অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার

অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

জাকির হোসাইন, শুরু করেছিলেন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট দিয়ে, কিন্তু এখন তাঁর পরিচয় দেশের অন্যতম সেরা অ্যাপ ডেভেলপার। বর্তমানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে সফটওয়্যার স্পেশালিস্ট হিসেবে চাকরি করেন। অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।


১. অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট কী? 

মোবাইলের জন্য তৈরিকৃত সফটওয়্যারকে আমরা সাধারণত অ্যাপ বলে থাকি। আর তৈরির পদ্ধতি হচ্ছে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট। জনপ্রিয় তিনটে মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস এবং উইন্ডোজ মোবাইল। প্রতিটি প্লাটফর্মের জন্য অ্যাপ তৈরি করতে ভিন্ন ভিন্ন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করতে হয়। যেমন আইওএস’র জন্য সুইফট বা অবজেক্টিভ সি, অ্যান্ড্রয়েড’র জন্য জাভা এবং উইন্ডোজ মোবাইলের জন্য সি সার্ফ ল্যাংগুয়েজের প্রয়োজন হয়। এমন কী অ্যাপগুলো তৈরি করার জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা অ্যানভারনমেন্ট। যেমন আইওএস অ্যাপ তৈরি করতে প্রয়োজন হয় এক্সকোড, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ’র জন্য অ্যান্ড্রয়েড স্টুডিও এবং উইন্ডোজ অ্যাপ’র জন্য মাইক্রসফট ভিজুয়াল স্টুডিও ও উইন্ডোজ মোবাইল এসডিকে। নিজ নিজ প্লাটফরমের প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করে তৈরিকৃত অ্যাপগুলোকে ন্যাটিভ অ্যাপ বলে। ন্যাটিভ অ্যাপ ছাড়াও একভাবে অ্যাপ তৈরি করা যায়। যাকে বলা হয় ক্রস প্লাটফর্ম অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট। সাধারণত ওয়েব টেকনোলজি যেমন এইচটিএমএল, সিএসএস এবং জেএস ব্যবহার করে ক্রস প্লাটফর্ম অ্যাপ তৈরি করা হয়। এগুলোকে হাইব্রিড অ্যাপও বলা হয়। হাইব্রিড বেশিরভাগ ফ্রেমওয়ার্কই জাভাস্ক্রিপ্ট’র উপর তৈরি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, হাইব্রিড’র এসব ফ্রেমওয়ার্কগুলো একটা দারুণ সুবিধে দেয়। একটা প্লাটফরমের জন্য ডেভেলপ করলে তা একই সাথে সবগুলো প্লাটফরমে চালানো যায়।

২. দেশে-বিদেশে অ্যাপর চাহিদা কেমন?

এক সময় ডেস্কটপ সফটওয়্যার’র চাহিদা বেশি ছিল। এখনো কম নয়। তবে মোবাইল অ্যাপ’র চাহিদা তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ কোটি ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৯৫ শতাংশই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা গড়ে ন্যূনতম একটি অ্যাপ ব্যবহার করেন। প্রতিদিন দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ব্যয় করেন অ্যাপস ব্যবহারে। এছাড়াও বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা তাঁদের স্মার্টফোন ব্যবহারের ৮৬ শতাংশ সময় ব্যয় করেন অ্যাপসে। সুতরাং যে কোনো ডেভেলপার অ্যাপ ডেভেলপ করে প্লে স্টোরে আপলোড করলে কোনো জব করা ছাড়াই দারুণ আয় করতে পারে। আর একটা অ্যাপ হিট হলে সেখান থেকে কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের মতে, বর্তমানে মোবাইল অ্যাপসের বাজার প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলারের। ২০২০ সাল নাগাদ তা হবে প্রায় ৫৪ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারের। এই মার্কেট ভ্যালুর ১০% বাংলাদেশে আনতে পারলেও বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করা সম্ভব।

৩. অ্যাপ ডেভলপিংয়ে আসতে হলে কী কী বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে? 

