ইউটিউব যখন আয়ের উৎস
- ফ্রিল্যান্সার্স ডেস্ক
ভিডিও শেয়ারিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ইউটিউব। প্রতি মাসে ৮০ কোটিরও বেশি মানুষ এসে ঢুঁ দেয় এখানে। বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি দেখা হয় যে ওয়েবসাইট সেটি হলো ইউটিউব। সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককে পেছনে ফেলে বর্তমানে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট ইউটিউব! শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিনামূল্যে ভিডিও শেয়ারিং সাইট হিসেবে বিশ্বজুড়ে ইউটিউব দারুণ জনপ্রিয়। এখানে যেমন ইচ্ছে মতো ভিডিও দেখা যায় তেমনি চাইলে নিজেই চ্যানেল তৈরি করে আপলোড করা যায় ভিডিও। বিনোদনের পাশাপাশি শিক্ষামূলক, সচেতনতামূলক অসংখ্য ভিডিও’র সমাহারে সব শ্রেণির মানুষের প্রিয় হয়ে উঠেছে ইউটিউব। তবে শুধু উপভোগের জন্যই নয়, চাইলে ইউটিউব হতে পারে অর্থ আয়ের অন্যতম উৎস। ঘরে বসে নিজের চ্যানেল এবং ভিডিও তৈরি করে কিংবা সংগ্রহকৃত ভিডিও আপ করে আয় করতে পারেন ডলার।
বানিয়ে ফেলুন ইউটিউব চ্যানেল
নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল হতে পারে নিজেকে মেলে ধরার অসাধারণ একটি উপায়। প্রথমেই আপনাকে জিমেইল আইডির মাধ্যমে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে নিতে হবে। YouTube.Com-এ গিয়ে জিমেইল আইডির মাধ্যমে Signup করলেই আপনার ইউটিউব চ্যানেল তৈরি হয়ে যাবে। তারপর বামপাশের অপশন হতে My Channel-এ ক্লিক করলে আপনার চ্যানেল দেখতে পারবেন। আপনার চ্যানেলটির নামের ওপরে Video Manager নামে আরেকটি অপশন দেখতে পাবেন। তাতে ক্লিক করুন। এখন বামপাশের চ্যানেল অপশনে ক্লিক করার পর ডানে অনেক অপশন দেখতে পারবেন। সেখানে আপনার নামের পাশে থাকা Partner থেকে মোবাইল নম্বর দিয়ে Partner Verified করতে হবে। Partner Verified না করলে আপনার ভিডিওগুলোকে Monetized করতে পারবেন না।
চ্যানেলের একেবারে ওপরে আছে অনেক অপশনসমৃদ্ধ মেন্যু, যার সাহায্যে বিশেষ কোনো দক্ষতা বা কোনো ঝামেলা ছাড়াই নানা রকমের কাস্টমাইজেশন করতে পারবেন। চ্যানেলে নতুন বুলেটিন যোগ করলে এর চেহারায় তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। ফেসবুকের স্ট্যাটাসের মতোই বুলেটিন হচ্ছে ইউটিউব চ্যানেলের যে কোনো আপডেট বা পরিবর্তন সম্বন্ধে সাবসক্রাইবারদের অবহিত করা। নতুন ভিডিও আপলোড করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তা সাবসস্ক্রাইবারদের নিউজ ফিডের মাধ্যমে জানানো হবে। এরপর আছে সেটিংস ট্যাব। আপনার চ্যানেলের কোনো শিরোনাম যে থাকতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। তবে শিরোনাম থাকলে সাবসক্রাইবারদের সুবিধা হবে।
আপনার চ্যানেলকে পারসোনালাইজ করার পর সুন্দর সব ভিডিও তৈরি করুন, নিজের ক্যামেরাই হোক আর হাতের মুঠোফোনটা ব্যবহার করেই হোক না কেন ভালো, মানসম্মত ভিডিও নিয়মিত আপলোড করতে থাকুন। আপনার চ্যানেল আর দশটি জনপ্রিয় চ্যানেলের সমান কিংবা তাদের থেকেও বেশি জনপ্রিয় হতে কে ঠেকাচ্ছে?
