সেরা বাংলাবিদ নুসরাত সায়েম
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
অন্যসব প্রতিযোগিতা থেকে একটু ব্যতিক্রম। গান, কিংবা নাচ নয়, বুদ্ধিমত্তা ও মননশীলতার প্রতিযোগিতা। আর সেটা হচ্ছে নিজ ভাষা ও শব্দ নিয়ে খেলা। সেই সঙ্গে বাংলা ব্যাকরণ প্রয়োগেরও পরীক্ষা। প্রতিযোগীদের মধ্যে ছিল টান টান উত্তেজনা। বিচারকদের সামনে তারা একে একে বাংলা ভাষার শুদ্ধ উচ্চারণ, বানান ও ব্যাকরণ প্রয়োগ দেখিয়েছে। মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিয়েছে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে।
‘বাংলায় জাগো ভরপুর’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ইস্পাহানি মির্জাপুর ও চ্যানেল আইর যৌথ উদ্যোগে বাংলাভাষা বিষয়ক মেধাভিত্তিক টিভি রিয়েলিটি শোয়ের আয়োজন করা হয়। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেইমে ছিল প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব।
প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ ৪০ নম্বর পেয়ে ইস্পাহানি মির্জাপুর সেরা বাংলাবিদ খেতাব অর্জন করেছে ঢাকার প্রতিযোগী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী নুসরাত সায়েম। পুরস্কার হিসেবে তাকে দেওয়া হয় ১০ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান এমএম ইস্পাহানি লিমিটেডের উপদেষ্টা জাহিদা ইস্পাহানি, ইস্পাহানি ফুড লিমিটেডের পরিচালক আলী ইস্পাহানি। প্রতিযোগিতার প্রধান দুই বিচারক অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা ছাড়াও অতিথি বিচারক ছিলেন শাইখ সিরাজ। প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ হয়েছে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিরাজুল আরিফিন। তাকে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়েছে তিন লাখ টাকার মেধাবৃত্তি। দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে যুগ্মভাবে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী রাইসা সালসাবিল ও সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষার্থী সোয়েব আনিয়াদ খান তূর্য। এই দুইজনের হাতে তুলে দেওয়া হয় দুই লাখ টাকার মেধাবৃত্তি। সেরা ১০ প্রতিযোগীর হাতে তুলে দেওয়া হয় ল্যাপটপ, বই ও বই রাখার তাক।
অনুষ্ঠান প্রাণবন্ত করে তুলতে ছিল নানা আয়োজন। ছিল বাংলা ভাষা ও শব্দ নিয়ে নানা রকম খেলা। প্রখ্যাত দুই শিল্পী পরিবেশন করেন গান। ছিল মূকাভিনেতা রাজের অভিনয় পর্ব। ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’ গান পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন। পরে এই গানের মধ্য থেকে ছয়টি প্রশ্ন করা হয় ছয় প্রতিযোগীকে। ‘আগুনের পরশমণি’ গান পরিবেশন করেন প্রখ্যাত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। কাজী নজরুল ইসলামের ‘চল চল চল’ কবিতার আবৃত্তি করেন বাকশিল্পী মাহিদুল ইসলাম। এ সময় কবিতার দৃশ্যরূপ তুলে ধরে কোরিওগ্রাফি পরিবেশন করে চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে তুষার ও তার দল। এর আগে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় প্রতিযোগিতার থিম সং ‘বাংলা আমার এক ঠিকানা’ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে।
অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতাটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ দেখানো হয়। জানানো হয় সারাদেশ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী এ প্রতিযোগিতার অংশ নেওয়ার জন্য নাম লেখায়। পরে সেখান থেকে প্রতিযোগিতার বিভিম্ন ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেয় ছয় প্রতিযোগী। ১৫ স্টুডিও পর্ব শেষে চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতার অন্য দুই ফাইনালিস্ট হলো-খুলনা জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী সমর্পণ বিশ্বাস ও সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতীক পনতীর্থ।
চূড়ান্ত পর্ব উপস্থাপনা করেন খায়রুল বাশার। প্রতিযোগিতার মিডিয়া পার্টনার ছিল-সমকাল। জ্ঞান ও তথ্য সহযোগিতা দিয়েছে বাংলা একাডেমি। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে চ্যানেল আই।