ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ দিনব্যাপী মধুমেলা শুরু
- ক্যাম্পাস ডেস্ক:
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) যৌথ উদ্যোগে রাজধানীর সোবহানবাগে অবস্থিত ড্যাফোডিল টাওয়ারে পাঁচ দিনব্যাপী ‘মধুমেলা ২০১৭’ শুরু হয়েছে। আজ রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে মধুমেলা উদ্বোধন করেন শিল্প মন্ত্রলালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার ও বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ফখরুল ইসলাম মুনশি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, ‘এটি সত্যিই একটি ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ। সাধারণত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এমন আয়োজন করে না। আমি আশা করি এখন থেকে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যলয়ও অনুপ্রাণিত হবে। আর ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় শুধু মধুমেলার আয়োজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থকবে না, তারা মৌচাষ পদ্ধতি, মধু সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণা করবে।
শিল্পসচিব আরও বলেন, কৃষকদের পর্যাপ্ত সহায়তা দিতে পারলে মধু উৎপাদন আরও বাড়বে। এজন্য বিসিকের ঋণ সহয়তা প্রকল্প আরও সহজ করতে হবে। পাশাপাশি এসএমই ফাউন্ডেশনের ঋণদান প্রক্রিয়াও আরও সহজ করতে হবে।
এসময় মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া মধুমেলার প্রচারণা বাড়ানো উচিত বলে অভিমত দেন। তাঁর মতে, শুধু দেশীয় পরিসরেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিসরেও মধুমেলার আয়োজন করা উচিত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিসিকের চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার বলেন, মধু নিয়ে বিসিকের বেশ কিছু পরিকল্পণা রয়েছে। যেমন মধুর নির্ভেজালত্ব নিশ্চিত করা, ব্রান্ডিং ও মার্কেটিংয়ে জোর দেওয়া এবং বিদেশে মধু রপ্তানীর ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এখন বিসিকের প্রধান লক্ষ্য, বিদেশে মধু রপ্তানিকরণ। এজন্য মধু প্রক্রিয়াজাত করণের দিকে বিসিক বেশি নজর দিচ্ছে।
বিসিকের চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিসিক এখন থেকে মধু বিষয়ে একাডেমিক জ্ঞান বিনিময়ের ক্ষেত্রে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তা নেবে।
অনুষ্ঠানে মো. ফখরুল ইসলাম মুনশি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের বাজার ছেয়ে গেছে ভেজাল মধু দিয়ে। সেখানে খাঁটি মধু পাওয়াই দায়। এরকম পরিস্থিতিতে গ্রাহকের দোরগোড়ায় খাঁটি মধু পৌঁছে দেওয়ার জন্য এমন মধুমেলা নিয়মিত হওয়া উচিত। এরকম একটি সময়পোযোগী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিসিক এবং ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ। মধুর গুণাগুণ প্রচার এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে মধু বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে এ ধরনের মধুমেলা বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
সবশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি মো. সবুর খান বলেন, ‘মধুর গুণাগুণ বলে শেষ করা সম্ভব নয়। এটি বৈজ্ঞানিকভাবে যেমন সত্য তেমনি সব ধর্মেও মধুকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সুতরাং মধূর বাজার তৈরি হয়েই আছে। এখানে প্রয়োজন শুধু বিনিয়োগ এবং সঠিক পন্থায় মার্কেটিং।’
এসময় তিনি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তারা যেন মধুর প্যাকেটজাতকরণ পদ্ধতি এবং মার্কেটিং নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে। মেলা চলাকালীন সময়ে এটাই তাদের অ্যাসাইনমেন্ট।
ডিআইইউ চেয়ারম্যান আরও বলেন, এখন থেকে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ক্যান্টিন এবং অফিসে চায়ের সঙ্গে চিনি মেশানো হবে না। দেশীয় মধুকে প্রমোট করতে এটি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি উদ্যোগ।
সবুর খান আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে বিভিন্ন হোটেলে বিদেশে মধু পরিবেশন করা হয়। দেশেই যখন খাঁটি মধু উৎপাদিত হচ্ছে তখন বিদেশি মধু কেন?’ এটা দুঃখজনক উল্লেখ করে এসব হোটেলে দেশীয় মধু সরবরাহের ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে শিল্প মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানান মো. সবুর খান।
সবশেষে মো. সবুর খান বলেন, এখন থেকে প্রতিবছর ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মধুমেলা হবে। বিসিক ইচ্ছা করলে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস আশুলিয়াতেও এ মেলার আয়োজন করা যেতে পারে।
মেলা চলবে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মেলায় প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮ট পর্যন্ত মধু বিক্রি করবেন মৌচাষীরা। মেলায় সারা দেশের ২৫ জন মৌ-চাষী অংশ গ্রহণ করেছেন। উল্লেখ্য, মেলায় অংশ নেয়া মধু বিক্রেতারা প্রত্যেকেই বিসিকের নিকট নিবন্ধিত মৌ-চাষী।