চাকরির প্রথম দিনের ১০ তরিকা
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
অফিসের প্রথম কর্মদিবসে আপনার মুখ থেকে যদি অপ্রাসঙ্গিক কোনো কথা বের হয় তাতে সহকর্মীরা যেমন আপনাকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করতে পারে তেমনি তা কর্মজীবনেও প্রভাব ফেলতে পারে। আপনি যদি এমন কিছু বলেন যা প্রাসঙ্গিক না এবং সেটা কেউ পছন্দ না করলে আপনার ওপর টানা তিন মাস এর প্রভাব পড়তে থাকবে।
অফিসে এসে প্রথমদিনই আমরা সবার মন জয় করে নিতে চাই এবং পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে চাই। কিন্তু সবার মন জয় করতে গিয়ে আপনি এমন কিছু বলবেন না যাতে আপনার ক্যারিয়ারে সমস্যা তৈরি হয়।
ক্যারিয়ারের এই দিকটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত তুলে ধরেছে আমেরিকার সংবাদ সংস্থা বিজনেস ইনসাইডার। এ সংক্রান্ত ১০ কথা আছে যা আপনি অফিসের প্রথম দিনে বলা থেকে বিরত থাকলে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
১. ‘এর আগের চাকরিতে’
অনেকেই দেখা যায় বলে থাকেন, এর আগের চাকরিতে আমি এ কাজ করেছি। আমি জানি কীভাবে করতে হয়। আবার এটাও বলেন, এর আগের অফিসে এই বিষয়টা ছিল না। আসলে সবজান্তাদের সবাই পছন্দ করেন না। যদি আপনি সব আগে থেকে জানেন এই মনোভাব নিয়ে অফিসে আসেন তাহলে অবশ্যই তা বাদ দিন। নতুন চাকরিতে মানুষ কর্মতৎপর থাকে। এর পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা কিছু মানবতা দেখানোর পরামর্শ দেন।
২. ‘ফোনের কণ্ঠের সঙ্গে চেহারায় কোনো মিল নেই’
নতুন সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতা কখনই এভাবে শুরু করবেন না যে আপনি বিস্মিত, হতাশ বা ধাঁধার মধ্যে পড়ে গেছেন। আপনি যা আশা করেছেন সে দেখতে তেমন নয় এ বিষয়টি কখনও তার সামনে প্রকাশ করবেন না। তার বদলে তার দিকে তাকিয়ে হেসে বলুন, কী খবর? কেমন আছেন? আপনার নাম যেমন সুন্দর দেখতেও তেমন।
৩. ‘বাহ! আমি এটা ভালোবাসি’
আপনাকে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়ে গেছে। তাই জোর করে সহকর্মীদের পছন্দের পাত্র হওয়ার জন্য চেষ্টা করার প্রয়োজন নেই। মানুষ যখন জানবে আপনি ব্যক্তিত্বসম্পন্ন তখন আপনাকে এমনিই পছন্দ করবে। ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞরা বলেন, যদি প্রথম দিন থেকে আপনার মতোই থাকেন তাহলে সবার কাছে আপনি গ্রহণযোগ্য হবেন।
৪. ‘আমার পদোন্নতি কবে হবে?’
প্রথমদিনই পদোন্নতি কবে হবে তা জানতে চাওয়াটা উচিত নয়। বরং বলুন ৯০ দিনের প্রোবেশনারি সময়টা ভালোভাবে কাটাতে হবে।
৫. ‘আমাকে বৃহস্পতিবার আগে বের হতে হবে’
নতুন চাকরির ক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রত্যাশা করেন যে, আপনি সময়মতো অফিসে থাকবেন এবং সময়মতো বের হবেন। কাজের প্রতি আপনার সম্মান থাকবে এবং শেখার আগ্রহ থাকবে। তাই চেষ্টা করুন চাকরির প্রথম দিকে পেশাজীবনকে গুরুত্ব দিতে।
৬. ‘দাঁড়ান… আমি আমার কাজ শেষ করে নেই’
চাকরির প্রথম দিনে আপনার চারপাশে প্রচুর পরিমাণে নির্দেশনা থাকবে। অনেকেই আপনাকে বিভিন্ন কাজ করতে বলতে পারে। আপনি অবশ্যই আপনার বসের সঙ্গে আলোচনা করে নিজের দায়িত্ব বুঝে নেবেন। সাধারণত সব কোম্পানি এতটা বেশি গোছানো থাকে না। আপনি নিজেকে সবার সামনে হয়তো ভালোভাবে মেলে ধরতে চান। কিন্তু এটা সঠিক পথ নয়।
৭. ‘আমি কার সঙ্গে মিশবো আর কাকে এড়িয়ে চলবো?’
সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার সময় উপরিউক্ত প্রশ্ন অবশ্যই করা যাবে না। এর জন্য আপনার চাকরি চলেও যেতে পারে। কর্মজীবনে সবাই নিজ নিজ স্বার্থ নিয়ে কাজ করে। আপনার সে বিষয়ে কোনো ধারণা না থকতে পারে। কে কার সঙ্গে কেন মিশছে না সে বিষয়ে প্রথমদিনই আগ্রহ প্রকাশ করার প্রয়োজন নেই।
৮. ‘আমি কখনও এভাবে কাজ করা শিখি নাই’
সহকর্মীর সঙ্গে আলোচনা সবসময় ইতিবাচক রাখার চেষ্টা করবেন। নিয়োগদাতারা কখনও শুনতে চান না যে কোনো কাজ আপনি পারেন না। তারা এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে চান যে নতুন কাজ শেখার বিষয়ে আপনার আগ্রহ রয়েছে। আপনি চ্যালেঞ্জ নিতে পারেন। অনেকের এ কথা বলার কারণ হলো, তারা বুঝতে দিতে চান না যে কাজটা পারেন না। কিন্তু এ ধরনের কথায় নিয়োগদাতারা আপনার ওপরে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতে শুরু করে।
৯. ‘আমি এ কথা শুনলাম, কথাটা কি সত্যি?’
নতুন অফিসে যে কোনো গুজবের ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন এড়িয়ে চলার। আপনার কোম্পানি, সহকর্মী এবং পুরানো নিয়োগদাতাকে নিয়ে যে কোনো গুজব এড়িয়ে চলবেন। এই গুজব সম্পর্কে যেমন জানতেও চাইবেন না তেমন এটা অন্যের কাছে বলার চেষ্টা করবেন না।
১০. ‘কোম্পানির কোনো পার্টিতে কি বোনাস বা খাবার দেয়?’
কোম্পানির কোনো পার্টি বা অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে সেখানে বোনাস বা খাবার দেয় কিনা তা প্রথম দিনই জানার চেষ্টা করবেন না। অপেক্ষা করুন। সময় এলে আপনি নিজেই জানতে পারবেন।