ক্রিমিনোলজি পড়ে ক্যারিয়ার

ক্রিমিনোলজি পড়ে ক্যারিয়ার

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, এনএসআই, ডিজিএফআই, র‌্যাবসহ আইশৃংখলা বাহিনীতে যারা কাজ করতে চান তারা পড়তে পারেন ক্রিমিনোলজি। এ বিষয়ে পড়ালেখা করে আপনি একজন চৌকস পুলিশ অফিসার কিংবা গোয়েন্দা হওয়ার লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে পারেন।


আমাদের সমাজে অপরাধের ধরণগুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। গুপ্তহত্যা, প্রকাশ্যে কুপিয়ে কিংবা গুলি করে হত্যা, সন্ত্রাস, গুম, ধর্ষণ, নারী ও মানব পাচার, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, মাদক-ইয়াবাসহ ড্রাগ সংশ্লিষ্ট অপরাধগুলো বর্তমানে বেড়েই চলছে। এসব অপরাধমূলক কার্যকলাপ নিয়ে গবেষণা, অপরাধীদের আচরণ অনুসন্ধান, অপরাধের সামাজিক নিয়ন্ত্রণ, অপরাধীদের বিচার- এসব বিষয়ে তাত্ত্বিক ও বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ এবং অপরাধ দমনের কলাকৌশল শিখতে পড়তে পারেন ক্রিমিনোলজি বিষয়ে। প্রচলিত ধারার একটু বাইরে গিয়ে রোমাঞ্চকর এই বিষয়টি যারা কৌতূহল নিয়ে পড়বেন তাদের জন্য রয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থায় চ্যালিঞ্জিং ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ।

যারা পড়তে পারেন : অপরাধ, রহস্য সম্পর্কে যাদের তুমুল আগ্রহ, যারা একটু রোমাঞ্চপ্রিয় কিংবা গতাণুগতিক বিষয়ের বাইরে পড়তে চান, তারা পড়তে পারেন ক্রিমিনোলজি। যে কোনো ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থী কিংবা পেশাদার ক্রিমিনোলজিতে মাস্টার্স করতে পারেন। আর অনার্স করতে হলে ‘বি’ ও ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হতে পারেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগে। অনার্সে ৬০ আসন। এছাড়া ৩ সেমিস্টারের মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ৬৫ জনকে ভর্তি করা হয়। জানা গেছে, পুলিশ অফিসার, র‌্যাব কর্মকর্তা, ডিবি, সিআইডি, ডিজিএফআই, সেনা-নৌ-বিমান বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা অপরাধের ঘটনাটির বিষয়ে তাত্ত্বিক ধারণা নিতে ক্রিমিনোলজি বিষয়ে মাস্টার্স করছেন।

কোথায় পড়বেন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৩-১৪ সেশন থেকে ক্রিমিনোলজি বিভাগ খোলা হয়েছে। এখানে ব্যাচেলর অব অনার্স, ৩ সেমিস্টারের মাস্টার্স, সঙ্গে রয়েছে এমফিল ও পিএইচডি করার সুযোগ। এছাড়া টাঙ্গাইলের মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও ২০০৪ সাল থেকে বিষয়টি পড়ানো হয়। সেখানে বিভাগটির নাম ক্রিমিনোলজি ও পুলিশ সায়েন্স। আমেরিকা, কানাডাসহ উন্নত অনেক দেশেও আছে এ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ও গবেষণার সুযোগ।

গ্রাজুয়েটরা যা বললেন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের গ্রাজুয়েট নাজমুস সাকিব বলেন, ‘অপরাধ ও এর দমনমূলক কার্যকলাপ সম্পর্কে আমার ভাবনাগুলো তত্ত্বগত ও কাঠামোগত দিক থেকে আরও স্পষ্ট ও জোরালো করতে ক্রিমিনোলজি বিষয়ে পড়ালেখা করেছি। এ বিষয়ে মাস্টার্স করে আমার সেই ইচ্ছা স্বার্থক হয়েছে।’ পুলিশ কর্মকর্তা আবদুর রাকিব বলেন, ‘একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আমার দায়িত্ব হচ্ছে সমাজের অপরাধগুলো তদন্ত ও তা দমনে কাজ করা। কিন্তু আমাদের সমাজের অপরাধের ধরন ও প্রকৃতি পবিবর্তন হওয়ায় অপরাধের কারণ অনুসন্ধান, অপরাধীদের আচরণ জানা এবং এগুলো প্রতিরোধে আইন প্রয়োগ করা আইনশৃংখলা বাহিনীর জন্য দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। ক্রিমিনোলজি বিষয়ে পড়ে আমি যে তাত্ত্বিক শিক্ষা পেয়েছি তাতে করে অপরাধ দমনে কাজ করা এখন আমার জন্য আরও সহজ হয়ে গেছে।’

