সাংবাদিক থেকে সফল উদ্যোক্তা
- ফ্রিল্যান্সার্স ডেস্ক
এমবিএ শেষ করে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরির সুযোগ পেয়েও যোগদান না করে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া সেই রবিউল আলম বিপ্লব এখন দেশের একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। এরই মধ্যে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি এ্যাফিলেট মার্কেটিং ও গুগল অ্যাডসেন্সে কাজ শুরু করেন ২০০৯ সালে। ১১ মাসে মাত্র ১০০ ডলার আয়ের মাধ্যমে শুরু করেছিলেন তার ফ্রিল্যান্সার ক্যারিয়ার। এখন নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচয় দিতেই পছন্দ তার।
রবিউল আলম বিপ্লব কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ২০০৮ সালে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিবিএস (সম্মান) ও ২০০৯ সালে এমবিএস (স্নাতকোত্তর) করেন। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ২০১০ সালে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে (এইচআরএম) এমবিএ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে সাংবাদিকতা করে আসছেন।
এমবিএ শেষে প্রতিষ্ঠিত মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরির সুযোগ পেয়েও তিনি যোগদান করেননি। তার ইচ্ছা ছিল সাংবাদিকতার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়া। তিনি রংপুরের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক গণআলো ও পরে দৈনিক মায়াবাজারে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রিকা ও ব্লগে আউটসোর্সিং বিষয়ে তার একাধিক টিউটোরিয়াল প্রকাশ হতে থাকে। মায়াবাজার পত্রিকাতেও তিনি আউটসোর্সিং নামে একটি বিভাগ চালু করেন।
এ সময় দৈনিক মায়াবাজারের তত্কালীন নির্বাহী সম্পাদক আব্দুর রউফ সরকার আউটসোর্সিংয়ে তার অভিজ্ঞতা দেখে তাকে আইটি ফার্ম করার পরামর্শ ও উত্সাহ দেন। সেই শুরু। রংপুরে ‘বিপিইউএস আইটি সেন্টার’ নামে একটি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। এতে শুরুতেই ৩০ জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। এর কিছুদিন পরেই গ্রামের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করে রংপুরের পীরগাছার প্রত্যন্ত পল্লীতে পৃথক দুটি ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে একটি আইটি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। গ্রামাঞ্চলে আউটসোর্সিংয়ে প্রধান বাধা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ। এজন্য তিনি ১২০ ফুট উচ্চতার নিজস্ব টাওয়ার দিয়ে রেডিও লিংকের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করেছেন।
আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে ২টি কোচ (বাস) ক্রয় করে তিনি বিপ্লব ট্রাভেলস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করেছেন। পাশাপাশি সমাজ সেবা অধিদপ্তর কর্তৃক নিবন্ধিত বিপ্লব পল্লী উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে সমাজসেবামূলক কাজ করছেন। একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
রবিউল আলম বিপ্লব তার উদ্যোগ ও ফ্রিল্যান্সিং পেশা সম্পর্কে বলেন, ‘শুরু থেকেই সাংবাদিক ও উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা ছিল। আউটসোর্সিংয়ে সফল হতে অনেক ধৈর্য ধরতে হয়েছে। ১০০ ডলার আয় করতে ১১ মাস সময় লেগেছিল। যে কাজ দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে শুরু করেছিলাম, তা এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে। এখন আমি নিজেই একজন উদ্যোক্তা।’