণিজ্যিক আইডিয়া’ দিয়ে বিজয়ী দলের আবু সাঈদ আল-সাগর জানান, ফাইনাল রাউন্ডে তাদের আইডিয়া ছিল ‘সার্ভিসিং ক্যাম্পাস’। যেখানে স্কুল পর্যায়ে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বাড়িতে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী মেরামতে পারদর্শী করা এবং তাদের কর্মমুখী শিক্ষা প্রদান করে স্বাবলম্বী করে তোলা হবে। এই আইডিয়ার ভবিষ্যৎ সম্ভবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দিনদিন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, সমস্যাও বাড়ছে। তাই আমরা ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর হোম সার্ভিসিং নিয়ে কাজ করব। এতে খুব সহজেই একটি প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাহককে সব ধরণের সেবা দেয়া সম্ভব। সেই সাথে বিপথে বিদেশ গমন কমিয়ে যুব সমাজকে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। স্পাইকস এশিয়াতে অংশগ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন, অবশ্যই দেশকে এগিয়ে রাখার চেষ্টা করব।
শিক্ষার্থীদের এমন সাফল্যে গর্বিত গোটা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। আজ বুধবার(১৮ মে) বিজয়ী শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী বলেন, রংপুর থেকে সাড়া দেশের সাথে প্রতিযোগিতা করে দুইটি ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসায় এ অঞ্চলের মেধাবীরা অনেক বেশি উৎসাহিত হবে। প্রেরণা পাবে সামনে নিজেকে এগিয়ে যাওয়ার।