সৃষ্টি হবে ২৭ লাখ নতুন কর্মসংস্থান
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
চলতি অর্থবছরে (২০১৬-১৭) ২৭ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। তিনি বলেন, ‘দেশের একটি বড় অংশ এখনও বেকার। এদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। চলতি বছর শেষে ৭ লাখ মানুষ দেশের বাইরে যাবে। চলতি অর্থবছর শেষে ২৭ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে।’
তবে এতো কর্মসংস্থান কিভাবে তৈরি হবে তার ব্যাখ্যা দেননি পরিকল্পনামন্ত্রী। যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে, দেশে কর্মসংস্থান কমেছে, বেকারের সংখ্যা আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।
রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এসময় পরিকল্পনামন্ত্রী বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি), রেমিট্যান্স, প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসসহ সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অর্থবছরের প্রথম ৬ মাস দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। এ কারণে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০১৭ সালের অর্থনীতি ২০১৬ সালের অর্থনীতির চেয়েও শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে।’
চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে—বিশ্বব্যাংকের দেওয়া এমন পূর্বাভাসের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের বিষয়ে সব সময় রক্ষণশীল। এ কারণে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বিবিএসের জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলনের মধ্যে পার্থক্য থাকে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। এতে লুকোচুরির কিছু নেই। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ এবং মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) যেমন সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প তদারক করে থাকে, বিশ্বব্যাংকও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হিসাব তৈরির কাজটি তদারক করে।’
গত কয়েক বছরের বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস অনেক বেশি, যেটিকে ইতিবাচক বলে অভিহিত করেন তিনি।
রেমিট্যান্স কমে যাওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘হুন্ডিসহ অন্যান্য অপ্রচলিত মাধ্যমে রেম্যিটান্সের অর্থ দেশে ঢুকছে। এজন্য রেমিট্যান্সের প্রবাহ কম মনে হচ্ছে। সরকার অপ্রচলিত পদ্ধতিগুলো বন্ধের উপায় খুঁজছে।’
প্রচলিত মাধ্যমে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়াতে পরিকল্পনামন্ত্রী এ খাতে প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। জিডিপির হিসাবে রেমিট্যান্স ধরা হয় না, তাই এ খাতে প্রবাহ কমলেও প্রবৃদ্ধিতে তা কোন প্রভাব ফেলবে না বলেও মনে করেন তিনি।
চলতি বছর মন্ত্রণালয়ের অধীন চারটি প্রতিষ্ঠানকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যের কথা জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের পরিধি ও আকার বাড়ছে। এজন্য আইএমইডি, বিবিএস, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এবং জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি (এনএপিডি) শক্তিশালী করা হবে।’
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘প্রশিক্ষিত জনবলের মাধ্যমে প্রকল্প কাজ তদারকে গতি আনতে আইএমইডিকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য সঠিক সময়ে যথাযথ পরিসংখ্যান দরকার। কিন্তু বিদ্যমান কাঠামোতে বিবিএস এই কাজটি এখনও যথাযথভাবে করতে পারছে না। অনেক ক্ষেত্রেই পুরাতন তথ্য ব্যবহার করতে হচ্ছে। এ কারণে বিবিএসকেও শক্তিশালী করা হবে।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বিআইডিএস বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নানা কারণে এটিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করা যায়নি। সরকার এখন বিআইডিএসকে সেন্টার অব একসিলেন্স হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিচ্ছে। এটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে পুনর্গঠন করা হবে। দেশের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ইস্যুতে গবেষণার পাশাপাশি এখানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাও দেওয়া হবে।’
একই উদ্দেশ্যে এনএপিডিকেও শক্তিশালী করা হবে বলে জানান মুস্তফা কামাল।

 
	                
	                	
	             
	                       			                       	 
	                       			                       	 
	                       			                       	 
	                       			                       	