নিজের ব্র্যান্ডিং নিজেই করুন
মারুফ ইসলাম : বদলে গেছে সময়। বদলে গেছে অনেক কিছু। এই বদলানো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনি নিজেকে বদলাতে পেরেছেন তো? আগে এমন একটা সময় ছিল যখন ‘নিজের ঢোল নিজে পেটানো’ ছিল অভদ্রতা। এখন বলা হয়, নিজের ঢোল নিজে পেটানোই ভালো, অন্য কেউ পেটালো তা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে! তাই বুঝে শুনে এবং অবশ্যই ভদ্রতা বজায় রেখে বিনয়সহযোগে নিজের ব্র্যান্ডিং করাটা এখন সময়ের দাবি। এ দাবি পূরণ করতে না পারলে অপনি নিঃসন্দেহে পিছিয়ে পড়বেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে নিজেই নিজের ব্র্যান্ডিং করবেন।
-
ধন্যবাদপত্র :
যখন কেউ আপনাকে কোনো কিছু উপহার পাঠায় তখন আপনিও তাকে ধন্যবাদপত্র পাঠান। কেউ আপনার কুশল জিজ্ঞাসা করলে তাকে হাসিমুখে ‘ধন্যবাদ’ বলুন। কথায় বলে, ফার্স্ট ইমপ্রেশন ইজ দ্য লাস্ট ইমপ্রেশন। সুতরাং প্রথম পরিচয়েই নিজের সম্পর্কে অন্যের মনে ইতিবাচক ধারণা দিন। এই ছোট্ট একটা কাজ আপনার জন্য বিশাল ব্র্যান্ডিং হিসেবে কাজ করবে।
-
সময়ের এক ফোঁড় :
বাংলা এই প্রবাদটা মোটামুটি সবারই জানা, ‘সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়’। কথাটা একেবারে ফেলে দেবার মতো নয়। সময়ের কাজ সময়ে যদি আপনি না করেন তবে অসময়ে অপনাকে অবশ্যই পস্তাতে হবে। আপনার নিজের অতীত অভিজ্ঞতার দিকে দৃষ্টি ফেরালেই এ প্রবাদের সত্যতা সম্পর্কে আশা করি নিশ্চিত হবেন। তাই সময়ের কাজ সময়ে করুন। বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার জন্য যে সময় ঠিক করেছেন, ঠিক সময়েই তার সামনে গিয়ে হাজির হোন, এক মিনিটও এদিক ওদিক না করে। খাওয়া ঘুম গোসল থেকে শুরু করে সব কাজ প্রতিদিন একই সময়ে করুন। আজ থেকেই আপনার প্রতিজ্ঞা হোক-আপনি কোনো চাকরির ইন্টারভিউ বোর্ডে আর ‘লেট’ করে যোগ দেবেন না।
-
সহযোগিতার দুই হাত :
আপনার দুই হাত হোক সহযোগিতার হাত। যেকোনো প্রয়োজনে, যেকোনো বিপদে আপনার দু’হাত যেন মানুষের দিকে বাড়ানোই থাকে। আপনার প্রতিবেশি, বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন তো বটেই একবারে অচেনা অজানা মানুষের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেও যেন আপনি কখনো কুণ্ঠিত না হোন। ধরা যাক, আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির পরীক্ষা দিতে গেছেন। সেখানে আপনার মতো আরও অনেকেই পরীক্ষা দিতে এসেছেন। তাদের সঙ্গে পরিচিত হোন এবং অন্য কোনো সময়ে, জীবনের অন্য কোনো প্রয়োজনে তাদের কেউ যদি আপনার কাছে সহযোগিতা চান, আপনি সবার আগে ছুটে যাবেন তার কাছে। এটাও এক ধরনের পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং।
-
কিছু করি মানবের তরে :
খুব বেশি কিছু করতে হবে এমন নয়, তবে সামান্য হলেও মানুষের জন্য কিছু করুন। এই ধরুন, কোথাও চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়ে কারও সঙ্গে পরিচয় হয়েছে আপনার, তার জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা জানান, একটা কিছু উপহার পাঠান। আধা পরিচিত কেউ অসুস্থ্য, তার খোঁজ নিন। এতেই কাজ হবে। এরচেয়ে সহজ ‘পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং’ আর কিছু নেই।
-
হাসিমুখ হাসিমুখ :
সব সময় মুখে হাসি ধরে রাখুন। কারও সঙ্গে কথা বলার সময় মিষ্টি হেসে কথা বলুন। কারও কুশল জিজ্ঞাসা করার সময় হাসিমুখে জিজ্ঞাসা করুন। কারও কোনো আচরণে কষ্ট পেলে সেটাও তাকে হাসিমুখে জানান। আর হ্যা, ইন্টারভিউ বোর্ডে অবশ্যই সব প্রশ্নের উত্তর দেবেন হাসিমুখে। কোনো উত্তর জানা না থাকলে সেটাও বিনয়ের হাসি দিয়ে ‘সরি’ বলবেন। বলা হয়ে থাকে, হাসি হচ্ছে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিংয়ের সর্বোৎকৃষ্ট দাওয়াই।