ছবিকন্যা নিশাত
- মো. আসাদুজ্জামান
ছবি তোলার শখ তার ছোট্ট বেলা থেকেই। একদিন শিক্ষাসফরে গিয়ে একটি খালি বেঞ্চের ছবি তুললেন নিশাত নুজহাত শারাফ। একবারে মানুষজন বিহীন খালি বেঞ্চের ছবি! ওই ছবি তোলার কারণ জানতে চাইলেন পাশের এক বড় ভাই। স্মিত হেসে নিশাতের সোজা উত্তর, ‘এক ফটোগ্রাফার এরকম একটা ছবি তুলেই জনপ্রিয় হয়েছিলেন। তাই আমিও তুললাম।’ তখন সে বড় ভাইয়ের ধারণা করতে বাকি থাকল না যে, নিশাতও একদিন বড় ফটোগ্রাফার হবে।
ঠিক তার যথার্থই প্রমাণ দিয়েছেন নিশাত। অর্জন করেছেন বাংলাদেশ ট্যুরিজ্যম বোর্ডের প্রথম নারী ট্রাভেলার্স ফটোগ্রাফি কম্পিটিশনে প্রথম স্থান। তাও আবার সবচেয়ে কমবয়সী হিসেবে। যেখানে ২৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী মেয়েরা ছিল। প্রতিযোগিতার শুরুর গল্পটা ছিল অনেকটা অবাক করার মতো। একদিন নিশাতের ফেসবুক ব্রাউজ করতে করতে হঠাৎ চোখ আটকে গেল একটা বিজ্ঞপ্তি দেখে। তার সেখানেই খোঁজ মিলল ‘ফটোগ্রাফি কম্পিটিশনের’। বাংলাদেশকে বিশ্ববাসীর নিকট পরিচিত করে তুলতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, ‘ভিজিট বাংলাদেশ ২০১৬’ প্রকল্পটি হাতে নেয়। এর সাথে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল ট্রিপজিপ ডট টুরস (tripzip.tours) নামক একটি সামাজিক সংস্থা।
এ বিষয়ে নিশাত বলেন, ‘প্রতিযোগিতাটি শুরু হয়েছিল ৭ মার্চ থেকেই। শেষ দিন ছিল মার্চের ১৫ তারিখ। ১২ তারিখ সকালে ছবি জমা দিয়েছিলাম।’
এই প্রতিযোগিতায় ছবি জমা পড়েছিল ৫০০টি। জানতে পারেন মাত্র প্রথম ১০ জনকে সনদ প্রদান করা হবে। পড়লেন চিন্তায়। আবার পেলেন ভয়ও। সার্টিফিকেটও পাবেন কিনা এমন চিন্তাও তাড়া করে বেড়াল তাকে। কিন্তু ১৬ তারিখে রাতেই মোবাইলের একটি ফোনে আপাতত জানতে পারেন ২০ প্রতিযোগীর মধ্যে স্থান হয়েছে তার। পুরস্কার বিতরণের দিন একটু অবাকও হলেন। ফল প্রকাশের কিছুক্ষণ আগে তাদের সেরা ১০ জনকে আলাদা করে বসানো হলো। একসময় ১ম বিজয়ী হিসেবেই ‘নিশাত নুজহাত’ নামটি ঘোষণা আসে উপস্থাপকের কাছ থেকে।
নিশাত বলেন, ‘আমি পুররস্কার পেয়ে অনুপ্রাণিত ও গর্ববোধ করছি। পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর নাম ঘোষণাই আমার কাছে গর্বের বিষয় মনে হয়েছে।’ পরে সার্টিফিকেট নিয়েছেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের হাত থেকে।
নিশাত বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে অধ্যায়নরত। এর সাথে কাজ করছেন জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সদস্য হিসেবে। দ্বায়িত্ব পালন করছেন জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ক্যারিয়ার ক্লাবের ফটোগ্রাফার ফ্যাসিলেটর হিসেবে।