আইইএলটিএস : কী ও কেন
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
বিদেশে পড়ালেখার স্বপ্ন অনেকেরই থাকে। বাংলাদেশে অনার্স মাস্টার্সের পর অনেকেই উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে পড়তে যেতে চান। স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যেকের আগ্রহ থাকে আমেরিকা, নর্থ আমেরিকা ও ইউরোপে। বলা বাহুল্য এসব দেশের প্রায় প্রত্যেকটিতে পড়াশোনার ভাষা মাধ্যম ইংরেজি বলে সবাই শুরুতে আপনার ইংরেজি জ্ঞান যাচাই করবে। তা যাচাই এর অন্যতম উপায় হলো আইইএলটিস এ আপনার স্কোর কত।
অআইইএলটিএস মানে হলো – ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ কাউন্সিল আর অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠান আ্ইডিপির যৌথ প্রযোজনা বলা যেতে পারে আইইএলটিএস। এটি আসলে একটি পরীক্ষা। যেখানে আপনার ইংরেজি ভাষার রিডিং (পড়া), রাইটিং (লেখা), লিসনিং (শোনা) ও স্পিকিং (বলা) এই চারটি দক্ষতা দেখা হয়। পরীক্ষা নেয় ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপি।
আইইএলটিএস দুই ধরণের। একাডেমিক ও জিটি মানে জেনারেল ট্রেনিং।
যারা সাধারনত পড়াশোনা করতে যান তারা একাডেমিক দেন। আর যারা মাইগ্রশেন বা ট্রেনিং পারপাসে যান তাদের জন্য জিটি। তবে উভয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে।
রিডিং
রিডিং মানে কিন্তু দেখে পড়া নয়। বরং এটা অনেকটা কম্প্রিহেনসনের মতো। মানে প্যাসেজ পড়ে সে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের জবাব দেওয়া। এখানে তিনটা প্যাসেজে মোট ৪০ টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। প্যাসেজগুলো সাধারণ বিদেশে পত্রিকা ম্যাগাজিন বা গবেষণা প্রতিবেদন হতে নেওয়া হয়। সময় এক ঘন্টা।
বলা ভালো, রিডিং বাকি তিনটি মডিউলের তুলনায় কিছুটা কঠিন। তবে ইংরেজিতে যাদের ভালো দক্ষতা আছে তারা রিডিংএ ভালো করবেন। আসলে একঘন্টার মধ্যে তিনটা প্যাসেজ শেষ করা অনেকসময় কঠিন হয়। এর জন্য অনুশীলনের বিকল্প নেই। তবে জিটির রিডিং একটু ভিন্ন হয়। জিটি এখানে কিছুটা সহজ বলা চলে।
রাইটিং
রাইটিং এ টাস্ক ওয়ান ও টাস্ক টু নামে দুইটা অংশ। দুই অংশ মিলে এক ঘন্টা সময় দেওয়া হয়। টাস্ক ওয়ানে বিশ মিনিট। আর টু‘তে চল্লিশ মিনিট। যারা একাডেমিক দিবেন তাদের জন্য টাস্ক ওয়ানে থাকবে চার্ট, গ্রাফ, টেবিল। সেগলো দেখে বিশ্লেষণমূলক লেখা অন্তত ১৫০ শব্দ। আর জিটিতে আসবে অ্যাপ্লিকেশন টাইপের। তবে টাস্ক টু সবার এক। এখানে একটা রচনা লিখতে হয়। ২৫০ শব্দ অন্তত লিখতে হবে ৪০ মিনিটের মধ্যে।
লিসনিং
লিসনিংকে বলা হয় আইইএলটিএসের মোটামুটি সহজ মডিউল। এটি চারটি ভাগে বিভক্ত। মোট চল্লিশটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয় যতক্ষন সিডি চলবে। তবে সময় কমবেশি ৩০ মিনিট। চারটি সেকশনের মধ্যে প্রথম দুই সেকশন অপেক্ষাকৃত সহজ। শেষ সেকশন কঠিনই বলা চলে।
স্পিকিং
১২–১৬ মিনিটের স্পিকিং মোটাদাগে তিনভাগে বিভক্ত। প্রথম কয়েক মিনিট আপনার পরিচয়, পেশা, শখ নিয়ে প্রশ্ন হবে। এর পর কিউ কার্ড থাকবে, সেখানে নির্দিষ্ট বিষয় দেওয়া থাকবে সে বিষয়ে ১–২ মিনিট কথা বলতে হবে। এরপর কিউ কার্ডে থাকা বিষয়ের ওপর দীর্ঘ প্রশ্ন করা হয়।
স্কোর
আইএলটিএসের মোট স্কোর বা ব্যান্ড স্কোর ৯। প্রতিটি মডিউলে ৯ এর মধ্যে যে যত পায় তাকে চার দিয়ে ভাগ করে মোট স্কোরিং করা হয়। এখানে ভগ্নাংশ গোনা হয় না। তবে স্কোর পূর্ণ সংখ্যা ও তার অর্ধেক হতে পারে।
যেমন কেউ ৬ পেতে পারে। তেমনি ৬.৫ ও হতে পারে। তবে ৬.৭৫ হবে না। এ জন্য যেমন কেউ প্রত্যেকটিতে ৬ পেলে তার ব্যান্ড স্কোর যেমন ৬ তেমনি কেউ দুইটায় ৬ আর দুইটায় ৫.৫ পেলেও তার স্কোর ৬ ই হবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য বলে দেয় কোনটায় কত থাকতে হবে।
প্রস্তুতি
আইএলটিএস আসলে আপনার ইংরেজি জ্ঞান জানার পরীক্ষা এখানে তেমন প্রস্তুতির ব্যাপার নেই। তবে পরীক্ষায় কেমন প্রশ্ন আসে তার স্যাম্পল ও সম্ভ্যব্য প্রস্তুতির জন্য আইএলটিএসের প্রশ্ন যারা করে সে ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় দশটি বই বের করেছে। আইএলটিএসের জন্য ক্যাম্ব্রিজের দশটি বই খুবই সহায়ক। সেগুলো সমাধান করলে আপনার কেমন স্কোর আসতে পারে নিজেই বুঝতে পারবেন। এরজন্য অবশ্য অনেক কোচিং রয়েছে। নিজে নিজে প্রস্তুতি নিতে পারলে কোচিং আবশ্যক নয়্। এছাড়া দেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে আইইএলটিএসের ওপর স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কোর্স পড়ানো হয়। যেমন:
ড্যাফোডিল ইন্সটিটিউট অব ল্যাংগুয়েজ। যোগাযোগ : ড্যাফোডিল টাওয়ার–৫, ৪/২ সোবহানবাগ, মিরপুর রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা। ফোন: +(৮৮০–২)৮১৩০৮৬৪, ৮১২৯১৭৭। ইমেইল: dil@daffodilvarsity.edu.bd ।
রেজিস্ট্রেশন
যেহেতু ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপি পরীক্ষাটি নেয়, এ দু প্রতিষ্ঠানের যে কোন একটিতে পরীক্ষা দিত পারেন। দুটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে যথাক্রমে বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপি‘র ওয়েবসাইট দেখতে পারেন।
এই মোটামুটি আইএলটিএস। তবে এর বাইরে জানতে ইন্টারনেট ঘাটতে পারেন। এখানে কমেন্টেও জানতে চাইলে বলতে পারেন। উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।