পড়তে চাইলে বিজ্ঞান নিয়ে
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
আপনি কি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী? সবেমাত্র শেষ করেছেন এইচএসসি পরীক্ষা? উন্মুক্ত সবুজ মাঠ আর খানিকটা রাজকীয় কায়দার পোড়ামাটির লাল দালান নিশ্চয়ই আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে? হ্যাঁ, বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের গল্পই বলছি। এইচএসসির পর বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা মূলত চিকিৎসক বা প্রকৌশলী হওয়ার জন্যই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু যাঁরা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পাশাপাশি বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলোতে পড়তে চান, তাঁদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদে রয়েছে অবারিত সুযোগ।
স্বপ্নটা ওদের কার্জন হলকে ঘিরে। সেই স্বপ্নকে ছুঁতে সবার আগে ভর্তি পরীক্ষায় নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রাখতে হবে। কিন্তু ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষা তো আর ছেলের হাতের মোয়া না। তাই প্রয়োজন বিশেষ প্রস্তুতির। অন্যান্য ইউনিটের মতো ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাও মোট ২০০ নম্বরের মধ্যে হয়ে থাকে। এর মধ্যে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় ১২০। গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে ৩০ করে মোট ৯০টি প্রশ্নের পাশাপাশি জীববিজ্ঞান এবং বাংলা অথবা ইংরেজি যেকোনো একটির উত্তর করলে সে বিষয়ের জন্য বাকি ৩০ নম্বর বরাদ্দ থাকে।
কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে একজন শিক্ষার্থী কম সময়ে ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হতে পারবেন, সেসব নিয়ে কথা বলেছেন ২০০৯-১০ সালের ভর্তি পরীক্ষায় ‘ক’ ইউনিটে নবম এবং ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম ফাইহান শাহরিয়ার মাহিন। মাহিন বলেন, ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজন নিয়মিত পড়াশোনা করা। প্রশ্ন করি, গণিতে কীভাবে ভালো করা যায়? কোনো ভূমিকা ছাড়াই মাহিন বলেন, ‘আসলে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা অঙ্কের হিসাবের বাইরে চলতে পারে না। আর এই জন্য আমি বিগত ১০ বছরের প্রশ্নপত্র অনুসরণ করেছিলাম। কেননা, ঘুরেফিরে নির্দিষ্ট কিছু সূত্রের অঙ্কই প্রতিবার ভর্তি পরীক্ষায় আসে। তা ছাড়া অঙ্ক তো মুখস্থ করার বিষয় নয়। তাই সূত্র ধরে চর্চা করলে গণিতের ভূতকে পরাভূত করতে পারবেন। প্রশ্ন এবার পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে। কীভাবে সামলালেন বিষয়টি? মাহিনের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘যেহেতু ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে পড়ছি, সুতরাং বুঝতেই পারছেন নিরস পদার্থবিজ্ঞানের মাঝেও আমি রস খুঁজে পেয়েছি। এইচএসসির মূল বইটা ভালো করে পড়েছি আর পদার্থবিজ্ঞানের অঙ্কগুলো ভালোভাবে চর্চা করেছি।’ আর রসে টইটম্বুর রসায়ন? এ ক্ষেত্রেও মূল বই পড়ার পাশাপাশি রসায়নের অঙ্কগুলো সমাধান করতে হবে।
বাকি রইল আর একটি অংশ। একজন শিক্ষার্থী বাংলা, ইংরেজি, জীববিজ্ঞান—এই তিনটি
বিষয়ের মধ্য থেকে পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো একটি বিষয়ে উত্তর করতে পারবেন। তবে এখানে রয়েছে হিসাবের ব্যাপার। একজন শিক্ষার্থীকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, পরবর্তী সময়ে তিনি কোন বিষয়ে পড়তে চাইছেন। অর্থাৎ ভর্তি পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানের উত্তর না করলে পরবর্তী সময়ে জীববিজ্ঞানসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পছন্দের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে মাহিন বলেন, ‘আগে আমার লক্ষ্যটা ঠিক করতে হবে যে আমি কোন বিষয়ে পড়তে চাই। আর ইংরেজি বা বাংলা দুই বিষয়ের জন্যই ব্যাকরণের ওপর জোর দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, জীববিজ্ঞানে মূল বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো চিহ্নিত করে মুখস্থ করতে হবে। তবেই কার্জন হলের হাতছানিতে সাড়া দিতে পারবেন আপনি…