পরিশ্রমী হতে হলে কী করতে হবে?
- আয়মান সাদিক
আমাদের জীবনে ব্যর্থতা আসার অন্যতম একটা কারণ কি জানেন?
আমরা আসলে পরিশ্রম করতে চাই না। আমাদের সবসময় লক্ষ্য থাকে কিভাবে সহজে, শর্টকাটের সাহায্য নিয়ে হলেও কোনো কাজ শেষ করে ফেলতে পারবো। পরিশ্রম করতে আমাদের ইচ্ছেটা থাকে না, খুঁজতে থাকি এমন কোন উপায় যাতে একফোঁটা ঘাম না ফেলেই কাজ করে নিতে পারবো। সত্যি বলতে কি, এমন মানসিকতা প্রায়শই ব্যর্থতার জন্ম দেয়।
পরিশ্রম দেখলে এই যে আমরা উল্টো পথে দৌড় দেই, এখানে থেকে ফিরে আসতে পারলে কিন্তু সাফল্যের দেখাও মিলবে। তাই পরিশ্রমের রাস্তায় যাওয়ার চিন্তা করতে হবে সবাইকে। প্রশ্ন আসতেই পারে, পরিশ্রমী হতে হলে কি করতে হবে? এ প্রশ্নেরও উত্তর আছে। কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে পরিশ্রমী না হোক, সেটি হবার পথে এগিয়ে যাওয়া যাবে।
১। নিজের কাজগুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন:
পরিশ্রম করতে আমাদের আলসেমীর একটা কারণ হলো বড় বড় কাজ করতে গেলে অনেক বেশি ক্লান্তি চলে আসে। কাজের বহর দেখলেই হতাশ হয়ে যেতে হয়, কাজ করার ইচ্ছেই করে না। পরিশ্রম তো অনেক দূরের কথা। তাই যে কাজই হোক, সেগুলোকে যদি আমরা ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে শেষ করি, তাহলে একদিকে যেমন দ্রুতগতিতে কাজ এগোবে, অন্যদিকে পরিশ্রম করতেও ক্লান্ত লাগবে না।
২। নিজের লক্ষ্য অর্জনে ফোকাস করুন:
অন্যের লক্ষ্য কেমন, তারা লক্ষ্য অর্জনে কতদূর গেছে সেদিকে তাকিয়ে হতাশ হবার কোন কারণ নেই। বড়জোর অন্যের লক্ষ্যপূরণ থেকে উদ্দীপনা নিতে পারো তুমি, যে ও পারলে আমি কেন নয়? কিন্তু তুমি তোমার লক্ষ্যে অবিচল থাকবে। লক্ষ্য নিশ্চিত না থাকলে পরিশ্রমে আগ্রহ মেলে না। আর তাই নিজের লক্ষ্যটি ঠিকঠাক রাখুন, এগিয়ে চলুন পরিশ্রম করে।
৩। ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখুন:
আপনার জীবনে যেকোন কাজে হতাশা আসতেই পারে। ভেঙ্গে পড়াটা অস্বাভাবিক না তাই। কিন্তু সেজন্যে পরিশ্রম করা ছেড়ে দেবার কিন্তু কোন কারণ নেই! ইতিবাচক মনোভাব রাখার চেষ্টা করুন সবসময়। মনে রাখবেন, হাজারো ব্যর্থতার পর যে সাফল্য আসে, সেটির মূল্য সবচেয়ে বেশি।
৪। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখুন:
প্রায়ই দেখা যায় যে খুব পরিশ্রমী একজন মানুষের জীবনে বড় রকমের হতাশা নেমে এসেছে। এমন সে হতাশা, মানুষটিকে ভেঙ্গে দিয়েছে ভেতর থেকে। কেন জানেন? কারণ তার নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই। যতো বড় আঘাতই আসুক না কেন, নিজের নিয়ন্ত্রণ থাকলে সেগুলোকে মোকাবেলা করা যাবে ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রম দিয়ে।
৫। পরিশ্রমী মানুষের সাথে মিশুন:
আপনি যে ধরণের মানুষদের সাথে বেশি চলাফেরা করেন, যাদের সাথে বেশি মেশা হয় আপনার, সেই মানুষগুলোর আচার আচরণ, চরিত্রগুলো খানিকটা হলেও আপনার মধ্যে বিরাজ করে। এজন্যে দেখা যায় খুব জ্ঞানী কোন মানুষের শিষ্যদের অনেকেই জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়।
এখানেও ব্যাপারটা একই রকম। চেষ্টা করুন পরিশ্রমী মানুষদের সাথে পরিচিত হবার, তাদের সান্নিধ্য পাবার। এতে করে আপনার নিজের মধ্যেও এক ধরণের পরিশ্রমী মনোভাব চলে আসবে। আপনিও হতে চাইবেন তাদের মতো পরিশ্রমী। এভাবে পরিশ্রমের ভূতটাও আপনার মাথায় চেপে বসবে।
বর্তমান যুগ হলো মহা ব্যস্ততার যুগ। আবেগের দাম নেই এখানে। তাই পরিশ্রমীরাই সফল হবে এই যুগে। তাই সফলতা পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, অনুশীলন করে যেতে হবে। তবেই না পাবেন সাফল্যের দেখা!