দেশের জন্য গবেষক হতে চান সাদিয়া
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
লেখাপড়ায় মন ছিল তাঁর ছোটবেলা থেকেই। সে জন্য বরাবরই ভালো করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় বিবিএ কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো গতানুগতিক বিষয়ে নয়, অন্য রকম কোনো বিভাগে পড়তে মন চাইল। সে জন্যই ভর্তি হলেন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টে। সাদিয়া তাসফিনা ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির (আইইউবি) স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সে পড়েছেন।
সাদিয়ার ভিতটি তৈরি হয়েছিল হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজে। সেখানে তাঁদের দিনের পড়া দিনেই শেষ করতে হতো। সেই অভ্যাসটি কাজে লাগল বিশ্ববিদ্যালয়জীবনেও। ক্লাস লেকচারগুলো বাসায় এসে পড়ে ফেলেছেন। পরীক্ষার আগে নিয়মিত নোট করেছেন। এভাবেই চার বছরের প্রতিটি কোর্সেই তিনি জিপিএ ৪-এর মধ্যে ৪ পেয়েছেন। ১২ ফেব্রুয়ারি হয়ে গেল ১৮তম সমাবর্তন। তাতে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক পেয়েছেন সাদিয়া তাসফিনা। কিভাবে এত দারুণ ফল হলো? এই প্রশ্নের জবাবে সাদিয়া প্রথমে হেসে দিলেন। পরে বললেন, ‘নিয়মিত পড়েছি, শিক্ষকরাও উৎসাহ জুগিয়েছেন আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার পরিবেশটাও দারুণ। মা-বাবাও আমাকে পড়তে উৎসাহ জুগিয়েছেন সব সময়। ’
কোন বিষয়টি পড়তে সবচেয়ে কষ্ট হয়েছে—জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘সব সময়ই বায়োলজি বা জীববিদ্যা এড়িয়ে চলেছি। কেন জানি এটি ভালো লাগত না। পরিবেশবিজ্ঞান পড়তে গিয়ে এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি কোর্স পড়তে হয়েছে। তবে শিক্ষকরা সহযোগিতা করেছেন বলে বিষয়টি খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি। অনেক সময় ক্লাসের বাইরেও তাঁরা আমাকে পড়া বুঝিয়ে দিয়েছেন। ’ এত ভালো ফল করা এই ছাত্রীর দুঃখ কেবল একটিই—লেখাপড়ায় সময় দিতে গিয়ে স্কুল-কলেজজীবনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে তেমনভাবে সময় দেওয়া হয়ে ওঠেনি। তখন যে মেয়েটি বিতর্ক করত, গান গাইত, সেই মেয়েটি বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে শুধু পড়ালেখার পেছনেই সময় দিয়েছে।
তবে এই জীবনেও অনেক কাজ এরই মধ্যে করে ফেলেছেন সাদিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি গবেষণাকেন্দ্রে তিনি গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তাঁর সময়ে হওয়া সব বিজ্ঞান সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। সেগুলোর রিপোর্ট নিজের হাতেই তৈরি করেছেন তিনি। এখন তিনি পাবলিক হেলথে মাস্টার্স করছেন। পাশাপাশি বিদেশে পিএইচডির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে ফিরে আসবেন তিনি। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য পরিবেশ নিয়ে গবেষণা করবেন।