কেরানীগঞ্জে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
বুড়িগঙ্গার ওপারে কেরানীগঞ্জে যাচ্ছে মূল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এজন্য একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্থাপনা নির্মাণ না করে পূর্ণাঙ্গ মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে কেরানীগঞ্জে মূল বিশ্ববিদ্যালয় স্থানান্তর করতে হবে। এজন্য অধিগ্রহণে সহায়তা করতে ওই এলাকার সংসদ সদস্য ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে তিনি এসব নির্দেশ দেন বলে বৈঠকের কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যেই আড়াইশ’ একর জমিও পছন্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এখন ভূমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদনের কার্যক্রম চলছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান সোমবার যুগান্তরকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্থানান্তরের জন্য এরই মধ্যে কেরানীগঞ্জের টেগারিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম দা গ্রামে প্রায় আড়াইশ’ একর জমি পছন্দ করা হয়েছে। এ জায়গাটি ঢাকা-মাওয়া সড়ক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। সেখানে কোনো বাড়িঘর, কবরস্থান বা অন্য কোনো বসতি নেই। কিংবা ধান উৎপাদনেরও উপযোগী নয়। তাই সহজেই অধিগ্রহণ করা যাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ভূমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে। তাছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দেয়ার জন্য দাগ নম্বর, খতিয়ান ও পর্চা আনুষঙ্গিক কাগজপত্র জোগাড় করা হচ্ছে। তিনি জানান, একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় করতে যা যা লাগে, (খেলার মাঠ, ক্যাফেটেরিয়া, অডিটোরিয়াম, জিমনেশিয়াম ইত্যাদি) তার সবই থাকবে সেখানে। এখনকার বিশ্ববিদ্যালয়টি যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় থাকবে। সেখানে নতুন করে আর কিছুই করা যাবে না।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে হল নির্মাণের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২৮৭ কোটি ১৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা ব্যয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন শীর্ষক একটি প্রকল্প ১১ জুলাই প্রস্তাব করা হয় একনেকে। অনুমোদন পেলে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের। প্রকল্পের আওতায় ২০ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ, ১০ তলা ছাত্র হল নির্মাণ, ৩টি যানবাহন ক্রয়, বিদ্যুৎ সংযোগ, লিফট ক্রয়, আসবাবপত্র ক্রয়, ভূমি উন্নয়ন, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়, অফিস যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং বাউন্ডারিওয়াল নির্মাণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু এতে ভেটো দেন একনেকের চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। এক প্রশ্নের জবাবে ওই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানান, ছাত্রীদের জন্য বাংলাবাজারে হল নির্মাণাধীন রয়েছে। ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কেরানীগঞ্জে সাড়ে ৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু মোট ৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা প্রয়োজন। এ পরিপ্রেক্ষিতে কেরানীগঞ্জেই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সমন্বিত পরিকল্পনার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল এর আগে বলেছিলেন, একনেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নের জন্য একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সেটি অনুমোদন না দিয়ে আরও বড় এবং সমন্বিতভাবে প্রকল্প প্রস্তাব দিতে বলেছেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেরানীগঞ্জ ও ঢাকায় বিচ্ছিন্নভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে সমন্বিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির উন্নয়ন করতে হবে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে জমি খুঁজতে হবে। এজন্য যত টাকা লাগে তা দেয়া হবে।