বাংলাদেশের বিশ্বজয়
- নিজস্ব প্রতিবেদক
বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ কোনো অ্যানিমেশন ফিল্ম চ্যাম্পিয়ন শিরোপা অর্জনে করেছে। আর এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের নাম আরেকবার উজ্বল হলো বাংলাদেশি দুই শিক্ষার্থীর কারণে। তাদের একজন হাসান যোবায়ের ও অপরজন মাহির মোহাইমেন। হাসান জোবায়ের সম্প্রতি স্পেনে অনুষ্ঠিত We Art Water Film Festival ২০১৫-২০১৬ প্রতিযোগিতায় অ্যানিমেশন শর্ট ফিল্মে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। গত ৫ জুন রোকা গ্যালারিতে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয় এ প্রতিযোগিতার। বিশ্বের সেরা ৩০ টি অ্যানিমেশন শর্ট ফিল্মের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ভোট পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ‘Happy World’ শীর্ষক অ্যানিমেশন ফিল্মটি। হাসান যোবায়েরের নেতৃত্বে এটি তৈরি করেছে বাপ্পী রহমান, হায়াত মাহমুদ রাহাত ও হোসেন তারেক। এরা সবাই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাল্টিমিডিয়া ও ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী।
অপরদিকে ফ্রান্সের প্যারিসে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটিজ (IAU) আয়োজিত বিশ্বব্যাপি জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান সাংস্কৃতিক ও উচ্চতর শিক্ষা বিষয়ক সংগঠন ইন্টারন্যাশনালাইজেশন স্ট্রেটেজিস এডভাইজারী সার্ভিসেস (ISAS) এর আহ্বানকৃত লগো ডিজাইন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাল্টিমিডিয়া ও ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মাহির মোহাইমেন।
দেশের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এ দুর্লভ সম্মান বয়ে আনার স্বীকৃতি স্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আজ ১৩ জুন ২০১৬ বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে এক সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান। উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ এম. ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. এস এম মাহাবুব-উল হক মজুমদার, প্রক্টর প্রফেসর ড. গোলাম মওলা চৌধুরী, মাল্টিমিডিয়া ও ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের এডজাংক্ট ফ্যাকাল্টি, দেশবরেণ্য কার্টূনিস্ট ও কার্টুন ম্যাগাজিন ‘উন্মাদ’এর সম্পাদক আহসান হাবিব, বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. কবিরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. সবুর খান বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির অন্যতম অপার সম্ভাবনাময় খাত হচ্ছে অ্যানিমেশন। টেকনোলজির এই যুগে নিজের দক্ষতাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের এই অর্জনকে সাধুবাদ জানান এবং এ সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আগামীতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহনের আহ্বান জানান। ভবিষ্যতে অ্যানিমেশন শিল্পের প্রসারে ও অ্যানিমেটেড মুভি তৈরিতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করতে বিভাগীয় শিক্ষকদের আরো বেশী অগ্রণী ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান। উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ এম. ইসলাম শিক্ষার্থীদের এই অর্জনের জন্য অভিনন্দন জানান এবং এই ধরনের অর্জন অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংবর্ধনা শেষে দলনেতা হাসান যোবায়েরের তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘বাংলাদেশ থেকে অ্যানিমেশন নিয়ে কেউ বিজয়ী হবে এটা এই ফেষ্টিভালের কমিটিও চিন্তা করেনি। আমার সঙ্গে যখন যোগাযোগ করা হয় তখন তাদের কথাতেই সেটা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। শুধু এটুকু বলতে পারি বাংলাদেশ সবকিছুই করতে পারে শুধু উপযুক্ত পরিবেশ, সময় ও সুযোগের অপেক্ষায়। বাংলাদেশেও কম্পিউটার অ্যানিমেশন নিয়ে শর্টফিল্ম করা সম্ভব সেটা আমরা করে দেখিয়েছি।’ হাসান যোবায়ের আরো বলেন, যদিও এখনও অনেক দূর যেতে হবে তবে সবার সহযোগিতা পেলে ইনশাল্লাহ বাংলাদেশেও কম্পিউটার অ্যানিমেশন হতে পারে অন্যতম প্রধান ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রি।