ভিডিওগুলো বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট যেমন- ফেসবুক, টুইটার, গুগল+ ইত্যাদিগুলোতে শেয়ার করুন। আপনার ভিডিওয়ের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করুন। একটা কথা ভালো করে মনে রাখবেন, ইউটিউব ভিডিও পাবলিশিংও এক ধরনের ব্লগিং। তাই আপনাকে ইউটউব, গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে ভালো অবস্থানে আসার জন্য অবশ্যই কিছু ব্যাকলিংক তৈরি করতে হবে। শুধু আপনার টপিক রিলেটেড সাইটে লিংক তৈরি করুন। আপনার মতো কাজ করছেন এমন লোকদের অনুসরণ করুন।
কীভাবে আয় করবেন
আপনি যদি জনপ্রিয় ভিডিও তৈরি করতে পারেন বা আপনার চ্যানেল জনপ্রিয় হয়, তাহলে আপনি ইউটিউবের অ্যাডসেন্স পার্টনারশিপ থেকেই একটা অফার পেতে পারেন। তবে এজন্য প্রথমেই আপনার ভিডিওটি আপলোড করুন। আপলোড হওয়ার পর ভিডিওটির নিচের দিকে Monetized অপশন দেখতে পারবেন। এখানে Monetize with ads অপশনে ঠিক চিহ্ন দিয়ে দিলেই আপনার ভিডিওটিতে এখন থেকে গুগল বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখাবে। তবে সাবধান কোনো ধরনের কপি করা ভিডিও আপলোড করবেন না। তাহলে ইউটিউব যে কোনো সময় আপনার Monetized অপশন নিষ্ক্রিয় করে দেবে।
এখন ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে। এই অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আপনি ডলার উত্তোলন করবেন। এখন আবার বামপাশের Channel অপশন হতে Monetization অপশনে ক্লিক করে ডানপাশে Enable Monetization বাটন হতে Monetization সক্রিয় করে নিতে হবে। এরপর নিচের দিকে How Will Paid নামে আরেকটি অপশন পাবেন। সেখানে associate an AdSense account-এ ক্লিক করে Next ক্লিক করে জিমেইল আইডির মাধ্যমে লগইন করে যাবতীয় তথ্য দিলেই অ্যাডসেন্স চালুর অনুরোধ চলে যাবে। এখন ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভ মেইল আপনার ইনবক্সে চলে আসবে।
কীভাবে আয় বাড়াবেন
নতুন ভিডিও আপলোড করার পর ভিডিওটি সম্পর্কে তার নিচে বর্ণনা দিতে হবে। তাহলে ইউটিউব সহজে আপনার ভিডিওটি সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবে। এতে ইউটিউব নির্ধারিত টপিক অনুযায়ী ভিজিটরদের কাছে ভিডিওটি পৌঁছে দেবে।
ভিডিওগুলো বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট যেমন- ফেসবুক, টুইটারে শেয়ার করুন। আপনার ভিডিওয়ের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করুন। মনে রাখতে ইউটিউবে ভিডিও পাবলিশিংও এক ধরনের বল্গগিং। তাই ইউটিউব, গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে ভালো অবস্থানে আসার জন্য অবশ্যই কিছু ব্যাকলিংক তৈরি করতে হবে। শুধু আপনার বিষয় সম্পর্কিত সাইটে লিংক তৈরি করুন। আপনার প্রতিযোগীদের বা আপনার মতো কাজ করছেন এ রকম ব্যক্তিদের অনুসরণ করুন। মনে রাখতে হবে চ্যানেলের দর্শক বৃদ্ধি মানেই হচ্ছে আপনার আয় বেড়ে যাওয়া।
আপনি যে বিষয় নিয়ে ভিডিও টিউটোরিয়াল বা ভিডিও তৈরি করছেন এ রকম অন্য জনপ্রিয় সাইটগুলোতে আপনার ভিডিওটির লিংক দিয়ে দিতে পারেন। এতে করে সেখান থেকেও আপনার সাইটে প্রচুর ভিজিটর পেয়ে যাবেন।
এ ছাড়াও বিভিন্ন পণ্যের ভিডিও রিভিউ দিয়ে বা বিজ্ঞাপন ভিডিওয়ের মাঝে দিয়ে আয় করা যায়। ভিডিওয়ের ডিসক্রিপশনে বিভিন্ন পণ্যের অ্যাফিলিয়েট লিংক দিয়ে দিতে পারেন। কোনো পণ্য বিক্রি হলেই আপনি টাকা পাবেন।
আপনি যদি সুন্দর একটা নামের বা ভালো কিওয়ার্ডের চ্যানেলের মালিক হন তবে সেটা বিক্রি করেও এককালীন আয় করে নিতে পারেন।