যা শেখান হয় : ক্রিমিনোলজি একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি সাবজেক্ট। এখানে অনেক বিষয়ের পড়াশোনা একসঙ্গে করান হয়। আর্কিওলজি, বায়োলজি, ইকোনমিক্স, এপিস্টেমোলজি, সাইকোলজি, সাইকায়াট্রি, সেরোলজি, অ্যানথ্রোপলজি, রিসার্স মেথডলজি পড়ানো হয় এখানে। এছাড়া ক্রাইম সিন ইনভেস্টিগেশন, ফরেনসিক অ্যানথ্রাপলজি, ফরেনসিক সাইকোলজি এবং সাইকায়াট্রি, এন্টোমোলজি, ফরেনসিক সেরোলজি, জেন্ডার-ক্রাইম-ক্রিমিনাল জাস্টিস, টেরোরিজম অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ, ফরেনসিক অ্যান্ড ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন, এনভায়রনমেন্টাল ক্রাইম, ক্রাইম প্রিভেনশন, পলিটিক্স অ্যান্ড ক্রাইম, সাইবার ক্রাইম এসব বিষয়ও শেখা যায় ক্রিমিনোলজি পড়ে।

কর্মক্ষেত্র : বাংলাদেশে এ বিষয়ে পড়ালেখা শুরু হয়েছে অল্প কিছু দিন আগে। এজন্য এ বিষয়ে বিশেষায়িত কর্মক্ষেত্র এখনও খুব একটা তৈরি হয়নি। তবে বিসিএসে রয়েছে স্বতন্ত্র পুলিশ ক্যাডার। ক্রিমিনোলজিস্টদের গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে কাজ করতে হয়। সরকারের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীতে যেমন অপরাধ বিশেষজ্ঞের চাহিদা আছে, তেমনি চাহিদা আছে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও। পুলিশ, প্রশাসন, এনএসআই, স্পেশাল ব্রাঞ্চসহ সরকারের বিভিন্ন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার রয়েছে। বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, মানবাধিকার সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকসহ অনেক ক্ষেত্রেই রয়েছে কাজের সুযোগ।

ক্রিমিনোলজির গ্রাজুয়েটদের প্রসপেক্ট সম্পর্কে জানতে আমরা যোগাযোগ করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের সঙ্গে।

সাক্ষাৎকার

অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান

বাংলাদেশের শিক্ষায় ক্রিমিনোলজি একটি নতুন সাবজেক্ট। আপনার কাছে জানতে চাইব আলাদা ডিসিপ্লিন হিসেবে ক্রিমিনোলজি পড়ানোর প্রয়োজনীয়তা কেন উপলব্ধি করলেন?

ড. জিয়া রহমান : দেখুন, আমাদের সমাজে অপরাধের ধরনগুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। একসময় চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি ছিল। বর্তমানে গুপ্তহত্যা, প্রকাশ্যে হত্যা, সন্ত্রাস, গুম, ধর্ষণ, নারী ও মানব পাচার, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, মাদক-ইয়াবাসহ ড্রাগ সংশ্লিষ্ট অপরাধগুলো পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে। এসব অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক কলাকৌশল প্রয়োজন। তাই এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞানের জন্য ক্রিমিনোলজি বিভাগের যাত্রা শুরু। অপরাধীদের আচরণ অনুসন্ধান ও বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ করতে এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপ কমিয়ে আনার কৌশল নির্ধারণে ক্রিমিনোলজি আরও ব্যাপকভাবে পড়ান দরকার বলে আমি মনে করি। সেইসঙ্গে এই শিক্ষাকে সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া দরকার। যেমন- ক্রিমিনোলজি বিষয়টি সঠিকভাবে পড়াতে গেলে ক্রাইম ল্যাব, ডিএনএ ল্যাব, ফরেনসিক ল্যাব দরকার। কর্তৃপক্ষকে সেগুলো নিশ্চিত করতে হবে।

বহির্বিশ্বে বিষয়টি কখন থেকে পড়ান হচ্ছে?

