ড্রোনবয় মুনের গল্প
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
যশোরের তরুণ বিজ্ঞানী মুনের ছোটবেলা থেকেই ছিল বিজ্ঞান নিয়ে নানা কৌতূহল। এ নিয়ে নানা খোঁজখবর আর ভাবনা চিন্তা ছিল তার তখন অন্যতম কাজ। তরুণ বিজ্ঞানী মুনের একটাই চিন্তা তার মাথায় চেপে বসে কিছু একটা উদ্ভাবন করতে হবে। যা দেশের সীমা ছাড়িয়ে পৃথিবীর মানবকল্যাণে সৃষ্টি করবে নতুন মাত্রা। সেই চেষ্টায় নিরন্তর ছুটে চলছে নাঈম হাসান মুন।
নানা বাধাবিপত্তিতেও একটু দমেনি তার প্রবল ইচ্ছাশক্তি। শুধু উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোনই নয়। যশোরের তরুণ বিজ্ঞানী মুনের নতুন আবিষ্কার ‘দ্য মাল্টিটাস্কিং রোবট’ এবং ‘স্মার্ট ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেম’ও চমক সৃষ্টি করেছে। সরকারের ডিজিটাল উদ্ভ্ভাবনী মেলায় মুনের এই আবিষ্কার উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পাশাপাশি খুলনা বিভাগেও বিজয়ী হয়েছে।
ছোটবেলা থেকেই মেধাবী এই শিক্ষার্থীর বিজ্ঞান নিয়ে ঘাটাঘাটি, ভাবাভাবি। হাতের কাছে খেলনাপাতি যা কিছু পেত তা নিয়েই সে ভাবত। এ যেন ছোট্ট একটি শিশুর গবেষণা! অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনার ফাঁকে এই ছেলেটিই আবিষ্কার করে বসে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন। আর এই ড্রোনই এনে দেয় মেধাবী মুনের ব্যাপক পরিচিতি। যশোরের অনেকেই তাকে জানে ‘ড্রোনবয়’ হিসেবে। যশোর উপশহর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক রাজেক জাহাঙ্গীর ও হাসনা জাহাঙ্গীরের একমাত্র পুত্র নাঈম হাসান মুন। বর্তমানে সে যশোর শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। মেধাবী এই ছাত্র পিইসি এবং জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।
নাঈম হাসান মুন ২০১৫ সালে সরকারের আইসিটি ডিভিশনের আয়োজনে হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় খুলনা বিভাগে (কুয়েটে অনুষ্ঠিত) প্রথম স্থান অধিকার এবং একই প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্যায়ে (বুয়েটে অনুষ্ঠিত) তৃতীয় স্থান অধিকার করে। এ প্রতিযোগিতায় সারাদেশ থেকে ৯ হাজার প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিল। একই বছর যশোর শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠিত প্রথম বিজ্ঞান মেলায় নিজের আবিষ্কৃত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ‘ড্রোন’ প্রদর্শনের মাধ্যমে ৪শ প্রোজেক্টের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে নাঈম হাসান মুন।
২০১৬ সালে যশোর কালেক্টরেট চত্তরে অনুষ্ঠিত সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই বিভাগের আয়োজনে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় এই ড্রোনটি প্রদর্শনের মাধ্যমে সে শ্রেষ্ঠ তরুণ উদ্ভ্ভাবক হওয়ার গৌরব অর্জন করে। একই বছর যশোর জিলা স্কুলে অনুষ্ঠিত জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় এই ড্রোন প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রথম স্থান অধিকার করে নাঈম হাসান মুন। এ বছরেই সে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ২০১৬ সালে মেধাবী ছাত্র নাঈম হাসান মুন আবিষ্কার করে ‘সাইবার স্পাই মেশিন’।
২০১৭ সালেও যশোর টাউন হল ময়দানে সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই বিভাগের আয়োজনে তিনদিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভ্ভাবনী মেলায় ‘দ্য মাল্টিটাস্কিং রোবট’ প্রদর্শনের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ তরুণ উদ্ভ্ভাবক হওয়ার গৌরব অর্জন করে নাঈম হাসান মুন। মুনের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ছিল নিজেই কিছু একটা উদ্ভ্ভাবন করবে। যতদূর পেরেছেন তাকে সহযোগিতা করেছেন তার পিতা-মাতা। সম্প্রতি সে সিমেন্স আয়োজিত আন্তজার্তিক এক প্রদর্শনীতে আমন্ত্রিত হয়েছে। তার প্রতিটি প্রোজেক্টই দেশের উপকারে আসবে বলে সে বিশ্বাস করে।