রোবট বানানোই জিমির নেশা
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
অন্ধ কেউ রাস্তায় হাঁটতে পারবে যন্ত্রের মাধ্যমে, রোবট ধরবে মাছ, একটি রোবট পুরো বাড়িময় চলাফেরা করবে এবং নিরাপত্তার পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহ করবে কিংবা রোবট কলকারখানায় শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করবে, এমন সব প্রযুক্তি উন্নত বিশ্বে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহূত হলেও বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ চোখেই দেখেনি। তবে এমনও অনেকে আছে যারা এসব রোবট বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত যন্ত্র নিজের মত করে ডিজাইন করছে আমাদের দেশেই।
বলছিলাম জিমি মজুমদারের কথা। সদ্য একুশে পা রাখা এই তরুণ, যে কিনা স্কুল কলেজের সময়গুলো গ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশে কাটিয়েছে, তিনিই এখন মেসে থেকে এসব বড় বড় প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন। বাগেরহাটের মংলা থানার, সুন্দরবন ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া গ্রামের ছেলে জিমির জন্ম হয় এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা ছিলেন সদ্য প্রয়াত হাইস্কুলের শিক্ষক এবং মা গৃহিনী। দুই ভাইয়ের মধ্যে জিমি সবার বড়।
স্কুল এবং কলেজের পুরো সময় গ্রামে কেটেছে, বাবা-মায়ের সাথে জিমির নিজেরও ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হবার। দুর্ভাগ্যবশত মেডিক্যালে যাওয়া হয়নি, জিমি অনেক ভেবে-চিন্তে যন্ত্র নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভর্তি হয় ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ। বর্তমানে সে এখানে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।
ব্লাইন্ড আইড রোবট: অন্ধ ব্যক্তির চলাচলের জন্য ডিজাইন করা এই যন্ত্র। এটি ডিজাইন করা হয়েছে হাতের লাঠি হিসেবে, লাঠির সম্মুখ পাশে থাকবে আল্ট্রাসনিক মোশন সেন্সর, লাঠির সাথে সংযুক্ত একটি হেডফোন অন্ধ ব্যক্তির কানে লাগানো থাকবে। সামনে কোন বাঁধা পড়লেই সেন্সরে তা বোঝা যাবে এবং অন্ধ ব্যক্তির কানে সতর্কতামূলক আওয়াজ বাজবে, বাঁধার দূরত্ব অনুযায়ী আওয়াজ দ্রুত বা ধীরে বাজবে।
রোবটিক্স আর্ম: শিল্পকারখানাগুলোতে মালপত্র বহনের জন্য মানুষ প্রয়োজন, তবে মানুষের বদলে এই কাজ করতে পারে রোবট। হাতের মত করে ডিজাইনকৃত এই রোবটের সাথে যুক্ত যন্ত্রের মাধ্যমে নির্দেশনা দিয়ে মালামাল স্থানান্তর করা যাবে। এমনকি এটির জন্য এন্ড্রুয়েড অ্যাপস তৈরি করে স্মার্টফোন দিয়েও নির্দেশ দেয়া সম্ভব হবে।
কম্পিউটারভিশন সিস্টেম: এটি একটি রোবট যা চাকার সাহায্যে চলাফেরা করবে, এর সম্মুখভাবে থাকবে ক্যামেরা এবং সেন্সর। বাসা বা অফিস অনুযায়ী এটিকে ম্যাপিং করে দেয়া হবে এবং এটি সেই ম্যাপ অনুযায়ী চলাচল করতে থাকবে। ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও ও সেন্সরের মাধ্যমে অন্যান্য তথ্যাদি মেমরিতে জমা হবে এবং এর ডিসপ্লেতে তা শো করবে। বাসা বা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার পাশাপাশি এটি সামরিক খাতেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ফিশ হান্টার: জিমির সবচেয়ে বড় এবং মৌলিক প্রোজেক্ট হল ফিশ হান্টার। বড়শির মাথায় রোবট সংযুক্ত থাকবে, যখনই কোনো মাছ আসবে তখনই স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাছকে ধরা হবে। আমাদের দেশীয় প্রোপটে এই যন্ত্রটি অনেক বড় একটি পরিবর্তন আনতে পারে। জেলেদের কষ্ট কমিয়ে উত্পাদন বাড়ানো সম্ভব এর মাধ্যমে।