অ্যাপ ডেভলপিং যেহেতু সম্পূর্ণ টেকনিক্যাল কাজ। তাই সবার প্রথমে কম্পিউটারের বেসিক জ্ঞানের পাশপাশি প্রোগ্রামিং সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। এরপর ঠিক করতে হবে কোন প্লাটফর্মের জন্য অ্যাপ ডেভেলপ করতে চান। কারণ প্রত্যেক প্লাটফর্মে আলাদা আলাদা প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজের দরকার হয়। যেকোনো প্রোগ্রামিং ভাষা শেখার পর আরো কিছু বিষয় জানতে হবে; যেমনÑ ভেরিয়েবল, অপারেটর, স্টেটমেন্ট, কন্ডিশন, ইটারেটর, মেমোরি ম্যানেজমেন্ট, অ্যারে ও ফাইল অপারেশন। সবচেয়ে বড় কথা হলো আপনার তৈরি অ্যাপ্লিকেশনটির নকশা। কি অ্যাপ তৈরি করতে চাচ্ছেন, তার পরিষ্কার ধারণা। এছাড়া অ্যালগরিদম, ডেটা স্ট্র্যাকচার, ডেটাবেজ সম্পর্কে ধারণা থাকলে দারুণ সব অ্যাপ তৈরি করা যাবে।

৪. আপনার দৃষ্টিতে কাদের এই পেশায় আসা উচিত?

কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া বা শিক্ষিত যেকোনো লোকই এই পেশায় আসতে পারে। তবে তাকে অবশ্যই সৃষ্টিশীল মানসিকতার হতে হবে। আর যাদের অ্যাপ’র প্রতি আগ্রহ রয়েছে কেবলমাত্র তাদেরই অ্যাপ তৈরি করতে আসা উচিত। সাধারণ নিষ্ঠা ও ধৈর্যের সাথে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট করলে জবের উপর নির্ভর করতে হবে না। জব করার ইচ্ছে না থাকলে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট শিখে এই সেক্টরে কাজ করা দারুণ একটা বিষয় হতে পারে। একটা ভালো মানের অ্যাপ তৈরি করতে পারলে, ওটা থেকে নিয়মিত টাকা আসতে থাকবে। রয়াল ইনকামের মতো। কারো যদি স্বাধীন পেশা ভালো লাগে, তাহলে তিনি এই অ্যাপ ডেভেলপমেন্টকে বেছে নিতে পারেন।

৫. আপনি কীভাবে এই পেশায় এলেন?

ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় থেকেই ইন্টানেরটভিত্তিক এই কাজগুলোর প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। আস্তে আস্তে এব্যাপরে পড়াশোনা শুরু করি। প্রথমেই বেছে নেই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট। এখানে কাজ শুরু করার পর মোবাইল অ্যাপ দেখে এটা শেখার প্রতি প্রবল ইচ্ছা জাগে। শুরু হলো শেখার মিশন। এখনো প্রতিনিয়ত শিখছি। প্রথমে শুরু করেছি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট। এরপর এখন আইওএস’র জন্যও অ্যাপ তৈরি করি।

৬. একজন সফল অ্যাপ ডেভেলপারের কী কী গুণাবলী থাকতে হবে বলে আপনি মনে করেন? 

অ্যাপ ডেভেলপার হতে হলে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ালেখা করতে হবে, বিষয়টি এমন নয়। তাদের জন্য বিষয়টা একটু সহজ হয়। তবে যে কেউই অ্যাপ ডেভেলপার হতে পারবে। প্রথমে তাকে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট ভালোভাবে শিখে নিতে হবে। থাকতে হবে সৃষ্টিশীল মানসিকতা, প্রবল ইচ্ছাশক্তি, কাজের প্রতি একাগ্রতা, আন্তরিকতা ও ধৈর্য। যারা নিজে অ্যাপ তৈরি করে প্লে স্টোরে দিতে চায়, তাদের উচিত ইউনিক কিন্তু প্রয়োজনীয় এমন কোনো বিষয়ে অ্যাপ তৈরি করা। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সম্যক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। আর ক্লায়েন্টদের জন্য তৈরি করতে হলে ওই বিষয়ে পড়াশোনা করে যতœ সহকারে কাজ করতে হবে।

৭. বাংলাদেশে অ্যাপ ডেভেলপারদের কী কী সমস্যা ও সুবিধা আছে?

