টিউশনির টাকায় দেখি বাংলার মুখ
- শাহজাহান নবীন, কুষ্টিয়া
ছাত্র জীবনে টিউশনি করার অভিজ্ঞতা নেই এমন ছাত্র মেলা ভার। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের অধিকাংশই পার্টটাইম কাজ হিসেবে টিউশনি করে থাকেন। নিজের হাত খরচ বা পড়াশুনার খরচ মেটাতেও অনেকে টিউশনি করেন। টিউশোনির টাকা দিয়ে একেক জন একেক রকম কাজ করেন। তবে পৃথিবীর বিশাল মঞ্চে সবাই যে একই রকম অভিনয় করেন তা কিন্তু নয়। ব্যতিক্রম কিছু চরিত্র তো থাকবেই। তেমনি এক ব্যাতিক্রমী তরুণ আখতার হোসেন। টিউশনির টাকা দিয়ে ঘুরে ঘুরে বাংলার মুখ দেখার গল্প শোনালেন আখতার। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র।
‘সিগারেট খাওয়া বা এ ধরণের খারাপ কোনো অভ্যাস নেই। মেয়ে বন্ধুও নেই। টিউশনি করি শুধু প্রিয় দেশটা ঘুরে দেখার জন্য। পড়াশোনার জন্য বাবা মা যে টাকা দেন তাতে ভালো ভাবেই আমার চলে যায়। টিউশনি করার কোনো প্রয়োজন পড়ে না। তবুও টিউশনি করি এবং টাকা জমাই।’ এসব কথা বলছিলেন আখতার।
একে একে দক্ষিণ এশিয়া, তারপর পুরো এশিয়া-এভাবে পৃথিবীর সবগুলো দেশ ঘুরে দেখার স্বপ্ন আমার
আখতার আরো জানান, ‘আমার একটা টার্গেট থাকে যে, এই পরিমাণ টাকা জমানোর পর সেটা দিয়ে দেশের অমুক অঞ্চল ঘুরতে যাবো। আর এভাবেই দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় আমি ঘুরেছি। দেশের দর্শনীয় স্থান কোনটিই আমার দেখার বাকি নেই। আর যেখানেই ঘুরতে যাই সেখানকার ছবি সংগ্রহ করে ফেসবুকে প্রচার করি। যেন আমার বন্ধুরা দুরে থেকে হলেও আমার সাথে আনন্দের ভাগ নিতে পারে।’
‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা থাকার কারণে সব সময় বের হতে পারি না। তবে দু-একদিন ছুটি পেলেই বেরিয়ে পড়ি দেশকে জানার নেশায়, প্রিয় মাতৃভূমির রূপ দেখার নেশায়। টিউশোনির টাকা দিয়ে নিজের এই ছোট স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে ভাল লাগে। দেশের প্রকৃতি, প্রকৃত সৌন্দর্য্য সকলের দেখা উচিত এবং তা প্রচার করা উচিত। এতে পর্যটন শিল্প সমৃদ্ধ হবে। দেশ এগিয়ে যাবে।’ বলছিলেন আখতার।
নিজের ভবিষ্যত স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে একটু সময় ধরে ভেবে নিয়ে মেহেরপুরের ছেলে আখতার বলেন-‘পড়াশুনার পাশাপাশি পুরো দেশটা ঘুরে দেখার স্বপ্ন ছিল যা পূরণ হয়েছে। পেশাগত জীবনে গিয়ে আমার একটাই স্বপ্ন একে একে দক্ষিণ এশিয়া, তারপর পুরো এশিয়া-এভাবে পৃথিবীর সবগুলো দেশ ঘুরে দেখার স্বপ্ন আমার।’