তরুণদের প্রিয় ড্যাফোডিলের সিএসই বিভাগ
- এসএম রাসেল
তরুণ শিক্ষার্থীদের কাছে প্রকৌশল বিষয় সবসময়ই আকর্ষণীয়। এর মধ্যে কম্পিউটার প্রকৌশলের (সিএসই) চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএসই বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির সিএই বিভাগ তরুণদের মধ্যে ব্যপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
পড়ার বিষয় সিএসই
সিএসইকে বলা হয় প্রকৌশল মাধ্যমের সবচেয়ে সৃজনশীল বিষয়। সিএসই পড়ার ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ গণিত ও যুক্তিবিদ্যার জ্ঞান প্রয়োজন হয়। বাকি ৭০ শতাংশ নিজের সৃজনশীলতা। সিএসই কোনো মুখস্তবিদ্যার বিষয় নয়। আপনার যদি চিন্তা শক্তি, কল্পনা করার ক্ষমতা, কঠোর পরিশ্রম করার মনোবাসনা, লেগে থাকার তীব্র ইচ্ছা, কম্পিটারের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার ধৈর্য শক্তি, নতুন কিছু তৈরির স্বপ্ন থাকে, তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার অর্ধেক কাজ হয়েই গেছে!
সিএসইর অলিতে গলিতে গণিত খুবই কাজে লাগে। যদি গণিতে খুব বেশি কাঁচা হন, তাহলে সিএসইতে হাজারটা সমস্যায় পরবেন। একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার যা কিছু করে বা বানায় সবকিছুই গণিতের তেলেসমাতি। গণিত এবং যুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জাদু দেখানোই কম্পিউটার প্রকৌশলীদের কাজ!
আমাদের দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে তেমন বেশি পরিমাণে খরচ হয় না। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক খরচ মোটামুটি কম না।
কেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন
১। যদি আপনি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী নিতে চান, তাহলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগ সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া ভালো। ভার্সিটির সিএসই ডিগ্রী আইইবি (IEB) কর্তৃক স্বীকৃত কি না।
২। সিএসইতে গণিত অপরিহার্য। কাজেই সিলেবাসে দেখে নিন কমপক্ষে চারটা সেমিস্টারে গণিত বিষয়ক কোর্স আছে কি না। এটা থাকা জরুরি।
৩। কয়টা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ওই ভার্সিটিতে শেখানো হয় সেটাও দেখে নিন। ভার্সিটিতে কমপক্ষে ২-৩ টি ভাষা শেখানো হয়।
৪। সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক ল্যাব আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সৃজনশীলতার জন্য এটা জরুরি।
৫। সমগ্র কোর্সের ক্রেডিট কত? কমপক্ষে ১৫০ ক্রেডিট থাকা উচিত। ক্রেডিট কত সেটা সিলেবাসেই লেখা থাকে।
৬। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কী বিভিন্ন প্রোগামিং প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন প্রজেক্ট ডিসপ্লে ইত্যাদি ক্রিয়েটিভ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়? সেখানে কি তাদের সাফল্য আছে? এটা ভার্সিটির জন্য অবশ্যই প্লাস পয়েন্ট হবে।
৭। ভার্সিটির সিএসই ডিপার্টমেন্টের বড় ভাই-আপুরা বন্ধুবৎসল কি না, বিভিন্ন ব্যাচের গ্রাজুয়েটরা এখন কেমন পজিশনে আছে, এগুলিও দেখা উচিত। সিনিয়রদের অনেক হেল্প আপনার প্রয়োজন হবে বিভিন্ন সময়ে। কাজেই তারা ফ্রেন্ডলি হলে আপনার অনেক সমস্যা কমে যাবে।
৮। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস আছে কিনা এবং বিনোদনের জন্য কোনো খেলার মাঠ আছে কিনা তা জেনে নিবেন।
ভর্তি প্রক্রিয়া
- ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর নূন্যতম যোগ্যতা- এসএসসি ও এইচএসসিতে কমপক্ষে ২.৫ সিজিপিএ থাকতে হবে। তবে পদার্থ, গণিত বিষয়ে সি গ্রেড থাকতে হবে। আর ‘ও’ লেভেলে পাঁচটি ও এ লেভেলে দুইটি বিষয় সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। তবে এই সাত বিষয়ের মধ্যে ৪টিতে বি গ্রেড এবং ৩টিতে সি গ্রেড থাকতে হবে।
- শিক্ষার্থী যে ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হতে ইচ্ছুক সে ডিপার্টমেন্ট থেকে ভর্তি ফরম সংগ্রহ ও পূরণ করে ১০০০ টাকা ব্যাংক ড্রাফট সহকারে রেজিষ্টার অফিসে জমা দিতে হবে।
- সায়েন্সের বিষয়ে এইচএসসি সিলেবাসের ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও ম্যাথের উপর আর্টসের বিষয়ে এইচএসসি সিলেবাসের বাংলা, ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞানের উপর এবং কমার্সের বিষয়ে এইচএসসি সিলেবাসের ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং এবং একাউন্টিং এর উপর ১০০ মার্কের উপর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
- ভর্তি পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫০ নম্বর পেলে শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে।
- ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা রেজিস্টার অফিসে যোগাযোগ করে ভর্তির চূড়ান্ত ফরম সংগ্রহ এবং ফরম পূরণ করে তার সাথে চারটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, সার্টিফিকেটের ফটোকপি, মার্কশীটের ফটোকপি, জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি (যদি থাকে) ও কলেজ থেকে প্রাপ্য প্রশংসা পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হয়।
সুযোগ সুবিধা
- ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান ল্যাপটপ।
- মেডিক্যাল সেন্টারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম তলায় অবস্থিত। এখানে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
- সাধারণত স্বল্প, দীর্ঘ ও নৈশকালীন কোর্স রয়েছে।
- ফলাফল পদ্ধতি গ্রেডিং পদ্ধতি।
- বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ইন্টারনেট কানেকশন রয়েছে।
- শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি।
- এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স কোর্সগুলো ‘ডে’ শিফটে হয়। এছাড়া মাস্টার্স কোর্সগুলোর জন্য ইভিনিং শিফট রয়েছে।
- সেমিস্টারভিত্তিক পড়াশুনা চলে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। যদি কোনো ছাত্র-ছাত্রী ৩.৭৫-৪.০০ জিপিএ পায় কোন সেমিস্টারে তাহলে তার জন্য পরবর্তী সেমিস্টারে অর্ধেক সেমিস্টার ফি প্রদান করতে হয়। সেক্ষেত্রে তার নিজ ডিপার্টমেন্ট থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করে পূরণ করে ডিপার্টমেন্টই জমা দিতে হয়।
- কৃতি ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ফ্রি ল্যাপটপ দেওয়া হয়।
- কম্পিউটার ক্রয়ের ক্ষেত্রে এখান থেকে ঋণ গ্রহণ করা যায়।
টিউশন ফি
চার বছর মেয়াদী স্নাতক সম্পন্ন করতে একজন শিক্ষার্থীর খরচ পড়বে ৭ লাখ ৩৮ হাজার ৮০০ টাকা। এজন্য শিক্ষার্থীকে চার বছরে মোট ১৪৮ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হবে।
স্কলারশীপ সুবিধা
বিশ্ববিদ্যালয়টি মেধাবী এবং গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন স্কলারশীপ বা বৃত্তির ব্যবস্থা করে থাকে। এর মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি স্কলারশীপ, রাজিয়া বেগম স্কলারশীপ, আকিজ গ্রুপ স্কলারশীপ এবং শেনইয়াং এরোস্পেস ইউনিভার্সিটি স্কলারশীপ, চায়না বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।