অ্যাপ তৈরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবকাঠামোগত অবস্থা এখনো দুর্বল। প্রথম সমস্যা ইন্টারনেটের গতি। কম গতির কারণে বড় এসডিতে ফাইলগুলো নামাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হয়। এই এসডিকেগুলো মাঝে মাঝেই আপডেট দিতে হয়। যারা লিমিটেড মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে, একবার আপডেট দিতে তাদের এক মাসের জন্য কেনা ব্যান্ডউইথ এক সাথেই শেষ হয়ে যায়। এছাড়া অনলাইনে এসংক্রান্ত যেসব রিসোর্স রয়েছে, সেগুলোও সহজলভ্য নয়। দ্বিতীয় কারণ মূলধনের অভাব। মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্টে ক্যারিয়ার গড়তে একজন ডেভেলপারকে ভালো কনফিগারেশনের কম্পিউটার কিনতে হয়। আর সেটি যদি অ্যাপলভিত্তিক অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট হয়, তাহলে তাঁর খরচ বেড়ে আকাশচুম্বি হয়ে যায়। বাংলাদেশের বাইরে একজন ছাত্র অ্যাপলের ডিভাইসে ৫০ শতাংশ ছাড় পায় আর বাংলাদেশে অ্যাপলের কোনো ডিভাইস ঢুকলে জিনিসটির দাম কমার পরিবর্তে অনেক বেড়ে যায়। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে প্লে স্টোরে বা আইটিউন্সে ডেভেলপার অ্যাকাউন্ট খুলেই অ্যাপ আপলোড করা গেলেও অ্যাপ সেল করা যায় না। তবে আশার কথা হলো মোবাইল অ্যাপসের জনপ্রিয়তা এবং ব্যবহারিক বৃদ্ধির কারণে ইএটিএল প্রস্তুত করছে দেশীয় মোবাইল অ্যাপস বাজার। ইএটিএল অ্যাপসের ওয়েবসাইট (িি.িবধঃষধঢ়ঢ়ং.পড়স) থেকে আগ্রহীরা সহজে এসব অ্যাপ ডাউনলোড ও আপলোড করার সুযোগ পাচ্ছেন। ফ্রিল্যান্সার মোবাইল অ্যাপস নির্মাতাদের জন্য এ সাইটটি মার্কেটপ্লেস হিসেবে কাজ করছে। অভিজ্ঞরা তাদের তৈরি মোবাইল অ্যাপস এ সাইটের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারছেন। এ ছাড়া সিম্ফনি, গ্রামীণফোনসহ বেশকিছু মোবাইল ফোন অপারেটর ও ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস কোম্পানির অ্যাপস স্টোর রয়েছে।

৮. স্থায়িত্বের বিচারে পেশা হিসেবে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট কতটুকু সম্ভাবনাময়? 

মোবাইল গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ টু গাইডেন্সের মতে, অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টের এই যে, বিশাল বাজার, তার ৬৬ শতাংশ কাজই আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫ শতাংশ ছোট খুচরা ব্যবসায়ী, ৭৭ শতাংশ বড় ব্যবসায়ী, ৭৫ শতাংশ ব্র্যান্ড, ৫৯ শতাংশ স্টোর এবং ৭৮ শতাংশ ফাস্টফুড শপ অ্যাপ ব্যবহার করে। ই-কমার্সে অ্যাপের ব্যবহার দেশের মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করার পাশাপাশি অনেক বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে। গত বছর ইবে অ্যাপের মাধ্যমে ২০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। তাছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে অ্যামাজনের বার্ষিক আয় পাঁচ বিলিয়নেরও বেশি। বিলিয়ন ডলারের এই অ্যাপ-বাজারে বাংলাদেশি অ্যাপ ডেভেলপারদের জন্য অপার সম্ভাবনা রয়েছে। বয়েছে এক উজ্জ্বল ক্যারিয়ারের হাতছানি। এছাড়া যারা অ্যাপ তৈরি করতে পারে, নতুন কোন প্লাটফর্ম এলে তারা সহজেই সুইচ করতে পারবে। তাই স্থায়িত্বের কথা চিন্তা না করেই এই পেশা আসা যায়।

৯. এখানে কি খ-কালীন কাজের সুযোগ আছে?

