ভিন্ন আয়ের পথ দেখাচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং
- আয়েশা আক্তার
শুধু স্বামীর আয়ের উপর ভর করে সংসার চালানো ভীষণ কষ্টকর হয়ে পড়েছিল চৈতী খন্দকারের (ছদ্মনাম)। একটা কিছু করা দরকার যাতে সংসার চালানোটা সহজ হয়। চৈতী ভেবে দেখলেন, তিনি তো টুকটাক গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ জানেন। ঘরে বসে সেই কাজটাই করলে কেমন হয়? খোঁজ নিয়ে জানলেন, ইদানিং অনেকেই বিভিন্ন আউটসোর্সিং প্ল্যাটফর্মে কাজ করে ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করছেন। তাহলে তিনি কেন পারবেন না? আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজে নেমে পড়লেন চৈতী। দুবছরের মাথায় এখন তিনি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার।
চৈতীর মতো অনেকেই ঘরে বসে আয় করছেন। অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে কাজ করা এবং অর্থ উপাজন করাকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিংকে আয়ের উৎস হিসেবে বেছে নিচ্ছেন অনেক মানুষ এবং এর থেকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করছেন তারা। বর্তমানে এর চাহিদা আগের তুলনায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন অনেকে এই মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে অনেক টাকা আয় করছেন এবং প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে, বিশ্বে আউটসোর্সিংয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ বর্তমানে ৩য় স্থানে এবং প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং কাজের সাথে জড়িত।
মূলত আউটসোর্সিং নানাভাবে করা যায়। যেমন কোন কোম্পানির কাজ, ওয়েব ডেভেলাপিং, ম্যানুফেকচারিং, গ্রাফিক ডিজাইনিং ইত্যাদি করে দেওয়া। এবং তার বিনিময়ে কোম্পানি তাকে অর্থ প্রদান করবে। তাছাড়া বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে, যেই বিষয়ে পারদর্শী সে, সেই সেক্টরটি বেঁছে নিয়ে প্রতি মাসে প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা ঘরে বসে আয় করতে পারে। বর্তমানে কোন একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভলপ করে গড়ে প্রতি দিন ২০০ থেকে ৩০০ ডলার আয় করছেন বাংলাদেশের ফ্রিলান্সাররা।
বিভিন্ন সেক্টরে কাজ বিভিন্ন রকম। এর মধ্যে ওয়েব ডিজাইনিং এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনং সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এদের রয়েছে বেশ চাহিদাও।
গ্রাফিক্স ডিজাইন অনেক ধরনের হয়। যেমন: পোস্টার ও ব্যানার ডিজাইনিং, থ্রিডি গেইম, কোন লোগো বা আইডি কার্ড ডিজাইনিং করা হয় এর মাধ্যমে। অন্যদিকে ওয়েব ডেভোলাপিং বলতে কোন একটা ওয়েবসাইটকে আরো বেশি উন্নত করা, যাতে করে একটি ওয়েবসাইটের মধ্যেই সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রাহকরা উপভোগ করতে পারে। অন্যদিকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে, বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মার্কেটিং, সিপিএ মার্কেটিং বুঝায়। বর্তমানে অনেক বিক্রেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের বস্ত্র বিক্রি করে এবং আমদানি-রপ্তানির কাজ করে থাকে। আর এর মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হয়।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের ফলে বাংলাদেশের জিডিপির অনেকাংশ ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের থেকেই আসে। তাই নিজ নিজ দক্ষতা অনুযায়ী সাবার উচিত এই সেক্টরে যোগদান করা এতে করে অনেকের বেকারত্ব সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি, দেশকে আরো সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলতে পারার সম্ভাবনা আছে।