এসএসসির পর এসিসিএ

এসএসসির পর এসিসিএ

  • মারুফ ইসলাম

শিক্ষার্থীরা এখন শিক্ষাজীবন শেষে চাকরির পেছনে ঘুরে মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চায় না। তারা শিক্ষাজীবন শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই চাকরির নিশ্চয়তা চায়। তাদের জন্যই এসিসিএ কোর্স। এটি অক্সফোর্ড ব্রুকস ইউনিভার্সিটির অ্যাপ্লাইড আকাউন্টিংয়ে ডিগ্রি। এসিসিএ বাণিজ্যের শিক্ষার্থীদের জন্য পছন্দের একটি বিষয়। এসিসিএ বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মহুয়া রশিদ বলেন, ‘আমাদের দেশে বসে একটা ইন্টারন্যাশনাল সার্টিফিকেট পাওয়াটা একজন ছাত্রের জন্য বড় পাওয়া, আর সে কারণেই ছাত্ররা এসএসসির পর এই কোর্সে বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে’।

এসিসিএ কী
এসিসিএ হলো বিশ্বের বৃহত্তম প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টিং বডি। এসিসিএ জাতিসংঘ, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টস (আইএফএসি), কনসালটেটিভ কমিটি অব অ্যাকাউন্টেন্সি বডিস (সিসিএবি) প্রভৃতি কর্তৃক স্বীকৃত।
১৯০৪ সালে যুক্তরাজ্যে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১৭০টি দেশে এ ডিগ্রি দেওয়া হয়। বিশ্বব্যাপী বর্তমান এসিসিএর সদস্যসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৪০ হাজার। এসিসিএ সম্পন্নকারীরা যেকোনো দেশে প্রচলিত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ডিগ্রির সমান মর্যাদা পেয়ে থাকেন। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে গণ্য হয়ে থাকেন।

ভর্তি প্রক্রিয়া
সরাসরি এসিসিএ কোর্সে ভর্তি হতে চাইলে এসএসসি, ‘ও’ কিংবা ‘এ’ লেভেল, স্নাতক বা ডিগ্রি পাস হতে হবে।  বছরের যে কোনো সময় ভর্তি হওয়া যায়। তবে জুনে পরীক্ষা দিতে চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যেই ভর্তি হতে হবে। এসিসিএ বাংলাদেশের অধীনে অথবা ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমেও ভর্তি হওয়ার সুযোগ আছে।

পরীক্ষার প্রস্তুতি
ব্রিটিশ কাউন্সিল বা এসিসিএ অফিসে ভর্তির পর প্রয়োজনীয় ফি ও কাগজপত্র জমা দিলেই আপনাকে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত প্রয়োজনীয় বই সরবরাহ করা হবে। কোনো কলেজের মাধ্যমে ভর্তি হলে সেখানে নিয়মিত ক্লাস করে অথবা বাসায় নিজে নিজেই পড়াশোনা করতে পারেন। দরকার হলে বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন ও পাঠ্যক্রম এসিসিএর ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। তারপর নিজেই একটা পাঠপরিকল্পনা তৈরি করে পড়াশোনা শুরু করে দিন।

পরীক্ষার ধরন
BBP-ACCA-F6-Taxation-Text-bookExam-Kit-20160529133010এসিসিএ বিশ্বে ৮২টি স্থানীয় কার্যালয়ের অধীনে পৃথক পৃথক দেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ইংল্যান্ডে অবস্থিত এসিসিএর মূল অফিসের তত্ত্বাবধানে প্রত্যেক কার্যালয়ে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশে এসিসিএর পরীক্ষা গ্রহণ করে।

যে ডিগ্রি পাওয়া যায়
এসিসিএ থেকে বর্তমানে তিনটি ডিগ্রি পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে সার্টিফায়েড অ্যাকাউন্টিং টেকনিশিয়ান (সিএটি) ডিগ্রি। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী দক্ষ হিসাবরক্ষক হয়ে উঠতে পারেন। সিএটি-এ মোট নয়টি বিষয় পড়তে হয়। সিএটির পরের ধাপ বা ডিগ্রি হলো এসিসিএ। এর মাধ্যমে প্রায়োগিক দক্ষতার পাশাপাশি গড়ে উঠবে নৈতিক গুণাবলিও। এসিসিএর সদস্য হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীকে মোট ১৪টি বিষয়ে পাস করতে হয়। সেই সঙ্গে তিন বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। এরপর নিতে পারেন নতুন ডিগ্রি ফাউন্ডেশন ইন অ্যাকাউন্টস। এ ছাড়া এসিসিএর শিক্ষার্থীরা ইংল্যান্ডের ব্রুকস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত হিসাবরক্ষণের ওপর নিতে পারেন স্নাতক ডিগ্রি। এরপর এমবিএ করতে পারবেন।

ক্যারিয়ার
এসিসিএ সম্পন্ন করার পর আপনি গ্র্যাজুয়েট এবং আন্তর্জাতিক প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে বিবেচিত হবেন। ফলে যেকোনো প্রতিষ্ঠানে চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার, ফিন্যান্স ডিরেক্টর, অডিটর, ট্যাক্স অ্যাডভাইজার, বিজনেস কনসালট্যান্ট ইত্যাদি বড় পদে চাকরির সুযোগ পাবেন। নিজস্ব অ্যাকাউন্টেন্সি ফার্ম দিয়েও ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, এডিবি, ইউএন, আইডিবি, ইউএনডিপি প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সংস্থায় অগ্রাধিকার পাবেন।

কেমন খরচ
সিএটি বা এসিসিএ সম্পন্ন করতে হলে আপনাকে দুধরনের ব্যয় বহন করতে হবে। একটি এসিসিএ আন্তর্জাতিক কাউন্সিল ফি এবং অন্যটি যে ইনস্টিটিউটে ক্লাস করবেন সেখানকার প্রাতিষ্ঠানিক ফি। ইনস্টিটিউটগুলো নিজস্ব নিয়মে ফি ধার্য করে। সর্বসাকুল্যে এক থেকে দেড় লাখ টাকা ব্যয় হতে পারে। ফি এককালীন বা কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য।

এসিসিএ বাংলাদেশ
২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশে এসিসিএ কোর্স চালু হয়েছে। এসিসিএ বাংলাদেশের মাধ্যমে বর্তমানে দুটি ডিগ্রি পাওয়া যায়। এর একটি হলো ফাউন্ডেশন ইন অ্যাকাউন্ট্যান্সি (এফআইএ)। সিএটি কোর্সটি রূপান্তর করে এফআইএ করা হয়েছে। এফআইএর পরের ডিগ্রি হলো এসিসিএ। এসিসিএ বাংলাদেশের অধীনে দেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো: এএমটিআরএস, সিএসি চট্টগ্রাম, আইবিএস, এলসিবিএস ঢাকা ও সাইফুরস।

যোগাযোগ
এসিসিএ ইন্টারন্যাশনাল অফিস
ইমেইল: info@accaglobal.com
ওয়েবসাইট: www.accaglobal.com

এসিসিএ বাংলাদেশ অফিস
গুলশান ভবন (৪র্থ তলা)
বীর উত্তম এ কে খন্দকার সড়ক
৩৫৫, মহাখালী, গুলশান, ঢাকা।
ফোন: ০২-৮৮২৪৯৩০

ড্যাফোডিল ইন্সটিটিউট অব আইটি

১৯/১, পান্থপথ, ঢাকা

ফোন : ০২-৯১৩৮১৩৯, ০১৭১৩৪৯৩১৬৩

ওয়েবসাইট : http://goo.gl/Cj6LZI

আইবিএস
৪৯ সাত মসজিদ রোড (২য় তলা)
ধানমণ্ডি, ঢাকা।
ফোন: ০২-৯১৩০৫৭২

চার্টার্ড ইউনিভার্সিটি কলেজ
বাড়ি-৫১, রোড- ১০/এ
ধানমণ্ডি, ঢাকা।
ফোন: ০২-৮১৪১৬০১

বিআইএমএস
গ-৯/৩ প্রগতি সরণি
শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা।
ফোন: ০২-৮৮৯৯৮৪৮

Sharing is caring!

Leave a Comment