মিডিয়া এজেন্সিতে স্বাগতম

মিডিয়া এজেন্সিতে স্বাগতম

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

বর্তমানে মিডিয়া এজেন্সিতে চাকরি করার স্বপ্ন লালন করেন বহু তারুণ-তরুণী। এই সেক্টরের কাজের ধরন অন্য অনেক সেক্টর থেকে আলাদা। পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিলে মিডিয়া এজেন্সিতে বেশ সহজেই আকর্ষণীয় ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ মেলে। মিডিয়া এজেন্সিতে ক্যারিয়ার গড়ার বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন মাইন্ডশেয়ার বাংলাদেশের ডিরেক্টর তাসনুভা আহমেদ।


: মিডিয়া এজেন্সি কোন ধরনের কাজ করে থাকে?
তাসনুভা আহমেদ : মিডিয়া এজেন্সি বিজ্ঞাপন প্রচারণার সুপরিকল্পিত দিকনির্দেশনা প্রদান করে। এখানে তারা বিজ্ঞাপনদাতার পণ্যের প্রচারণার উদ্দেশ্য শতভাগ সফল করার জন্য কাজ করে। মিডিয়া এজেন্সি যথাযথ গবেষণা, বিশ্লেষণের মাধ্যমে মিডিয়ায় পণ্যের প্রচার প্রসারের পরিকল্পনা করে এবং শ্রোতা বা দর্শকের কাছে সর্বনিন্ম খরচে বিজ্ঞাপনের তথ্য পৌঁছে দেয়।

: বর্তমানে আপনি মাইন্ডশেয়ারের ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মাইন্ডশেয়ারের শুরুর গল্পটা জানতে চাই।
তাসনুভা আহমেদ : মাইন্ডশেয়ার ২০০১ সালে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে। তখন একমাত্র ইউনিলিভার বাংলাদেশ আমাদের ক্লায়েন্ট ছিল। কাজের শুরুতেই ব্যাপক সফলতার পর নিজেদের কর্মক্ষেত্র বিস্তুত করতে শুরু করে মাইন্ডশেয়ার। অনেক চ্যালেঞ্জকে পাশ কাটিয়ে মাইন্ডশেয়ার সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। আমরা গর্ব করে বলতে পারি, এখন মার্কেটের ৩৫ ভাগ মাইন্ডশেয়ারের দখলে।

তাসনুভা আহমেদ; ডিরেক্টর, মাইন্ডশেয়ার বাংলাদেশ।
তাসনুভা আহমেদ; ডিরেক্টর, মাইন্ডশেয়ার বাংলাদেশ।

: মাইন্ডশেয়ার যখন যাত্রা শুরু করে, তখনকার সময়ের সঙ্গে এখনকার সময়ের কী পার্থক্য খুঁজে পান?
তাসনুভা আহমেদ : যখন মাইন্ডশেয়ার যাত্রা শুরু করে তখনকার সাধারণ মানুষের মিডিয়া এবং বিনোদনের চাহিদা এখনকার অবস্থা থেকে পুরোপুরি ভিন্ন ছিল। তখন স্যাটেলাইট চ্যানেলের গ্রহণযোগ্যতা পুরোপুরি ছিল না। বিটিভির উপরই আমাদের অনেকাংশে নির্ভর করতে হতো। এখন মানুষ স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর ওপর নানাভাবে নির্ভরশীল। প্রয়োজনীয় পণ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে জানা এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। আমাদের নাগালের মধ্যে চলে এসেছে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট। তাই এসব মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে এখন পণ্যের প্রচার-প্রসারে অভাবনীয় সব পরিবর্তন এসেছে।

: এখন অনেকেই মিডিয়া এজেন্সিতে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী। এই সেক্টরে কাজ করার চ্যালেঞ্জ কতটুকু?
তাসনুভা আহমেদ : কেউ এই সেক্টরে প্রবেশ করতে চাইলে, তাকে চ্যালেঞ্জের কথা মাথায় রেখেই প্রবেশ করতে হবে। মনে রাখতে হবে আপনি ক্লায়েন্ট বা গ্রাহকের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন। তাই ক্লায়েন্টের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জনই হবে আপনার মূল লক্ষ্য। টিভি মিডিয়া, সোস্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে হয় মিডিয়া এজেন্সির। তাই সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আর প্রতিযোগিতার এই বাজারে নিজের সেরাটা দেয়া ছাড়া কোনো মিডিয়া এজেন্সি সামনের দিকে এগোতে পারবে না। তাই যারা এই সেক্টরে কাজ করে, তাদের সবসময় নিজের সেরাটা দিতে হবে।

: কী ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে এই সেক্টরে প্রবেশ করা যায়?
তাসনুভা আহমেদ : এই সেক্টরে কাজ করতে হলে মিডিয়া, ডিজিটাল মার্কেটিং, বিজ্ঞাপনসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা লাভ করতে হবে। যোগাযোগের দক্ষতা, গবেষণা, সঠিক বিশ্লেষণ এই সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যারা একটু সৃজনশীল, তারা এই সেক্টরে ভালো করে। কেউ হয়তো কোনো বিষয় সুন্দর করে গুছিয়ে লেখে, কেউ হয়তো গ্রাফিকসের কাজ ভালো পারে, কেউ হয়তো প্রেজেন্টেশনে ভালো, এরকম দক্ষতাকে সবসময় স্বাগতম জানায় মিডিয়া এজেন্সি।

: মিডিয়া এজেন্সিতে নিয়োগদানের প্রক্রিয়াটা কেমন?
তাসনুভা আহমেদ : আমরা সাধারণত তিনভাবে একজন প্রার্থীকে যাচাই করি। সেগুলো হচ্ছে লিখিত পরীক্ষা, প্রেজেন্টেশন এবং ভাইভা। ক্ষেত্রবিশেষে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ হতে পারে।

: যারা মিডিয়া এজেন্সিতে কাজ করতে আগ্রহী, তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?
তাসনুভা আহমেদ : যারা এই সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী, তারা বিভিন্ন দেশী-বিদেশী পণ্যের প্রচারণা কৌশল এবং কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন। অনলাইনে ডিজিটাল মিডিয়া এবং মার্কেটিং বিষয়ে বিভিন্ন টিউটেরিয়াল আছে এগুলো অনুশীলন করুন। এখন নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সংক্রান্ত কোর্স আছে, সেগুলোও বেশ ফলপ্রসূ হতে পারে। সর্বোপরি সবসময় আপ টু ডেট থাকতে হবে এবং নতুন কিছু শেখার, জানার ইচ্ছাটা রাখতে হবে।

: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাদের সময় দেয়ার জন্য।
তাসনুভা আহমেদ : আপনাকেও ধন্যবাদ।

সূত্র: যুগান্তরfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment