৫ অভ্যাসে বদলে যাবে শিক্ষাজীবন
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
শিক্ষাজীবনে সফল হতে কে না যায়? কিন্তু অনেকেই জানেন না, সফলতার পথ কী? মাত্র পাঁচটি অভ্যাসেই বদলে যেতে পারে আপনার শিক্ষাজীবন। হাতে ধরা দিতে পারে সাফল্য। যুক্তরাজ্যের কর্নারস্টোন ইউনিভার্সিটির প্রফেশনাল ও গ্রাজুয়েট স্টাডিজ ডিভিশন গবেষণা করেছেন ঠিক এসব বিষয় নিয়ে। তারা এই গবেষণার এমন কিছু বিষয় দেখিয়েছেন যা একজন ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তৈরী করবে এবং তার ক্যারিয়ার গোলকেও মজবুত করবে।
১. কমিটমেন্ট
একাডেমিক স্টাডিতে একটা কমিটমেন্ট রাখার অভ্যাস করুন। এই কমিটমেন্টটা হতে হবে রেগুলার ক্লাস আর অ্যাসাইনমেন্টের উপর। এই দুটো বিষয়ই আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলবে। এই কমিটমেন্ট রক্ষা করতে পারেন তিনটি কাজের মাধ্যমে। সেগুলো হলো–
- ক্লাস থেকে সর্বোচ্চটুকু নেওয়া
- অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে নতুন চিন্তা-ভাবনার জন্ম দেওয়া।
- কার্যকরী উপায়ে পড়া ও লেখার অভ্যাস গড়ে তোলা।
- শিক্ষককের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়া।
ভিনসেন্ট টিনটো একজন স্বনামধন্য গবেষক যিনি হায়ার স্টাডিজ নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, একাডেমিক ইন্টিগ্রেশন অর্থ্যাৎ একাডেমিক কার্যাবালির সাথে নিজেকে লেগে থাকতে হবে। অন্যভাবে বলতে গেলে, একজন সফল শিক্ষার্থী তার একাডেমীকে গুরুত্ব দেয় এবং সেখান থেকে সর্বোচ্চটুকু নেওয়ার চেষ্টা করে।
অন্যদিকে, ব্র্যাক্সটন এন্ড লিন ঝরে পড়ার কারণ হিসেবে এই একাডেমিক ইন্টিগ্রেশনের অভাবকেই দায়ী করেন। একাডেমীর অধীনে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, লাইব্রেরী, শিক্ষকদের রিসার্চ পেপার সংগ্রহ করে আপনি বেস্ট ইন্টিগ্রেশন করতে পারেন।
২. নেটওয়ার্কিং
ভিনসেন্ট টিনটো তার এই বিষয়ক গবেষণায় আরো জোর দেন “সোশ্যাল ইন্টিগ্রেশন”- এর উপরে। তিনি বলেন, অন্য সবার সাথে কানেকশন তৈরী করার ক্ষমতা স্টুডেন্টদের একজনকে আরেকজনের অধীনে নিয়ে যায় যা তাদের হাইয়ার স্টাডিতে সাহায্য করে। এর ফলে তারা সম্পর্কের গুরুত্ব বুঝতে পারে এবং অন্যের সহযোগিতা নিয়ে সাফল্য অর্জন করতে পারে।
আপনি জেনে থাকবেন হয়ত, হায়ার স্টাডিতে যারা কাজ করেন তারা ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে অতিরিক্ত চাপে থাকেন। কিন্তু তাদের টিম মেম্বাররা তাদেরকে সাপোর্ট দিলে তারা কাজের উৎসাহ পান।
তাই কানেকশন তৈরী করার অভ্যাস রপ্ত করুন। এতে করে আপনি নিজে অনেক দুরূহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবেন।
৩. লক্ষ্য নির্ধারণ
পড়তে পড়তে ক্লান্ত, কিংবা অতিরিক্ত টেনশনে থেকে নিজেকে মেইনটেইন করার একটি মোক্ষম উপায় হলো– নিজের গোল নির্ধারণ করা এবং সেই গোল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে ধীরে সুস্থে সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া। কারণ, আপনি যখন বুঝবেন কী করতে হবে তখন আপনার কাজ সহজ হয়ে যাবে এবং আপনি অনুপ্রাণিত হবেন। কেইন বেইন বলেন, মানুষের মাঝে মোটিভেশন দুই ধরণের থাকে।
ক. ইন্টারনাল, যেমন: নিজের ডিগ্রি শেষ করা কিংবা কোনো ইচ্ছে পূরণ
খ. এক্সটার্নাল, যেমন: নতুন চাকরি পাওয়া, সামাজিকতা রক্ষা করা ইত্যাদি।
তিনি আরো বলেন, সফল ছাত্রছাত্রীর ভেতরে ক্লাসে উপস্থিত হবার একটা গভীর মোটিভেশন নিহিত থাকে। তাই আপনার উচিত, নিজের গোলকে ডিফাইন তথা সংজ্ঞায়িত করে নিজের ক্লিয়ার কনসেপ্ট তৈরী করে ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিত হওয়া।
৪. অভিজ্ঞতা
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে সফল মানুষ হতে সবচেয়ে যেটি বেশি উপকার করে থাকে তা হলো অভিজ্ঞতা অর্জন। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্র তার কাজের সুবাদে, পরিবারের সুবাদে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। কিন্তু সে যদি কিছু অভিজ্ঞতা ছাত্রজীবনের একদম শুরু থেকে অর্জন করা শুরু করতে থাকে তাহলে তার পরবর্তী জীবনের অভিজ্ঞতা আরো পোক্ত হয়ে যাবে। এই ছাত্রছাত্রীদের অভিজ্ঞতা অর্জনের অভ্যাসটাও তাদের সফলতায় ভূমিকা রাখতে পারে।
কিন্তু কিভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন?
সবসময় নিজের জানা বিষয়কে নতুনভাবে জানার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনি নতুন বিষয়ের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারবেন। ফলে আপনার জ্ঞানের পরিধিও বাড়বে, আপনি অভিজ্ঞও হয়ে উঠবেন।
একইসাথে নতুন বিষয় আপনার জানার আগ্রহকে বাড়িয়ে তুলবে। বেইন বলেন, এই ধরণের কানেকশন জানার আগ্রহকে মেইনটেইন করে যা সফলতার জন্যে খুবই কার্যকরী।
৫. টাইম ম্যানেজমেন্ট
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্র শিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হোন তা হলো– পড়ার জন্যে পর্যাপ্ত সময় বের করা। তারা কাজের ব্যালেন্স করতে চেষ্টা করেন কিন্তু কখনো তা হয়ে উঠে না। তাই ছাত্রছাত্রীদের সময় কিংবা ওয়ার্ক ব্যালেন্স একটি প্রধান বিবেচনার বিষয়।
আপনার শিডিউল অন্য সবার থেকে আলাদা হতে পারে কিন্তু একটা নির্দিষ্ট রুটিন ও স্পেসিফিক ব্লক টাইম বের করে আপনি অন্যদের মত বেনিফিটেড হতে পারেন।
আপনি আপনার পরিবার এবং বন্ধুদের সেই শিডিউল বলে দিতে পারেন যাতে আপনার শিডিউলে কোন ব্যাঘাত না ঘটে। এছাড়াও বন্ধুদের সাথে স্টাডি শিডিউলের একটা টাইম অ্যাডজাস্ট করতে পারেন।
এই টাইম মেইনটেইনের শিডিউল আপনার শেখার ভিত্তিকে আরো মজবুত করবে। কেননা আপনি টাইম ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে সময়ের পারফেক্ট ইউজ করতে পারবেন।