শুধুই মেয়েদের ক্লাব
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
‘যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে গিয়ে দেখলাম ওখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রছাত্রীদের ক্লাবগুলো খুবই সক্রিয়। পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টার্নশিপ, খণ্ডকালীন চাকরি-সব কিছুতেই ওরা সাহায্য করে। দেশে ফিরে মনে হলো আমাদের এখানেও এমন যদি কিছু করতে পারি। বন্ধু ফারজানাকে বলতেই ও রাজি হয়ে গেল,’ বলছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (সিএসই) সাবেক ছাত্রী ড. তানজিমা ইসলাম। তাঁর হাত ধরেই সিএসই বিভাগের ছাত্রীদের ২০১৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করে ‘বুয়েটিয়ান ওমেন ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’। পরে সংগঠনের নাম বদলে হয় ‘বাংলাদেশি উইমেন ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (বিডাব্লিউসিএসই)’।
‘আমাদের মূল লক্ষ্য ছাত্রীদের গবেষণায় উৎসাহিত করা। তাদের আইডিয়া যাতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোতে উপস্থাপন করতে পারে সে সহায়তাও দিই। এ ছাড়া বিভাগের বর্তমান এবং প্রাক্তন ছাত্রীদের মধ্যে সেতুবন্ধও করতে চাই। এতে এখনকার শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে দিকনির্দেশনা পাবে,’ বললেন ক্লাবের বর্তমান সভাপতি কাজী সিনথিয়া কবির। বর্তমানে ক্লাবের সদস্য শতাধিক। উপদেষ্টা কমিটিতে আছেন প্রাক্তন ৯ শিক্ষার্থী। এ ছাড়া বিভাগের প্রভাষক ড. সাদিয়া শারমিন আছেন সার্বিক তত্ত্বাবধানে। ক্লাবের কার্যক্রম নিয়ে ড. সাদিয়া শারমিন বললেন, ‘আমরা যখন স্নাতকের ছাত্রী ছিলাম তখন দেশের বাইরে পড়াশোনা, বৃত্তি ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানতাম না। ক্লাবের মাধ্যমে বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রীদের মধ্যে দারুণ একটা যোগাযোগ হয়েছে। ওদের সুযোগগুলো সম্পর্কে এখনকার শিক্ষার্থীরা সহজেই জানতে পারছে।’
একই মত পাওয়া গেল ক্লাবে সদস্যদের কাছেও। নুসরাত মজুমদার বললেন, ‘ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর আমি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছি। এটা আমার জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা।’
সোনিয়া বিনতে হোসাইন যোগ করলেন, ‘বাইরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিভাগের সাবেক ছাত্রীরা কাজ করেন। যেকোনো প্রয়োজনে ওনারা খুব সাহায্য করেন।’ বয়স সবে দুই বছর হলেও ক্লাবের সাফল্যের ঝুলিটা বেশ সমৃদ্ধ। ২০১৪ সালে গ্রাস হোপার্স সম্মেলনে ক্লাবের ৯ জন পোস্টার সাবমিট করে। এর মধ্যে দুজন আন্তর্জাতিক ট্রাভেল গ্রান্ট পেয়ে অ্যারিজোনায় সম্মেলনে অংশ নেয়। একই বছর ক্লাবের সহসভাপতি সামিয়া কবির পেয়েছে, ‘গুগল-অনিতাবর্গ স্কলারশিপ’। এ ছাড়া লুইজিয়ানায় অনুষ্ঠিত কম্পিউটার সায়েন্সের ‘সুপারকম্পিউটিং কনফারেন্সে’ কাজী সিনথিয়া কবির ও মালিহা সারওয়াত অংশ নেন। এমন আরো সাফল্য পেতে ক্লাবের সদস্যরা আরো নানা পরিকল্পনা করছেন। সিনথিয়া কবির জানালেন, ‘এবার থেকে প্রতি বছরের সফল একজন ছাত্রীকে পুরস্কার দেওয়া হবে। ইচ্ছে আছে মেন্টর নিয়োগ করারও। এ ছাড়া ভবিষ্যতে সিএসই পড়া দেশের সব ছাত্রীকে এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে চাই।’