থমাস সুয়ারেজ (ঞযড়সধং ঝঁধৎবু) নামে একজন ১২ বছর বয়সী কিশোর আইফোন, আইপ্যাড, এবং আইপডের জন্য কিছু দারুণ দারুণ অ্যাপ তৈরি করেছে। সে অ্যাপগুলো যখন তৈরি করেছে, তখন তার স্কুল বন্ধ ছিল। সুতরাং একথা বলাই যেতে পারে, যে কারো দ্বারাই অ্যাপ তৈরি করা সম্ভব। জব বা পড়ালেখার পাশাপাশি আমাদের হাতে অনেক সময় থাকে। আমরা চাইলেই সেই সময়গুলো কাজে লাগিয়ে প্রোগ্রামিং শিখতে পারি। প্রোগ্রামিং ভালো করে শেখা হলে অ্যাপ তৈরি করা শুরু করতে পারি। আমি নিজে পড়ালেখার পাশাপাশি অ্যাপ তৈরি করা শুরু করি। এতে আমার পড়ালেখার কোনো ক্ষতি হয়নি। আপওয়ার্ক থেকে পাওয়া তথ্যমতে, একজন ওয়েব ডিজাইনার কিংবা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজার যেখানে ঘণ্টাপ্রতি গড়ে ১০ থেকে ১২ ডলার কাজ করেন, সেখানে একজন অ্যাপ ডেভেলপারের ঘণ্টাপ্রতি গড় আয় ২৫ থেকে ৫০ ডলার। সুতরাং একথা ভাবার কোনো সুযোগ নেই যে, শুধুমাত্র বড় বড় প্রতিষ্ঠানের জন্যই যে কেবল অ্যাপ তৈরি করা হয়। ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলোতে প্রতিদিনই অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের জন্য প্রচুর কাজ পাওয়া যায়।

১০. একজন অ্যাপস্ ডেভেলপার মাসে কত টাকা আয় করতে পারে?

ঈষধংয ঙভ ঈষধহং অ্যাপের দৈনিক আয় ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ঋষধঢ়ঢ়ু ইরৎফ প্রতিদিন আয় করত ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, ওহংঃধমৎধস ১ বিলিয়ন ও ডযধঃংঅঢ়ঢ় ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে ফেইসবুক কিনে নিয়েছে। এই অ্যাপগুলো খুব একটা কমপ্লেক্স অ্যাপ না। একজন ডেভেলপার চেষ্টা করলেই এমন অ্যাপ তৈরি করতে পারে। তো একজন ডেভেলপার কত টাকা আয় করবে, তা ডেভেলপারের উপর নির্ভর করবে। তার ড্রিম এর উপর নির্ভর করবে। সে চেষ্টা করলে ভালো টাকা আয় করতে পারবে। সঠিক প্রচারণা কৌশল ও ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন অনুযায়ী ইউনিক অ্যাপ তৈরি করলে এই বাজার ধরতে তেমন বেগ পেতে হবে না। অ্যাপগুলো থেকে টাকা আয় করার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। এর মধ্যে আমি বেছে নিয়েছি অ্যাডমব। অ্যাডমব হচ্ছে অ্যাড নেটওয়ার্ক। ইউজার যখন অ্যাপ ব্যবহার করবে, তখন মাঝে মাঝে একটা অ্যাড দেখতে পাবে। অ্যাডমব হচ্ছে গুগলের অ্যাডসেন্স’র মতো। অ্যাডসেন্স হচ্ছে ওয়েবসাইটের জন্য। দু’টোই গুগলের। ইউজার অ্যাডগুলো দেখলে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা হতে থাকে অ্যাকাউন্টে। গুগল প্রতি মাসের নির্দিষ্ট তারিখে তা ব্যাংকে পাঠিয়ে দেয় কোনো ঝামেলা ছাড়াই।

১১. যারা এই সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী তাদেরকে আপনি কী পরামর্শ দেবেন?

যারা অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে আসতে চাচ্ছেন, তাদের বলব শিখতে। প্রোগ্রামিং, ডেটা স্ট্র্যাকচার, অ্যালগরিদম ছাড়াও অন্যান্য বিষয়গুলো শিখতে পারেন। সব ধরনের বই পড়তে পারেন। যত বেশি জানবেন, তত সুন্দর আইডিয়া আপনার মাথায় আসবে। তত সুন্দর অ্যাপ আপনি তৈরি করতে পারবেন। কোন প্ল্যাটফর্মের অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট শিখতে চান, সেটি আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জেনে নিতে হবে এই প্ল্যাটফর্মে অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টের উপায়। ইন্টারনেট থেকেই অনেক কিছু শেখা সম্ভব। অনলাইনে প্রোগ্রামিং শেখার অনেক ফ্রি কোর্স রয়েছে। এমআইটি, হার্ভার্ড এর মতো অনেক ইউনিভার্সিটির এ বিষয়ক কোর্সগুলো অনলাইনে শেখা যায়। বাংলাদেশে বর্তমানে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান অ্যাপস ডেভেলপমেন্টের ওপর প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ঐসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো স¤পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে কে ভালো শেখায়, তা জেনে শিখে নেয়া যেতে পারে। আমার পরামর্শ হবে ইন্টারনেট থেকে শিখে নেয়া।

সূত্র: ইনকিলাব

Sharing is caring!

Leave a Comment