মিস্টার অলরাউন্ডার
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
জন্মস্থান আর বেড়ে ওঠা দুটোই মুন্সীগঞ্জে। বাবা সরকারি চাকরিজীবী, মা গৃহিণী। তিন ভাইয়ের মাঝে সবার বড় মো. রায়হান সরকার। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার যে কোনো প্রয়োজনে মা-বাবার ছিল অকুণ্ঠ সমর্থন। পড়ালেখা আর খেলাধুলা চালিয়েছেন সমানতালে। এমনকি পরীক্ষার মাঝেও খেলাধুলা করেছেন। ফুটবল ও ক্রিকেটের পাশাপাশি বর্ষাকালে বন্ধুদের সঙ্গে মাছ ধরা তার প্রিয় শখ। আর এতেই কিছুটা অন্তর্মুখী স্বভাবের হলেও অনেকের সঙ্গেই হয়েছিল দারুণ বন্ধুত্ব।
পড়াশোনার দিকটাও ঠিক রেখেছেন সবসময় নিজ দায়িত্বেই। অষ্টম শ্রেণিতে পেয়েছেন ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি। পরবর্তী সময়ে মুন্সীগঞ্জের এমএ আজহার হাইস্কুল থেকে ২০০৮ সালে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছেন। তিনি ছিলেন তার স্কুলের প্রথম সব বিষয়ে এ প্লাস পাওয়া ছাত্র। সরকারি বৃত্তিও পেয়েছেন। পরবর্তীকালে ঢাকা কলেজ থেকে ২০১০ সালে জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসি শেষ করেন। প্রথম বছর পছন্দের বিষয় না হওয়ায় ২০১২ সালে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির ফুটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। নিজের সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে কিছু একটা করার ইচ্ছা থেকেই এ বিষয়ে ভর্তি হওয়া।
প্রথম বর্ষের ফলাফলে বিভাগে প্রথম হয়ে যাওয়ায় এটাকে ধরে রাখার একটা তাগিদ অনুভব হয়। ফলে স্নাতকে ৩.৭৯ সিজিপিএ নিয়ে বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। এর কারণ হিসেবে রায়হান বলেন, ‘ক্লাসের পড়া যেদিনের পড়া সেদিন শেষ করে ফেলাই এরকম ফলের পেছনে ভূমিকা রেখেছে’। তবে কেবল পড়াশোনা নয়, খেলোয়াড় হিসেবেও একটা পরিচিতি থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নাম ছিল ‘মিস্টার অলরাউন্ডার।’
পাশাপাশি যুক্ত থেকেছেন স্বেচ্ছায় রক্তদান প্রতিষ্ঠান বাঁধনের সঙ্গে। এ ছাড়া ইয়ুথ এগেইনস্ট হাঙ্গারের সঙ্গেও কাজ করেছেন। সামনে স্নাতকোত্তরও শেষ করবেন। রায়হান বলেন, ‘বর্তমানে লেদার শিল্পে কাজের জন্য অনেক দেশীয় প্রতিষ্ঠানই রয়েছে, যারা আবার রফতানিও করছে। এই বিভাগ থেকে পাস করে চাকরি করা যায়। তাছাড়া যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোয় ফুটওয়্যার ও লেদার সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়েই পিএইচডি করার সুযোগ রয়েছে।’ ভবিষ্যতে পিএইচডি শেষে সুযোগ হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন রায়হান।