ড. জিয়া রহমান : বহির্বিশ্বে ক্রিমিনোলজি বিষয়টি বহু আগ থেকেই পড়ানো হচ্ছে। ১৭৬৩ সালে ইতালির সিজারি বেকারিয়া ক্রিমিনোলজি আবিষ্কার করেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস এবং এশিয়ার বেশ কয়েকটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিমিনোলজি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পড়ান হচ্ছে। এদেশে অপরাধের ডাইমেনশন প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। মানবপাচার, গুপ্তহত্যা ও মাদককেন্দ্রিক অপরাধগুলো বিভিন্ন মাত্রা পাচ্ছে। এসব অপরাধের কারণ অনুসন্ধানে এগুলো কমিয়ে আনতে অপরাধ নিয়ে ব্যাপকভাবে গবেষণা দরকার। সেই সঙ্গে দরকার যথাযথ জ্ঞানসম্পন্ন ক্রিমিনোলজিস্ট ও আইনশৃংখলা কর্মী। আর সেটি নিশ্চিত করতে হলে ক্রিমিনোলজি শিক্ষার বিকল্প নেই।

ক্রিমিনোলজির গ্রাজুয়েটদের জব অপরচ্যুনিটি সম্পর্কে জানতে চাই?

ড. জিয়া রহমান : সমাজবিজ্ঞান অনুষদের যে কোনো বিভাগের গ্রাজুয়েটরা সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারেন, ক্রিমিনোলজিস্টরাও ওইসব প্রতিষ্ঠানে চাকরির পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন। বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে অ্যাডমিন, পুলিশ, পররাষ্ট্র, আনসার, ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ক্যাডারে চাকরিতে যোগ দিতে পারেন এখানকার শিক্ষার্থীরা। রাষ্ট্রায়ত্ত-বিশেষায়িত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে এ বিষয়ের ছাত্রদের জন্য সুপরিসর কর্মক্ষেত্র। এছাড়া বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে নিয়োগে ক্রিমিনোলজির ছাত্রদের অগ্রাধিকার দেয়া হলে পুলিশ প্রশাসনে আরও গতি আসবে। পুলিশ, র‌্যাব, ডিজিএফআইয়ের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটে ক্রিমিনোলজিস্টদের নিয়োগ দেয়া হলে সেটি অধিক ফলপ্রসূ হবে। ক্রিমিনোলজির ছাত্ররা ডিবি, এসবি, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে এবং এনএসআইতে নিয়োগ পেলে দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে আমার বিশ্বাস। অপরাধ দমনে প্রকৃত আইনশৃংখলা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হলে কর্তৃপক্ষকে নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে। অপরাধ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ গ্রাজুয়েটদের ওইসব প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ করে দিতে হবে।

বেসরকারি সেক্টরে চাকরির ক্ষেত্রে ক্রিমিনোলজির গ্রাজুয়েটদের প্রসপেক্ট সম্পর্কে জানতে চাই?

ড. জিয়া রহমান : যেসব আইএনজিও এবং এনজিও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে সেগুলোতে ক্রিমিনোলস্টিদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া অপরাধ প্রবণতা ও ধরন যেভাবে বাড়ছে তাতে করে অদূর ভবিষ্যতে প্রাইভেট সিটিউরিটি ফোর্সের দরকার হবে। সেক্ষেত্রে ক্রিমিনোলজির ছাত্রদের চাহিদা বাড়বে। পুলিশ স্টাফ কলেজ, সেনা-নৌ-বিমানবাহিনীর কাউন্টার টেররিজম প্রশিক্ষণ দিতে ক্রিমিনোলস্টিদের সুযোগ করে দিতে হবে। আর্মি অ্যাডুকেশন কোরে গ্রাজুয়েটদের নিয়োগ দেয়া হয়। সেখানে ক্রিমিনোলজির গ্রাজুয়েটরা নিয়োগ পেলে তা অধিক ফলপ্রসূ হবে।

বিশেষায়িত কোনো ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে কিনা যেখানে ক্রিমিনোলজির ছাত্রদের কর্মসংস্থান হবে?

