বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশি তিন তরুণ
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
স্পেনে অনুষ্ঠিত We Art Water Film Festival ২০১৫-১৬ প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ কোনো অ্যানিমেশন শর্ট ফিল্ম চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বিশ্বের সেরা ৩০টি অ্যানিমেশন শর্ট ফিল্মের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশের অ্যানিমেশন হ্যাপি ওয়ার্ল্ড। চ্যাম্পিয়ন এই বাংলাদেশ দলের টিমলিডার ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাল্টিমিডিয়া ও ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বিভাগের ছাত্র হাসান যোবায়ের। তাছাড়া দলের অন্য সদস্যরা হলেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বাপ্পী রহমান, হায়াত মাহমুদ রাহাত ও হোসেন তারেক। এ ব্যাপারে টিমলিডার হাসান যোবায়েরের কাছে জানতে চাইলে বলেন, বাংলাদেশ থেকে অ্যানিমেশন নিয়ে কেউ বিজয়ী হবে, এটা এই ফেস্টিভ্যালের কমিটিও চিন্তা করেনি। আমার সঙ্গে যখন যোগাযোগ করা হয়, তখন তাদের কথাতেই সেটা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। শুধু এটুকু বলতে পারি_ বাংলাদেশ সবকিছুই করতে পারে, শুধু সুযোগের অপেক্ষায়। বাংলাদেশেও কম্পিউটার অ্যানিমেশন নিয়ে শর্ট ফিল্ম করা সম্ভব সেটা আমরা করে দেখিয়েছি।
পেছনের গল্প জানাতে গিয়ে যোবারের বলেন, ‘উই আর ওয়াটার ফাউন্ডেশন’ পানি সংকট নিয়ে কাজ করে, মানুষের সচেতনতা বাড়াতে আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবেরও আয়োজন করে। ব্যাপারটি নিয়ে বন্ধু মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করি। এভাবেই গড়ে চার সদস্যের দল। সবার আগে গল্প নির্বাচন করি। গল্পের শুরুতে দেখা যায়, আফ্রিকার একটি মরুময় এলাকায় পানির খোঁজে বেরিয়ে পড়ে একটি কিশোর, বয়স বড়জোর সাত-আট বছর। মাথায় বিরাট একটি পানির পাত্র। প্রচণ্ড গরমে হাঁটতে হাঁটতে একসময় ক্লান্ত হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এর পরের অংশে ঢাকার একটি বস্তির ছেলে বই-খাতা হাতে নিয়ে পানির দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে গেল।
সারাদিন অপেক্ষা করেও পানি নিতে পারল না। ততক্ষণে ক্লাসের সময় পেরিয়ে গেছে। তৃতীয় অংশে, কম্পিউটারে কাজ করছেন একজন লোক। তার বাসার বেসিনে ট্যাপ থেকে অঝোরে পানি ঝরছে। সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই তার। হঠাৎ মনিটরে ভেসে উঠল পানির জন্য দুই কিশোরের সংগ্রামের কাহিনী। তিনি সতর্ক হলেন এবং সিদ্ধান্ত নিলেন, পানির সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগ নেবেন। তহবিল গড়ে তোলার কাজ শুরু করলেন তিনি। সেই টাকায় আফ্রিকা ও বাংলাদেশে টিউবওয়েল বসানো হলো। ফলে বাংলাদেশের সেই ছেলেটি টিউবওয়েল থেকে খুব দ্রুত পানি নিয়ে বাসায় পৌঁছে দিল। হাসিমুখে স্কুলে গেল। তিন মিনিটের এই শর্ট ফিল্ম তারা থ্রিডি সফটওয়্যারে তৈরি করেছেন। প্রি-প্রোডাকশনের কাজ করেছেন মাহমুদুর; চিত্রনাট্য ও নির্দেশনা দিয়েছেন জুবায়ের। সাউন্ড সিস্টেম করেছেন হায়াত এবং বিভিন্ন চরিত্রের ডিজাইনসহ খুঁটিনাটি কাজ করেছেন তারেক। টানা তিনটি মাসের পরিশ্রমে তৈরি হলো ‘হ্যাপি ওয়ার্ল্ড’।