কৃষির জন্য ড্রোন
- ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
এবার কৃষি-গবেষণায় কৃষিবিদদের সহযোগিতা করবে ড্রোন! অবাক হওয়ার কিছু নেই। এমনই এক কার্যকরী ড্রোন তৈরি করেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একদল শিক্ষার্থী। তারা হলেন হাসিব মাহমুদ, ফারহান, তানভীর, মুনজেরিন মুক্তা এবং ওসমান গণি নাহিদ। তাদের ড্রোনের নাম ‘দুর্বার’।
এ বছরের জানুয়ারির কথা।ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব মাহমুদের মাথায় প্রথম এই ড্রোন বানানোর ধারনা আসে। তিনি প্রথমে এর নাম দেন ‘এগ্রো স্কাইল্যাব’। পরে সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগের ফারহান, তানভীর, মুনজেরিন মুক্তা এবং ওসমান গণি নাহিদ যোগ দেন হাসিব মাহমুদের প্রকল্পের সঙ্গে।
তরুণ শিক্ষার্থীদের এই ড্রোন আইডিয়া গত মাসে ‘মেক অ্যা থন-২০১৬’ শীর্ষক প্রতিযোগিতায় বিশেষ স্বীকৃতি লাভ করেছে। প্রতিযোগিতাটির আয়োজক বাংলাদেশ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগ, বিশ্ব ব্যাংক এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেটার স্টোরিজ লিমিটেড।
উদ্ভাবক শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের প্রকল্পটি কাজ করে তিনটি মাধ্যমে এবং তিনটি ধাপে। মাধ্যম তিনটি হচ্ছে ড্রোন, ওয়েবপেজ এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। প্রথম ধাপে মাঠ থেকে ডাটা সংগ্রহ করবে ড্রোন। দ্বিতীয় ধাপে সংগৃহীত ডাটা পরীক্ষাগারে প্রক্রিয়াজাত করা হবে এবং তৃতীয় ধাপে প্রক্রিয়াজাত ডাটা আপলোড করা হবে ওয়েবপেজে এবং মোবাইল ফোনের অ্যাপ্লিকেশনে।
ড্রোনের কাজ আরেকটু বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেন হাসিব-‘ড্রোনের সঙ্গে রয়েছে একটি ক্যামেরা। এই ক্যামেরা দিয়ে ফসলের ছবি তুলবে ড্রোন। তারপর সেই ছবি পাঠিয়ে দেবে কৃষিবিদদের কাছে। তারা ফসলের রং, ধরন ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে ফসলের সমস্যা নির্ধারণ করবেন। এছাড়া এই ড্রোনের মাধ্যমে খুঁজে বের করা সম্ভব কোথায় কোথায় বেআইনিভাবে মারিজুয়ানা, আফিম এবং গাজার চাষ হচ্ছে।’
হাসিবের সাথে যোগ করেন মুনজেরিন মুক্তা-‘ড্রোনের সঙ্গে একটি রোবটিক হাত লাগানো রয়েছে যার মাধ্যমে ১২০০ গ্রাম থেকে ১৫০০ গ্রাম ফসলের নমুনা সংগ্রহ করা যাবে। পরে এই সংগৃহীত নমুনা গবেষণাগারে পরীক্ষা করতে পারবেন কৃষি-গবেষকরা।’
ড্রোন সম্পর্কে মেক অ্য থোন প্রকল্পের প্রকল্প ব্যাবস্থাপক ইরাদ কাওসার বলেন, ‘ড্রোনের কার্যক্ষমতা এখনো পরীক্ষাধীন অবস্থায় রয়েছে। শিক্ষার্থীরা কেবল তাত্ত্বিকভাবে ধারনাটি উপস্থাপন করেছে। এটির বাস্তবিক প্রযোগ নিয়ে এখনো কাজ করছে তারা।’
‘আইসিটি বিভাগের সঙ্গে বেটার স্টোরিজ যৌথভাবে এই প্রকল্পে ১ লাখ টাকা অনুদান দিচ্ছে। পাশাপাশি ড্রোনটিকে সফলভাবে বাজারে আনার জন্য যাবতীয় সহযোগিতা প্রদান করছে বেটার স্টোরিজ।’ জানান কাওসার।
ড্রোন প্রকল্পের পরামর্শক এবং সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এম খালেদ সোহেল বলেন, ‘কৃষি উন্নয়নে ড্রোনটি অনেক সহায়ক হবে। এর মাধ্যমে ফসলী জমির উর্বরা শক্তি সনাক্ত করা যাবে এবং ক্ষতিকর ফসল সনাক্ত করা যাবে।’