ড. জিয়া রহমান : উন্নত দেশগুলোতে অপরাধ নিয়ে পড়াশোনা-গবেষণা হওয়ায় সেখানে এ বিষয়ের শিক্ষার্থীদের প্রচুর কর্মসংস্থান হচ্ছে। তারা অপরাধ দমনে অবদান রাখতে পারছেন। আমাদের দেশে ক্রিমিনোলজি বিষয়ক পড়ালেখার আরও বিস্তার ঘটাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভাগ খুলতে হবে। এ বিষয়ে পাঠদান ও গবেষণা শুরু হলে গ্রাজুয়েটদের কর্মসংস্থানও বাড়বে। পুলিশ, এনএসআই, গোয়েন্দা সংস্থায় ক্রিমিনোলজির ছাত্রদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা এই মেসেজ সংশ্লিষ্ট দফতরে পৌঁছে দিচ্ছি। আমাদের এখানে যারা পড়তে আসছেন তারাও ক্রিমিনোলজি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছেন।

কারা এ বিষয়ে পড়তে আগ্রহ দেখাচ্ছেন?

ড. জিয়া রহমান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিমিনোলজির মাস্টার্স প্রোগ্রামে আইনশৃংখলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ভর্তি হচ্ছেন। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম এখানে মাস্টার্স করেছেন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন অন্তত ১০ জন কর্মকর্তা, র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সেনা-নৌ-বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা, এসএসএফের কর্মকর্তা, সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী, পরিবেশ নিয়ে যারা কাজ করছে তারা এখানে মাস্টার্স করতে আসছেন। এই কোর্স তারা অপরাধের কারণ অনুসন্ধান, অপরাধীর আচরণ ও অপরাধ দমন নিয়ে তাত্ত্বিক বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞানার্জন করছেন। তারা এগুলো কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারলে সমাজ থেকে অপরাধ কমে যাবে বলে আমি মনে করি। এছাড়া কিছু ফ্রেশ গ্রাজুয়েটও এখানে মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হচ্ছেন।

ক্রিমিনোলজির ছাত্রদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ কতটা হচ্ছে?

ড. জিয়া রহমান : আমাদের মাস্টার্সের দুটি ব্যাচ বেরিয়েছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন। যেমন- ২০১৪ সালের গ্রাজুয়েট এবিএম নাজমুস সাকিব নেদারল্যান্ডস সরকারের বৃত্তি নিয়ে সে দেশের টিলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাচ্ছেন। আমাদের ছাত্রদের আরও অনেকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবেন বলে আমার বিশ্বাস। অন্যদিকে বিদেশ থেকেও আমাদের বিভাগে অনেকে পড়তে আসছেন। এক্ষেত্রে আমাদের একটি বড় সফলতা হচ্ছে- প্রথম কমনওয়েলথ স্কলার শ্রীলংকার নাগরিক মিস রাশিকা আমাদের এখানে মাস্টার্স করতে আসছেন। আমাদের পাঠ্যক্রম যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে সাজিয়েছি। যাতে ছাত্ররা যুগোপযোগী আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাটা পান। এছাড়া আমাদের শিক্ষক-ছাত্রদের বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং এশিয়ার নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কোলাবোরেশন প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি। ৩-৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমরা সমঝোতা স্মারক সই করতে যাচ্ছি। এতে করে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম চালু করা সম্ভব হবে। তখন আগ্রহীরা বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিমিনোলজির ওপর উচ্চশিক্ষা নিতে পারবেন।

একজন অপরাধ বিজ্ঞানীর কাজ কি?

ড. জিয়া রহমান : ক্রিমিনোলজিস্টদের কাজ প্রধানত দুটি। প্রথমত : মানুষ কেন অপরাধ করে তা অনুসন্ধান করা, অপরাধ নিয়ে গবেষণা করা এবং অপরাধ দমনে নতুন পলিসি নির্ধারণে সুপারিশ করা। দ্বিতীয়ত : পুলিশ, কারাগার, বিচার প্রতিটি জায়গায় একজন ক্রিমিনোলজিস্টের অবদান রাখার সুযোগ আছে।

সূত্র : দৈনিক যুগান্তর  favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment