ঘরে বসে তিন বছরে আয় সাড়ে ৭ কোটি টাকা
- আল-মোমিন
ঢাকার বাসিন্দা সুমন ও বর্ষা আলী, ভালোবেসে বিয়ে করেন ২০০৪ সালে। সুমন ঢাকায় প্রকৌশলী হিসাবে কাজ করতেন এবং বর্ষা স্থানীয় ক্লিনিকে রিসেপশনিস্ট হিসেবে চাকরি নিয়েছিলেন। ২০০৮ সালে তাদের প্রথম সন্তান মেঘের জন্মের পরে তারা সিদ্ধান্ত নেন যে বর্ষা চাকরি ছেড়ে ঘরে থেকে সন্তানের দেখাশোনা করবেন।
বর্ষা বলেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশের উৎপাদন শিল্প মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। তবে সুমন তার চাকরি হারায়নি। তার সংস্থাকে টিকিয়ে রাখতে কাজের সময় বাড়ানো হয়েছিল এবং বেতন অনেক কম দেওয়া হত। আমাদের সাংসারিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য তখন সুমনকে অনেক পরিশ্রম করতে হতো। আমি খেয়াল করেছি, পরিশ্রম করতে করতে কতটা ক্লান্ত হয়ে পড়ত সে। এরমধ্যেও আমরা চেষ্টা করতাম যতটা সম্ভব টাকা পয়সা সাশ্রয় করার। সামনে কী ঘটবে আমরা নিশ্চিত ছিলাম না। তখন আমার গর্ভে আমাদের দ্বিতীয় সন্তান হৃদি।
হৃদির জন্মের কয়েক মাস পর, আমি একদিন বিকেলে ফেসবুক ব্রাউজ করছিলাম। তখন আমি একটি বিজ্ঞাপন দেখি যে বাসা থেকে কাজ করে প্রতিদিন ৮২০০০ টাকা উপার্জন করতে পারবো। কৌতূহলী হয়ে আমি সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করি এবং কিছু গবেষণা করি।
বাড়ি থেকে কাজ করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করা বিশ্বব্যাপী অন্যতম বৃহৎ প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অলিম্পট্রেড এমন একটি নির্দেশিকা ব্যবস্থা যা আপনাকে অনলাইনে অর্থ উপার্জনের জন্য গুগল, ওয়ালমার্ট, অ্যামাজন, অ্যাপল এবং আরও অনেক ইন্টারনেট সাইট ব্যবহার করতে শেখায়। সিস্টেমে অ্যাক্সেস পেতে আপনাকে যা করতে হবে তা হল অনলাইনে একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে।
আমি সিস্টেমটি শুরু করার বিষয়ে বিচলিত ছিলাম। আমি কম্পিউটার তেমন একটা ব্যবহার করতে জানতাম না, তবে আপনার যা জানা দরকার তা কীভাবে করা যায় সেটা তারা আপনাকে শিখিয়ে দিবে। আমি শুধু ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে জানতাম।
সিস্টেমটি ব্যবহার শুরু করার প্রথম দুই সপ্তাহ পরে দুটি চেকের মাধ্যমে মোট ১০,৬৬,৯৬৭ টাকা পেয়েছিলেন বর্ষা। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে সুমনকে তার নতুন কাজের কথা আপাতত বলবেন না। সুতরাং তিনি স্বামীর অজান্তে গোপনে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুললেন। প্রতি সপ্তাহে সরাসরি অ্যাকাউন্টে চেক জমা দিতেন। সুমন যখন কাজ করতে বাইরে যেতেন তখন বর্ষা ঘরে বসে অলিম্পট্রেড সিস্টেমে কাজ করতেন। এভাবে ৩ বছর চলে যায়।
বর্ষা আলী বলেন, আমার স্বামীর কাছ থেকে এটা গোপন রাখা আমার পক্ষে খুবই কঠিন ছিল। আমার মনে হয়েছিল আমি তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছি। গত বছরের শুরুর দিকে সুমন চাকরি হারায়, তখন আমি সিদ্ধান্ত নেই প্রতিদিন আমি কী করি তা তাকে বলে দিব। সুতরাং এক বিকেলে তিনি ব্যাংকে যান এবং তার গোপন অ্যাকাউন্টটিতে ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে যা টাকা জমাচ্ছিলেন তা নগদ ক্যাশ করেন। এতদিনে অ্যাকাউন্টটিতে ৭,৫৬,০৮,৫২৮ টাকা জমা হয়েছে।
সুমন বলেন, বর্ষা আমার পাশে বসে আমাকে বলেছিল যে সে আমার কাছ থেকে কিছু লুকিয়ে রেখেছে এবং এর জন্য সে লজ্জিত। তারপরে সে তার ব্যাগ থেকে একটি চেক বের করে আমার হাতে দিল, যাতে ৭,৫৬,০৮,৫২৮ টাকা স্বাক্ষরিত ছিল। আমি প্রথমে এটি বিশ্বাস করিনি। পরে সে আমাকে অলিম্পট্রেড সিস্টেম সম্পর্কে বলেছিল।
বর্ষা বলেন, সুমন প্রথমে চুপ করে ছিল। আমি ভেবেছিলাম সে রাগ করেছে এবং বিবাহবিচ্ছেদের কথা ভাকছে। কিন্তু একটু পরেই সে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে।
সূত্র: ডেইলি নিউজ ফাইন্যান্স
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আল-মোমিন। শিক্ষার্থী, জেএমসি, ডিআইইউ।