জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হালহকিকত
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
১৯৯২ সালে অধিভুক্তকরণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। নানান চড়াই-উতরায়ের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠার ২৪ বছর পার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ২০ লাখ শিক্ষার্থী প্রায় দুই হাজার ১৫৪টি কলেজ ও ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করছে।
নতুন ছয় বিভাগ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে ছয়টি নতুন বিভাগ চালু করা হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিল কলেজ পর্যায়ে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ, মিউজিক, অ্যারোনটিক্যাল অ্যান্ড এভিয়েশন সায়েন্স এবং এভিয়েশন ম্যানেজমেন্ট এ পাঁচটি বিষয়ে অনার্স এবং থিয়েটার স্টাডিজে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা চালু করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত রেগুলেশনস ও সিলেবাসও অনুমোদন করা হয়।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে
দেশের ২৮১টি সরকারি কলেজ ২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়া হচ্ছে। সরকারি কলেজগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গেলে কলেজের শিক্ষার মান বাড়বে এমনটাই ভেবে নেওয়া হচ্ছে। যদিও সরকারি কলেজগুলো অধিভুক্তির বিরোধিতা করে আসছে। ইউজিসি সূত্র জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারি কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করা হবে।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে— রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। সূত্র জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর ও জয়পুরহাট জেলার সরকারি কলেজগুলোকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়া হচ্ছে।
খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার সরকারি কলেজগুলো যাচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। আর যশোর, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার কলেজগুলো যাচ্ছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের কলেজগুলো যাচ্ছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায়। কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুরের কলেজগুলো যাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার সরকারি কলেজগুলো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে।
সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া জেলার কলেজ যাবে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী ও ঝালকাঠি জেলার কলেজগুলো যাবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায়। আর পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলার সরকারি কলেজগুলোর অধিভুক্ত হবে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এ ছাড়া কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী জেলার সব সরকারি কলেজের নিয়ন্ত্রণ থাকবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অধিভুক্ত কলেজগুলো শিক্ষাবষের্র কার্যক্রম, অধিভুক্তি নবায়ন, সিলেবাস নির্ধারণ, কোর্স-কারিকুলাম তৈরি, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল প্রকাশ করবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা পাঁচ কলেজ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন পাঁচটি কলেজকে জাতীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ কলেজ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কলেজগুলো হলো- রাজশাহী কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা কমার্স কলেজ (বেসরকারি) ও সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ। পরীক্ষার ফলসহ ৩১টি সূচকের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ৬৮৫টি কলেজের ২০১৫ সালের তথ্যের ভিত্তিতে এই র্যাঙ্কিং করা হয়। এতে জাতীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ পাঁচটি, সেরা মহিলা কলেজ একটি, সেরা সরকারি কলেজ একটি, সেরা বেসরকারি কলেজ একটি এবং সাতটি আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ১০টি করে কলেজকে সেরা কলেজ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। র্যাঙ্কিং অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে সেরা মহিলা কলেজ হয়েছে ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি কলেজ হিসেবে সেরা হয়েছে রাজশাহী কলেজ, সেরা বেসরকারি কলেজ হয়েছে ঢাকা কমার্স কলেজ।
ঢাকা-ময়মনসিংহ অঞ্চলের সেরা ১০ কলেজ
ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা কমার্স কলেজ, ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ, টাঙ্গাইলের সরকারি সা’দত কলেজ, ঢাকার লালমাটিয়া মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ ও ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজ।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের সেরা ১০ কলেজ
চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ, কুমিল্লা সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ, ফেনী সরকারি কলেজ, চট্টগ্রামের সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রামের সরকারি মহিলা কলেজ, চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, চট্টগ্রামের পটিয়া সরকারি কলেজ, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ এবং চট্টগ্রামের ওমরগণি এম ই এস কলেজ (বেসরকারি)।
রাজশাহী অঞ্চলের সেরা ১০ কলেজ
রাজশাহী কলেজ, বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ, সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ, রাজশাহীর ভবানীগঞ্জ কলেজ, বগুড়ার সৈয়দ আহমদ কলেজ, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ, নওগাঁ সরকারি কলেজ, বগুড়া সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ ও রাজশাহীর নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজ।
খুলনা অঞ্চলের সেরা ১০ কলেজ
যশোরের সরকারি এম এম কলেজ, সাতক্ষীরার কুমিরা মহিলা ডিগ্রি কলেজ, যশোরের সরকারি মহিলা কলেজ, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ, যশোরের উপ-শহর মহিলা ডিগ্রি কলেজ, সাতক্ষীরা সিটি কলেজ, কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজ, বাগেরহাটের সরকারি পি সি কলেজ, সাতক্ষীরার সরকারি শ্যামনগর মহসীন কলেজ ও যশোরের নওয়াপাড়া কলেজ।
বরিশাল অঞ্চলের সেরা ৯ কলেজ
বি এম কলেজ, বরিশালের সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বরিশাল কলেজ, ভোলা সরকারি কলেজ, বরগুনা সরকারি কলেজ, বরিশালের সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ, পিরোজপুরের সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ, ভোলার চরফ্যাশন সরকারি কলেজ ও বরিশালের সরকারি ফজলুল হক কলেজ।
সিলেট অঞ্চলের সেরা ৮ কলেজ
সিলেটের এম সি কলেজ, হবিগঞ্জের বৃন্দাবন সরকারি কলেজ, সিলেটের সরকারি মহিলা কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, সিলেটের মদনমোহন কলেজ, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা কলেজ ও মৌলভীবাজারের সরকারি শ্রীমঙ্গল কলেজ।
রংপুর অঞ্চলের সেরা ১০ কলেজ
রংপুরের কারমাইকেল কলেজ, দিনাজপুর সরকারি কলেজ, লালমনিরহাটের আলিমুদ্দিন কলেজ, রংপুরের সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ, লালমনিরহাটের উত্তরবাংলা কলেজ, নীলফামারী সরকারি কলেজ, দিনাজপুর সরকারি মহিলা কলেজ, লালমনিরহাট সরকারি কলেজ, রংপুর সরকারি কলেজ।